টোকিও অলিম্পিক্স থেকে শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছিল ভারতীয় শুটারদের। তবে প্যারিস অলিম্পিক্সে দেশে পরপর পদক এল শুটিং-এর হাত ধরেই। মনু-স্বপ্নিলদের আগেও ভারতকে অলিম্পিক মেডেল এনে দিয়েছিলেন কোন শুটারেরা? শুনে নিন।
মেলার মাঠে বন্দুক ধরে বেলুন ফাটানো। সেই ছেলেমানুষির হাত ধরেই শুটিংও কবে থেকেই পরিচিত ক্রিকেট-ফুটবল প্রেমের ভারতে। তবে মেলায় বেলুন ফাটানোর সঙ্গে এশিয়ান গেমস, অলিম্পিক্স বা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে পদক জয়ের আলোকবর্ষ দূরত্ব। কিন্তু সেই দূরত্ব পেরিয়ে, সেই খেলার হাত ধরেই চলতি অলিম্পিকে একের পর এক পদক এল দেশে। একে একে দুই নয়, একেবারে তিন!
:আরও শুনুন:
কথা দিয়েছিলেন ছাত্রী, মনুর জয়ে প্রতিশ্রুতি পূরণের স্বাদ পেলেন প্রাক্তন শিক্ষিকা
চলতি অলিম্পিক্সে দেশকে প্রথম পদক এনে দিয়েছিলেন হরিয়ানার শুটার মনু ভাকের। দ্বিতীয় পদকটিও দেশে এসেছে তাঁরই হাত ধরে। মনু ভাকের আর সরবজ্যোত সিং-এর জুটি জিতে নিয়েছেন ডাবলস ইভেন্টের ব্রোঞ্জ। টোকিও অলিম্পিক্সে আশা জাগিয়েও শেষরক্ষা হয়নি বটে, তবে প্যারিস অলিম্পিক্সে কড়ায় গন্ডায় হিসেব বুঝে নিয়েছেন মনু। দেশকে প্রথম অলিম্পিক পদক এনে দেওয়া নর্ম্যান প্রিচার্ডের রেকর্ডও জোড়া পদক জিতে ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। এদিকে মনুর পরে ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনে ব্রোঞ্জ জিতে নিলেন স্বপ্নিল কুসালে। তাঁর হাত ধরেই শুটিংয়ের এই ইভেন্টটিতে প্রথমবার পদক এল দেশে।
পরপর তিন পদক জিতে দেশকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন মনু-সরবজ্যোত-স্বপ্নিলরা। তবে এর আগে, এমন ধারাবাহিক জয় না থাকলেও শুটিংয়ে অলিম্পিক পদক কিন্তু পেয়েছে দেশ। ২০০৮ সালে বেজিং অলিম্পিক্সে অভিনব বিন্দ্রার সোনা জয় দেশে শুটিং নিয়ে বিপুল হইচই ফেলেছিল। তবে সেটাই একমাত্র নয়। তার আগে, ২০০৪-এর আথেন্স অলিম্পিক্সে মেন’স ডাবল ট্র্যাপে রুপো তুলে নিয়েছিলেন রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর। সেবার অলিম্পিক্সে ওই একটিমাত্র পদক নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল ভারতকে। ব্যক্তিগত ট্রেনিংয়ের জোরে পরের অলিম্পিক্সেই সোনা যেতেন অভিনব বিন্দ্রা। ২০১২ সালে এসেছিল একটি রুপো, একটি ব্রোঞ্জ। ২৫ মিটার র্যাপিড ফায়ার পিস্তলে রুপো জেতেন বিজয় কুমার, আর অভিনবর ইভেন্ট ১০ মিটার এয়ার রাইফেলেই ব্রোঞ্জ জেতেন গগন নারাং। যদিও ২০১৬ সালের অলিম্পিক্সেও শুটিংয়ে কোনও পদক জিততে পারেনি ভারত। টোকিও অলিম্পিক্স থেকেও ফিরতে হয় পদক ছাড়াই।
:আরও শুনুন:
গর্ভে ৭ মাসের সন্তান, তবু অলিম্পিকে লড়ে কুর্নিশ আদায় হবু মায়ের
এসবের আগেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে পদক জিতে নিয়েছেন বইকি ভারতীয় শুটারেরা। তার মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত নাম হয়তো কার্নি সিং-এর। বিকানিরের এই মহারাজা ১৯৬২ সালে প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে রুপো জিতেছিলেন। তবে পাঁচটি অলিম্পিক্সে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করলেও পদক মেলেনি। সেখানে মনু-স্বপ্নিলদের ধারাবাহিক জয় দেশে শুটিংয়ের জনপ্রিয়তা আরও বাড়াবে, এবং আগামী শুটারদের লড়াই আরেকটু মসৃণ করবে, এমন আশা হয়তো করাই যায়।