তীরে এসে ডুবেছিল তরী। নিজের সেরাটুকু দিয়েও সবাইকে ছাপিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। দৌড় থেমেছে চতুর্থ বা পঞ্চম স্থানে। একবার নয়, ভারতীয় ক্রিড়াবিদদের অনেকেই অলিম্পিকের মঞ্চে এমন দুঃস্বপ্নের দিন কাটিয়েছেন। কারা রয়েছেন তালিকায়? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অলিম্পিক ঘিরে গোটা দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখেন। আগের তুলনায় বেশি পদক আসবে, এই আশায় বুক বাঁধেন ক্রিড়াবিদরাও। কিন্তু ভাগ্যদেবতা সবসময় সহায় হন না। আর তাতেই দৌড় থামে চতুর্থ কিংবা পঞ্চম স্থানে। হেরে যাওয়ার দুঃখ একরকম, কিন্তু জয়ের খুব কাছে পৌঁছেও তা হাসিল করতে না পারা দুঃস্বপ্নই বটে। না চাইতেও যে দুঃস্বপ্ন দেখতে হয়েছিল, মিলখা সিং, দীপা কর্মকার কিংবা জয়দীপ কর্মকারদের।
:আরও শুনুন:
১২০০ কর্মীর বেতন দেননি, রাগের মাথায় CEO-কে অপহরণ করলেন কর্মীরা
২০২৪’এ অলিম্পিকের আসর বসছে প্যারিসে। এবার ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন মোট ১১৭ জন অ্যাথলিট। তালিকায় রয়েছেন নীরজ চোপড়া, পিভি সিন্ধুর মতো তারকারা। স্বাভাবিক ভাবেই গতবারের তুলনায় বেশি পদকের আশায় বুক বাঁধছেন ক্রিড়াবিদদরা। দেশের মানুষও সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন। ঠিক যেভাবে প্রতিবার একবুক স্বপ্ন নিয়ে অলিম্পিকের মঞ্চে পা রাখেন দেশের তারকা ক্রিড়াবিদরা। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সফল হন। সকলকে চমকে দিয়ে সোনা নিয়ে ঘরে ফেরেন। কিন্তু কেউ কেউ জয়ের খুব কাছে পৌঁছেও খালি হাতে ফিরে আসেন।
:আরও শুনুন:
দেশের সৈনিক হওয়ার সাধ ছিল, ক্রিকেটের সৈনিক হলেন গম্ভীর
একেবারে অলিম্পিক শুরুর দিকে ফেরা যাক। ১৯৫৬ সালে অলিম্পিকের আসর বসেছিল মেলবোর্নে। সেবার দুরন্ত পারফরম্যান্সে সকলের নজর কেড়েছিল ভারতীয় ফুটবল দল। প্রথম এশিয়ান হিসেবে হ্যাটট্রিক করলেন নেভিল ডিসুজা। চমকে দিয়েছিলেন পি কে ব্যানার্জিও। কিন্তু পদক পাওয়ার জন্য যে কটি ম্যাচ জিততে হত তার সবগুলোতেই হেরে যায় ভারতীয় দল। তাই সেবার জয়ের অনেকটা কাছে পৌঁছেও খালি হাতেই ফিরতে হয় ভারতীয় দলকে। একইভাবে ১৯৬০ রোম অলিম্পিকেও তীরে এসে তরী ডুবেছিল মিলখা সিং-এর। যদিও পরে এশিয়ান গেমসে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন ফ্লাইং শিখ। এরপর ১৯৮০’র মস্কো অলিম্পিক, ৮৪’র লস আঞ্জেলস অলিম্পিক সবেতেই কোনও না কোনও ক্ষেত্রে চতুর্থ স্থানে দৌড় থামিয়েছেন ভারতীয় ক্রিড়াবিদরা। ২০০৪’এর এথেন্স অলিম্পিকেও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল পেজ-ভুপতির মতো টেনিস জুটির। শুধু তাই নয়, সেবার ভরত্তোলনেও একেবারে জয়ের কাছে পৌঁছে খালিহাতে ফিরে এসেছিলেন কুনজারনি দেবী। লণ্ডন অলিম্পিকে একই অবস্থা হয়েছিল শ্যুটার জয়দীপ কর্মকারের। মাত্র ১.৯ পয়েন্টের জন্য ব্রোঞ্জ মেডেলও হাতছাড়া হয়েছিল তাঁর।
২০১৬’র রিও অলিম্পিকে শুরু থেকেই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বাংলার জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকার। ধরেই নেওয়া হয়েছিল বাংলার ঘরে এবার একটা অন্তত পদক আসছেই। কিন্তু না, শেষবেলায় একটুর জন্য হাতছাড়া হয় পদক। একইভাবে বিশ্বজয়ী শ্যুটার অভিনব ব্রিন্দাও অল্পের জন্য হারিয়েছিলেন ব্রোঞ্জ পদক। শেষবার তথাত ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকে পুরনো স্মৃতি ফেরায় ভারতীয় মহিলা হকি দল। মস্কো অলিম্পিকের মতো এবারও একটু জন্য ব্রোঞ্জ পদক হাতছাড়া হয় ভারতের। তবে এত হতাশার মাঝে সাফল্যের ঘটনাও নেতাহই কম নেই। বিভিন্ন অসুবিধা উপেক্ষা করে ভারতীয় ক্রিড়াবিদরা নিজেদের প্রমাণ করেছেন বিশ্বজয়ের মঞ্চে। নীরজ চোপড়ার মতো খেলোয়াড় গোটা বিশ্বে মাথা উঁচু করেছে দেশবাসীর। এবারেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে করছেন ভারতীয়দের অনেকেই।