হিন্দু হলে ঘরে ঢোকার অনুমতি নেই। এমনই নিয়ম মেনে চলেন পাক অধিনায়ক। শুধু তাই নয়, গোপনভাবে নমাজ পড়েন তিনি। সম্প্রতি সতীর্থ সম্পর্কে এইসব তথ্য সামনে এনেছেন পাকিস্তানের অন্যতম ক্রিকেটার ইমাম-উল-হক। ঠিক কী বললেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভারতের বিরুদ্ধে লজ্জার হার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শেষ চারে ওঠার স্বপ্নও অধরাই থেকে যাবে পাকিস্তানের। এই আবহে সামনে এল দলের অধিনায়ক মহম্মদ রিজওয়ানের কিছু বিশেষ অভ্যাসের কথা। যা খেলার সময় নিয়মিত মেনে চলতেন তিনি।
সম্প্রতি এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন পাকিস্তানের ইমাম-উল-হক। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাক দলের অন্যতম সদস্য এই ব্যাটার। বিগত কিছু ম্যাচে দলে হয়ে ওপেনিংও করেছেন। মোটের উপর চলনসই পারফরম্যান্স। তবে দল সম্পর্কে তাঁর বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। আর সে কথাই খোলাখুলি ওই অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন ইমাম। প্রথমেই যে দিকটা তুলে ধরেছেন, তা হল দলের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। বিশেষ করে সিনিয়র ক্রিকেটাররা নাকি শুরু থেকেই নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-ঝামেলায় ব্যস্ত। কাকে যোগ্য দলনায়ক বলবেন, সেই প্রশ্নের উত্তরেই এমন অভিযোগ তুলেছেন ইমাম। তবে বর্তমান অধিনায়ক মহম্মদ রিজওয়ানকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখতে চান ইমাম। তার বড় একটা কারণ, রিজওয়ানের ধর্মচর্চা। ইসলাম ধর্মাবম্বীদের কাছে নমাজ পাঠ অতি পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ। প্রায় সব মুসলিমই নিষ্ঠাভরে তা পালন করেন। দিনের নির্দিষ্ট সময় নজার পড়তে হয়। মূলত প্রার্থণার ধরণ, তাই যে কোনও জায়গাতেই করা যায়। তবে সেই জায়গা যেন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়। এক্ষেত্রে রিজওয়ান ভীষণ নিষ্ঠাবান বলেই দাবি করেছেন ইমাম। জানিয়েছেন, প্রতিদিন নিয়ম করে নমাজ পড়তেন পাক অধিনায়ক। যে হোটেলে খেলোয়াড়দের থাকার ব্যবস্থা হত, সেখানেই বিশেষ আয়োজন করা হত। থাকত আলাদা ঘর। সেখানে কোনও হিন্দু বা অ-মুসলিমের প্রবেশাধিকার ছিল না। হোটেলকর্মী থেকে আরম্ভ করে কোনও হিন্দুকেই নমাজের সময় ওই ঘরে ঢোকার অনুমতি দিতেন না রিজওয়ান। এখানেই শেষ নয়। নমাজ পাঠের সময় সতীর্থদের একসঙ্গে জড়ো করতেন অধিনায়ক। নমাজ পাঠও হয় একইসঙ্গে। তার জন্য নাকি আলাদাভাবে গ্রুপ তৈরি করেছিলেন রিজওয়ান। একজন মুসলিম হিসেবে দলের অধিনায়কের এই আচরণ মুগ্ধ করেছিলেন ইমামকে। তবে তাঁর এই বক্তব্য নেটদুনিয়ায় বেশ শোরগোল ফেলেছে। সকলেই একযোগে দাবি করছেন, খেলার চেয়ে ধর্মকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন রিজওয়ান। ইমামের কথায়, তা অস্বীকারের উপায়ও নেই। আর তাতেই যেন পাকিস্তান ক্রিকেটের দৈনদশা আরও স্পষ্ট হয়েছে অনেকের কাছে।
আসলে সার্বিকভাবেই পাকিস্তান ক্রিকেটে এখন একটা দৈনদশা চলছে। তড়িঘড়ি বদলের ডাকও উঠছে ওয়াঘার ওপারে। শোনা যাচ্ছে কোচ, কোচিং স্টাফ, সবেই বদল আসতে পারে। চাকরি যেতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ আকিব জাভেদের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ হলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এমনিতে পাক ক্রিকেটে কোচ বদল ধারাবাহিক ঘটনা। গত ১ বছরে ৫ জন কোচ এসেছেন এবং গিয়েছেন। আকিব জাভেদ ও তাঁর সহকারীদের সঙ্গেও সেটাই হতে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে। এই আবহে দলের অধিনায়ক সম্পর্কে এমন তথ্য নতুন করে বিতর্কের আবহ তৈরি করেছে।