১৫০ কোটির দেশ। তাও অলিম্পিকে পদকের সংখ্যা হাতেগোনা। চলতি অলিম্পিকেও এখনও অবধি ৩টি পদক ঝুলিতে ভরেছেন ভারতীয় অ্যাথলিটরা। নেপথ্যে কী কারণ, তাই জানতে চাওয়া হয়েছিল ভারতের প্রাক্তন ফুটবল অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর কাছে। কী বলছেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
চলতি অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন ১১৭ জন ভারতীয় অ্যাথলিট। প্রত্যেকেই যে পদক পাবেন না তা বলাই বাহুল্য। তবে কয়েকজন পদক পাবেন এ ব্যাপারেও নিশ্চিত ক্রীড়াপ্রেমীরা। কিন্তু ওই কয়েকজন। অলিম্পিকে দুর্দান্ত ফলের আশা করেন না এ দেশের অনেকেই। কারণ এর আগে কোনও অলিম্পিকেই ভারতীয় অ্যাথলিটরা সেই অর্থে ছাপ ফেলতে পারেননি। কিন্তু কেন? সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এই প্রশ্নই করা হয়েছিল প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীকে। উত্তর দেশের পরিকাঠামোর দিকেই আঙুল তুলেছেন ছেত্রী।
:আরও শুনুন:
১২০ টাকার বুলেট কিনতেও ব্যাঙ্ক লোন, ৭২ বছর পর মহারাষ্ট্রে অলিম্পিক পদক আনলেন সেই স্বপ্নিল
এই মুহূর্তে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১৫০ কোটি। জনসংখ্যার নিরিখে অলিম্পিকে অংশ নেওয়া প্রায় সব দেশের থেকেই এগিয়ে ভারত। কিন্তু পদকের ক্ষেত্রে ঠিক তার উলটো ছবি ধরা পড়ছে। অলিম্পিকের ইতিহাসে এখনও অবধি ভারতীয় অ্যাথলিটরা মোট ৩৮টি মেডেল জিতেছেন। সেখানে অধিকাংশ দেশ একবারেই এর থেকে বেশি মেডেল ঘরে তোলে। চিন, আমেরিকা, ফ্রান্স, জাপানের মতো দেশের অ্যাথলিটরা প্রতি বছর এই সংখ্যা পার করেন অনায়াসে। চলতি অলিম্পিকেও ছবিটা তেমন বদলায়নি। মাত্র ৩টি ব্রোঞ্জ জিতে ভারতের র্যাঙ্কিং ৪২। শেষ অবধি এই স্থান আরও পিছিয়ে যেতেই পারে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, প্রতিবার কেন এমন অবস্থা হয় ভারতীয় অ্যাথলিটদের?
:আরও শুনুন:
একেই বলে শুটিং! মনু-স্বপ্নিলের আগেও দেশকে অলিম্পিক পদক এনে দিয়েছেন যে শুটারেরা
সুনীলের কথায়, সমস্যাটা অন্য জায়গায়। তাঁর আক্ষেপ ভারতে আসল ট্যালেন্ট কদর পায় না। বিভিন্ন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এ কথা স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন প্রাক্তন অধিনায়ক। তাঁর অভিযোগ, আন্দামানে কাছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা কেউ যদি খুব ভালো ফুটবলার হন, তাহলেও তিনি পরিচিতি পাবেন না। কারণ তাঁকে খেলার সুযোগটাই দেওয়া হবে না। বাধ্য হয়ে সাধারণ কোনও কাজে যোগ দেবেন, চিরতরে হারিয়ে যাবেন প্রতিভাবান ফুটবলার। সুনীলের কথায়, এমন উদাহরণ রয়েছে ভুরি ভুরি। সরাসরি কারও নাম না নিলেও, প্রাক্তন অধিনায়ক স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, এ দেশে আসল ট্যালেন্ট কোনও দাম পায় না। তাঁর আরও আক্ষেপ, চিন, জাপানের মতো দেশে গলি গলি থেকে খুঁজে আনা হয় প্রতিভা। সরকারি উদ্যোগে তাঁকে তৈরি করা হয়। তাতে অলিম্পিকে পদকও নিশ্চিত হয়। আমাদের দেশে সেসবের বালাই নেই। বরং অলিম্পিকের মতো জায়গায় পৌঁছতে রীতিমতো কাঠখড় পোড়াতে হয় এ দেশের খেলোয়াড়দের। এই মন্তব্য করার জন্য, তাঁর উপরও অনেকে রেগে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করেছেন সুনীল। তাতে কোনও সমস্যা নেই বলেও সাফ জানিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ এ দেশের অলিম্পিক পদক কম হওয়ার জন্য যে পরিচালন ব্যবস্থাই দায়ী, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক।