তাঁর নেশা ও পেশা দুইই ক্রিকেট। আর সেই খেলার সূত্রেই আস্ত একটা স্টেডিয়ামের মালিক হয়েছেন তিনি। না, শ্চীন কিংবা ধোনির মতো তারকা তিনি নন। তবুও নিজের জোরেই এহেন সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছেন এই ক্রিকেটার। কে ইনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি উন্মাদনা যে খেলাকে ঘিরে, নিঃসন্দেহে ক্রিকেট তার মধ্যে অন্যতম। তাই কোনও তারকা ক্রিকেটারকে সম্মান জানানোর জন্য তাঁর নামে কোনও স্টেডিয়ামের নামকরণ করা যেতেই পারে। যেমন শচীনের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে শারজা স্টেডিয়াম স্ট্যান্ডের নাম বদলে হয়েছে শচীন তেন্ডুলকর স্ট্যান্ড। শ্রীলঙ্কায় মুথাইয়া মুরলিধরনের নামে বা ত্রিনিদাদে ব্রায়ান লারা-র নামে স্টেডিয়াম রয়েছে। এ দেশেও ক্রিকেট নিয়ে উত্তেজনা বরাবরই লাগামছাড়া। তাই এখানেও কোনও তারকা ক্রিকেটারকে সম্মান জানাতে এমনটা করলে কেউ অবাক হবেন না। কিন্তু যদি শোনা যায়, আস্ত একটা স্টেডিয়াম রয়েছে এমন এক ক্রিকেটারের, যিনি শচীন কিংবা ধোনির মতো তারকা নন। তাহলে বেশ অবাক হওয়ারই কথা, তাই না? কিন্তু গল্প নয়, সত্যিই ঘটেছে এমনটা।
আরও শুনুন: ১৯৮৩ সালের ২৫ জুন ভারতের ক্রিকেট জেগে উঠেছিল এক নতুন দিনের ভোরে
ভাবছেন তো, কে এই ক্রিকেটার?
বলছি টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম সদস্য টি নটরাজনের কথা। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ডেবিউ করেছেন এই পেসার। তবে এত দূর পৌঁছনোর পথটা সহজ ছিল না একেবারেই। তামিলনাড়ুর সালেমের কাছে চিন্নাপম্পাত্তি নামে এক ছোট্ট গ্রামে তাঁর জন্ম। বাবার পেশা তাঁত চালানো, আর মা একটি ছোট্ট খাবারের দোকান চালান। সব মিলিয়েই টেনেটুনেই চলে পরিবার। সেখান থেকে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখা আর সেই স্বপ্নকে সত্যি করাটা সহজ কথা ছিল না। কিন্তু এই গোটা পথটা জুড়ে নটরাজনকে সাহস জুগিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর মা।
আরও শুনুন: ঐতিহাসিক ২৫ জুন! বিশ্বজয়ের শ্যাম্পেন সেদিন কার থেকে নিয়েছিলেন কপিল দেব?
জাতীয় দলে খেলার আগে, ২০১৭ সালেই আইপিএল-এ সুযোগ পান নটরাজন। ৩ কোটি টাকায় তাঁকে কিনে নেয় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। এখান থেকেই খুলে গিয়েছিল জাতীয় দলে খেলার পথ। নটরাজনের বরাবরই ইচ্ছে ছিল নিজের গ্রামে একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমি খুলবেন তিনি। যাতে খেলা শেখার জন্য গ্রামের কোনও শিশুকে তাঁর মতো কষ্ট করতে না হয়। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পর এক বছরের মাথাতেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন গ্রামে ক্রিকেট স্টেডিয়াম গড়বেন তিনি। আর বর্তমানে সেই স্বপ্নকেও সত্যি করে ফেলেছেন নটরাজন। চারটি পিচ, একটি জিম, একটি ক্যান্টিন এবং ১০০ সিটের ছোট গ্যালারি নিয়ে এই অ্যাকাডেমি গড়েছেন তিনি, যার উদ্বোধন করেছেন দীনেশ কার্তিক।
আরও শুনুন: ১৯৮৩-র জয় শুধু ক্রিকেটের নয়! সাদা-কালো অবয়ব থেকে শুরু রঙিন ইন্ডিয়ার জয়যাত্রা
সত্যি বলতে মেন ইন ব্লু-র দলে এমন একাধিক খেলোয়াড়ের দেখা মিলেছে, যাঁরা প্রতিকূলতা কাটিয়ে সাফল্য খুঁজে নিয়েছেন নিজের জোরেই। সেই তালিকাতেই উজ্জ্বল সংযোজন রোহিত ব্রিগেডের এই পেসার।