মাঠের দ্বৈরথ কি ব্যক্তিজীবনেও প্রভাব ফেলে! ভারত-পাক প্রতিদ্বন্দ্বিতা মানেই বিশ্ব ক্রিকেটে অন্য মাত্রার উত্তেজনা। কিন্তু সেই উত্তেজনা কি দুই দেশের খেলোয়াড়দেরও অনেকাংশে প্রভাবিত করে? সম্প্রতি তারই জবাব পেলেন জনৈক ক্রিকেটপ্রেমী। প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার শাহিদ আফ্রিদির কাছে সইয়ের আবদার করেন তিনি, তা-ও আবার ভারতের জাতীয় পতাকার উপর। তাতে কী প্রতিক্রিয়া পাক ক্রিকেটারের? আসুন শুনে নিই।
তিনি বহু যুদ্ধের সাক্ষী। যুদ্ধ অবশ্য খেলার মাঠে। তবু ভারত আর পাকিস্তানের নাম জড়িয়ে যাওয়া মানেই খেলার মাঠের লড়াই-ও জমজমাট হয়ে ওঠে। তার নেপথ্যে যে কারণই থাক না কেন, সেই লড়াইটা লড়তে হয় দুই দেশের খেলোয়াড়দের, মাঠে নেমে। এমনই বহু যুদ্ধে বুক চিতিয়ে পাকিস্তানের হয়ে লড়াই করেছেন শাহিদ আফ্রিদি। সেই তাঁর কাছেই ভারতীয় পতাকায় সইয়ের আবদার করে বসেন এক ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমী।
আরও শুনুন: ছত্রপতি শিবাজি প্রভাবিত করেছিল তাঁকেও, প্রেরণার কথা জানালেন শচীন
এমনিতে ভক্তদের সব আবদার-ই মেটান খেলোয়াড়রা। আর ভক্তরাও ভালবাসার নিরিখে পেরিয়ে যান দেশ-কালের সীমানা। পাকিস্তানে বহু ক্রিকেটপ্রেমীই আছেন, যাঁরা বিরাট কোহলির ‘জাবড়া ফ্যান’। একই কথা তো শচীন তেন্ডুলকরের জন্যও খাটে। একসময় তো বলা হত, কাশ্মীর নয়, পাকিস্তান যদি সত্যিই ভারতের কোনও কিছু নিয়ে ঈর্ষা করে, তবে তা শচীনকে নিয়েই। এমন এক ঐশ্বরিক প্রতিভাকে যে আবিশ্ব ক্রিকেটপ্রেমীরা ভালবাসবেন, তাতে আর অবাক হওয়ার কী আছে! আবার ওয়াসিম আক্রমের কথাই ধরা যাক! ভারতবর্ষে তাঁর ভক্ত সংখ্যাও কম নয়। যেমন ইমরান খানের ফ্যান ছিলেন অনেকেই। আবার রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস শোয়েব আখতার যতই ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলুন না কেন, ওই বেপরোয়া বোহেমিয়ানারও ভক্ত ছিলেন অনেকে। অর্থাৎ মাঠের যুদ্ধ থাকে মাঠে। মাঠের বাইরে জয় কিন্তু খেলারই। সেখানে কোনও সীমানা থাকে না, থাকে না জাতি-ধর্মের গণ্ডি। এমনকী ক্রিকেটাররাও ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বহুবারই জানিয়েছেন যে, মাঠের লড়াই মাঠের বাইরে আর সেভাবে থাকে না। একটা উইকেট পাওয়ার জন্য কত আ স্লেজিং, কিংবা একটা ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যচা জেতানোর পর প্রতিপক্ষকে টেক্কা দিয়ে বাজিমাতের যে উল্লাস, সে সব মাঠেরই দৃশ্য। সে-বাউন্ডারি পেরিয়ে এলে সকলেই বন্ধু। আর তাই আফ্রিদির কাছে একেবারে ভারতের জাতীয় পতাকাতেই সইয়ের আবদার করে বসেন জনৈক অনুরাগী।
আরও শুনুন: ভারতসেরা মোহনবাগান, রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে সবুজ-মেরুন ঝড়ের সামনে আত্মসমর্পণ বেঙ্গালুরুর
পাকিস্তানের বহু যুদ্ধের নায়ক অবশ্য ভারতের তেরঙ্গায় সই করতে দ্বিধা করেননি। সম্প্রতি দোহায় লেজেন্ড লিগ ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত তিনি। তার মধ্যেই ভক্তের অভিনব আবদার মিটিয়ে দৃষ্টান্তই স্থাপন করলেন প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার। জার্সির রঙে দেশ আলাদা হয়ে যায়, কিন্তু ক্রিকেট তো হয় না। তা-ই ক্রিকেটের অনুরাগী যে দেশেরই হোন না কেন, একই রকম সম্মান তাঁর প্রাপ্য। সেখানে কোনও ভেদাভেদ থাকে না। থাকে না মাঠের যুদ্ধের ছাপ। একটা সইয়ের মাধ্যমে সে কথাই যেন বুঝিয়ে দিলেন আফ্রিদি।