ফুটবল খেলছেন মহাত্মা গান্ধী। মাঝমাঠে বল পায়ে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। তবে ভারতে নয়, ব্রাজিলে। স্বদেশি আন্দোলনের পাশাপাশি ফুটবলের সঙ্গেও কী যোগ রয়েছে গান্ধীর? ব্যাপারটা ঠিক কী? আসুন, শুনেই দেখা যাক।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি একাই এক অধ্যায়। সেই মহাত্মা গান্ধী কিনা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ফুটবলের মাঠে! মাঠের মাঝে রুখে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষকেও! তবে ভারতে নয়, ব্রাজিলের ফুটবল মাঠেই দেখা যাচ্ছে তাঁকে। আসলে কে তিনি? তাহলে বরং খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: একটা বলেই ২৮৬ রান! ক্রিকেট মাঠ সাক্ষী থেকেছে এমন ঘটনারও
ব্রাজিলের সঙ্গে ফুটবলের যে নাড়ির টান, সে কথা তো আর নতুন করে বলার নেই। আর সেই ফুটবল মাঠেই দেখা মিলেছে মহাত্মা গান্ধীর। ব্রাজিলের ত্রিনিদাদ ফুটবল ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ তিনি। আসলে এই ক্লাবের এক মিডফিল্ডারের নামই মহাত্মা গান্ধী হেবেরপিও মাতোস পিরেজ। ২০১১ সালে অ্যাটলেটিকো ক্লাব গোয়েনিজের হাত ধরে ফুটবলকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন এই যুবক। ফুটবল বিশ্বে তাঁকে সেভাবে কেউ চেনে না। তবে নামের জোরেই নজর কেড়েছেন বছর ৩১ বয়সের এই ফুটবলার। বিশেষ করে ভারতে। এই নামের মানুষটি এ দেশের কাছে যে জাতির জনক, সে কথা তো ভোলার নয়। আর তাই, মহাত্মার নামে এক যুবকের খোঁজ পেয়ে রীতিমতো চমকেই গিয়েছেন ভারতীয়রা।
এমনিতে ব্রাজিলে এমন ফুটবলারের সংখ্যা কম নেই, যাঁরা কেবল নামের দৌলতে চর্চায় উঠে এসেছেন। ‘বিটলস’-এর গায়ক জন লেনন, হলিউড তারকা মার্লন ব্র্যান্ডো, বিখ্যাত ছবি বেনহুর, এমন সব নামে অনেকেই সন্তানের নাম রাখেন সে দেশে। তাতেই নয়া সংযোজন মহাত্মা গান্ধী নামের এই যুবক। ভারতের জাতির জনকের কথা মনে রেখেই তাঁর এমন নামকরণ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও মহাত্মার আসল নাম ছিল মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের দেওয়া ‘মহাত্মা’ উপমা তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে অবিচ্ছেদ্যভাবেই। বর্তমানে মহাত্মা গান্ধী নামেই গোটা বিশ্ব মনে রেখেছে তাঁকে। তাই পিরেজের নামেও জায়গা করে নিয়েছে ওই নামটিই।
আরও শুনুন: কেবল টাইমড আউট নয়, ক্রিকেট দুনিয়ায় রয়েছে এমনই আরও আজব নিয়ম… জানেন?
যদিও মজার কথা হল, ফুটবলের সঙ্গে আগেও যোগ ছিল মহাত্মা গান্ধীর। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের তথ্য জানায়, দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকাকালীন প্যাসিভ রেজিস্টার্স ফুটবল ক্লাবের জন্য তিনটি দলও গঠন করেছিলেন তিনি। সময়টা ১৮৯৩ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে। জোহানেসবার্গ, প্রেটোরিয়া এবং ডারবানে সেই সময় ফুটবল খেলত ওই তিনটি দল। এ ছাড়া ১৮৯৬ সালে ট্রান্সভাল ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যেও নাকি অন্যতম ছিলেন তিনি। এতদিন পর, সেই ফুটবলের দুনিয়াতেই যেন একরকম করে ফিরে এলেন মহাত্মা গান্ধী।