অলিম্পিক্সের উদ্বোধনেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন মহিলা ক্রীড়ামন্ত্রীর। যে চুমুর দৃশ্য ইতিমধ্যেই বিতর্কের ঝড় তুলেছে। তবে অলিম্পিক্সের সঙ্গে ঠোঁটে ঠোঁট সম্পর্ক বরাবরই ঘনিষ্ঠ। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিকেড গড়ে ওঠে অলিম্পিক্সেও। বারবারই, খেলার বাইরেও খেলার নজর ঘুরিয়েছে চুম্বন দৃশ্য। চলতি প্যারিস অলিম্পিক্সে যেমন স্পটলাইট কেড়েছে খোদ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সে দেশের মহিলা ক্রীড়ামন্ত্রীর চুম্বনের ছবি। এর আগে অলিম্পিক্সেই বাস্কেটবল ম্যাচে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্ট লেডি মিশেলকে চুম্বনে বাধ্য করেছিল কিস ক্যাম। তবে রাজনৈতিক নেতৃত্বের কথা ছেড়ে দিলেও, খেলার স্টেডিয়ামেই চুমুর খেলার উদাহরণ কিন্তু কম নয়। পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে চুম্বন এমনিতেও খুব স্বাভাবিক বিষয়। তবে তার মধ্যে থেকেও কোনও চুম্বন চোখ টানে, কোনোটিতে আবার উসকে ওঠে বিতর্কও। কোনও চুম্বনে আঁকা হয় প্রতিবাদের নিশান। আর সে সব কিছুকেই একসুতোয় গেঁথে রাখে অলিম্পিক্স।
:আরও শুনুন:
বক্সার খেলিফের মতো লিঙ্গ বিতর্কে জড়ান অনেকেই, অলিম্পিক্সে সেক্স টেস্ট শুরু হয় কবে?
২০২২ সালে বেজিং-এর উইন্টার অলিম্পিক্সের সেই চুমুর কথাই ধরুন। অলিম্পিক তারকা, স্পিড স্কেটিং-এর কিংবদন্তি অ্যাথলিট আরিয়ানা ফন্টানা জিতে যাওয়ার পর স্কেট করেই ছিটকে গেলেন কোচ তথা স্বামী অ্যান্টনি লোবেলো জুনিয়র-এর দিকে। ঠোঁটে ডুবিয়ে দিলেন ঠোঁট। আর সেই চুমু সপাটে আছড়ে পড়ল তাঁর দেশ ইতালির ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের দিকে। রাজনীতির স্বার্থে যাঁরা তাঁকে অলিম্পিক্সে আসতে দিতেই চাননি।
এবারের প্যারিস অলিম্পিক্সেই, সেই ইতালিকেই চুমুতে জবাব দিলেন জুডোতে সোনাজয়ী অ্যালিস বেলান্দি। জেতার পর দক্ষিণ আফ্রিকার জুডো তারকা জেসমিন মার্টিন-এর সঙ্গে তাঁর চুম্বনের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। দুই তরুণীর চুম্বন আঘাত হানল প্রধানমন্ত্রী মেলোনির সমপ্রেম বিরোধিতায়, বলছেন অনুরাগীরা।
প্যারিসেই রুপো জিতে নোয়া উইলিয়ামস যেভাবে ডাইভিং পার্টনার টম ডালেকে চুম্বন করলেন, তাও সমপ্রেম বিরোধিতার গালে আছড়ে পড়েছে সপাটে। সমলিঙ্গ প্রেমের সমর্থনে ডালের হাতে ধরা ছিল রামধনু রং পতাকাও। একইভাবে মহিলাদের ফ্রিস্টাইলে রুপো জিতে প্রেমিকাকে প্রকাশ্যে চুম্বন করেছেন সমপ্রেমী পেরিস বেনেগাস। ২০১৮-তেও উইন্টার অলিম্পিক্সে প্রেমিককে প্রকাশ্যেই চুম্বন করেন গাস কেনওয়ার্দি। হোমোফোবিয়াকে চ্যালেঞ্জ করার লক্ষ্যেই এ কাজ করেছিলেন তিনি, জানান এই অ্যাথলিট।
:আরও শুনুন:
মনের দৈত্য যখন পথ রুখে দেয়, ‘চিচিং ফাঁক’ মন্ত্র শেখান সিমোন
শুধু বিদ্রোহই নয়, প্রেমের দিব্যিও চুমুতেই থাকে বইকি। খেলার শুরুতে কিংবা পদক জেতার পর অনেকসময়ই খেলোয়াড়দের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে চুম্বনের মাধ্যমে। সম্প্রতিই যেমন মিক্সড ডাবলসে সোনা জিতে চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যাটরিনা সিনিয়াকোভা আর টমাস মাচাক ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেন। যদিও সপ্তাহখানেক আগেই চার বছরের সম্পর্কে ইতি টেনেছেন তাঁরা, কিন্তু অলিম্পিক সোনা হয়তো মুহূর্তের জন্য সে কথা ভুলিয়ে দিয়েছিল তাঁদের। এক অসম্ভব জয়ের পর সোনাজয়ী সাঁতারুও সব আনন্দ উজাড় করে দিয়েছেন প্রেমিকার ঠোঁটেই। আর খেলোয়াড়দের দৌলতেই, শুধু খেলার মাঠেই নয়, ঠোঁটে ঠোঁটে খেলাতেও নজর কাড়ে অলিম্পিক্স।