আইপিএল-এর মাঝে ফের মাঠে পাশাপাশি ধরা দিলেন শচীন সৌরভ। যে ক্রিকেট মাঠ তাঁদের বন্ধুত্বের গল্প জানে। জানে দুজনের জুটি বাঁধার যাবতীয় সালতামামি। দুজনের ছবি উসকে দিল সেই নস্টালজিয়াই।
এ যেন অন্যরকম এক রিইউনিয়নের গল্প। সেই কোন কিশোরবেলায় বন্ধুত্বের শুরুটা হয়েছিল দুজনের। শুরু হয়েছিল পার্টনারশিপ। যার সাক্ষী ছিল ক্রিকেটের পিচ। তারপর দিন গড়িয়ে গিয়েছে অনেক। সময় বদলেছে, বদলেছে জীবন। কিন্তু সেদিনের বন্ধুত্বের সুতো ছেঁড়েনি আজও। আর এখনও, সেই জোড়ের সাক্ষী হয়ে রইল ময়দানই। আইপিএল-এর আয়োজনের মাঝে সেই ক্রিকেট মাঠেই পাশাপাশি হলেন শচীন সৌরভ। সেখানেই, ঠিক যেখানে তাঁদের দেখা হলে মানায়।
আরও শুনুন:
‘মান্না-পিকে-চুনির ছবি বিরাট সম্বল’ কেন? সিলেবাসে সেই ইতিহাস জানা জরুরি
মুম্বই ইন্ডিয়ানস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ নিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের উত্তেজনা ছিলই। এমনিতেই ক্যাপ্টেন বদল আর তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার জেরে খবরের শিরোনামে এমআই। এর আগে তিনটি ম্যাচ খেলে তিনটিতেই হারের মুখ দেখেছিল মুম্বই, উপরন্তু প্রত্যেক ম্যাচেই ভক্তদের ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছেন নতুন ক্যাপ্টেন হার্দিক। সেখানে দিল্লি ক্যাপিটালসের মেন্টর সৌরভ যেভাবে হার্দিকের পাশে দাঁড়ালেন, আর মুম্বইয়ের প্রাক্তন অধিনায়ক রোহিতের সঙ্গেও তাঁকে কথা বলতে দেখা গেল, সে ছবি এক অন্য বার্তা দিয়েছিল তো বটেই। খেলার মাঠ যে বেঁধে থাকার বার্তা দেয়, সেই বার্তাই যেন চারিয়ে গিয়েছিল এই দাদাগিরিতে। কিন্তু শুধু তো এটুকুই নয়। মাঠের দ্বৈরথের পাশাপাশি, ডাগ আউটের দিকেও যে এই ম্যাচ নজর কেড়ে নেবে, তা বোঝা গিয়েছিল তখনই। যখন আরেকরকম জুড়ে থাকার ছবিই ধরা পড়েছিল ক্যামেরার লেন্সে। সেখানে ধরা পড়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের দুই মহারথী। একদিকে মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেণ্ডুলকর। অন্যদিকে ভারতের সেরা ক্যাপ্টেনদের অন্যতম সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। খেলা ছাড়ার এতদিন পরেও, লাইমলাইট যে তাঁদের এতটুকু ছাড়েনি, সে কথা তো আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে সে তো একক কৃতিত্বের জায়গায়। কিন্তু দুই তারকা একসঙ্গে হতেই আসলে ঝিলিক দিয়ে উঠল তাঁদের পুরনো বন্ধুত্বের স্মৃতি।
আরও শুনুন:
মশকরা হয়েছিল ধোনিকে নিয়ে, সেই তামাশাকেই ব্র্যান্ডে বদলে দিলেন ক্যাপ্টেন কুল
পুরনোই বটে। সেই ১৯৮৮-র জাতীয় ক্রিকেট ক্যাম্পে দুজনের সম্পর্কের শুরু। জাতীয় দলে দুজনকেই একসঙ্গে দেখতে পাওয়ার জন্য অবশ্য ৯২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। আর ১৯৯৬-তে এসে আক্ষরিক অর্থেই জুটি বাঁধলেন দুজনে। শুরু হল নিয়মিত ওপেনিং পার্টনারশিপ। ২০০৭ পর্যন্ত, ১৩৬ ইনিংস খেলে ৬৬০৯ রান ঝুলিতে ভরেছিল এই জুটি। একে অপরের গেমপ্ল্যান নিখুঁত বুঝে নিতে পারাই ছিল তাঁদের ইউএসপি। আর সেই বুঝে নেওয়ার ভিত গড়েছিল দুজনের বন্ধুত্ব। সেই জুটির নস্টালজিয়ায় এখনও বুঁদ হয়ে যান আপামর ক্রিকেটপ্রেমী। পুরনো দিনের বন্ধুত্ব হলে কী হবে, শচীন-সৌরভের বন্ধুত্ব এখনও পুরনো হয়নি একটুও।