ইভানা নল- এই নামের সঙ্গে ফুটবল-বিশ্ব এখন পরিচিত। কাতারের কঠোর পোশাকবিধিকে পাত্তা না দিয়ে, খোলামেলা পোশাক পরে গোটা বিশ্বকাপে নজর কেড়েছেন তিনি। ক্রোয়েশিয়ার সেই সুন্দরী বিশ্বকাপ শেষে খানিক চটে গিয়েছেন ফিফার উপর। আর তার রাগের কেন্দ্রে আছেন খোদ লিওনেল মেসি। ব্যাপারখানা কী? আসুন শুনে নিই।
অবিশ্বাস্য ফাইনাল। মেসির ঐশ্বরিক পারফরমেন্স। এবং নীল-সাদার বিশ্বজয়। বিশ্বকাপ ফাইনাল খাতায়-কলমে শেষ হয়েছে বটে। কিন্তু ফুটবল অনুরাগীদের কাছে এখনও তার রেশ টাটকা। সর্বত্র চলছে ওই এক আলোচনা। আর সে আলোচনার সিংহভাগ জুড়ে আছেন লিওনেল মেসি। একজন মানুষ কীভাবে একার দক্ষতায় একটা দলকে বিশ্বকাপ জেতাতে পারে, সেই বিস্ময়ে মশগুল ফুটবল দুনিয়া। মেসি কী করেছেন, কীভাবে করেছেন- সে-আলোচনা যেমন চলছে, তেমনই এমবাপের মরণপণ লড়াই-ও উঠে আসছে আলোচনায়। মোদ্দা কথা হল, বিশ্বকাপ ফুরোলেও, বিশ্বকাপ নিয়ে কথা এখনই ফুরোচ্ছে না। এই আবহেই খানিক বিতর্ক বাড়ালেন ক্রোয়েশিয়ার সুন্দরী ইভানা নল।
আরও শুনে নিন: মেসিতে মজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভুললেন ব্রাজিল তারকা, ‘গোট’ বিতর্কে কী মত ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর?
চলতি বিশ্বকাপের গোড়া থেকেই নজর কেড়েছিলেন ইভানা। কাতারের কঠোর পোশাকবিধি নিয়ে তখন নাজেহাল ইউরোপের দেশগুলি। ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের স্ত্রী এবং বান্ধবীরা তো শরণ নিয়েছিলেন পরামর্শদাতার। কী পোশাক পরবেন আর কী পরবেন না, তা নিয়ে বেজায় ধন্ধে ছিলেন তাঁরা। এই যখন পরিস্থিতি, তখন সব নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খোলামেলা পোশাকেই স্টেডিয়ামে এসেছিলেন ইভানা। এমনকী বিকিনি পরে ছবিও আপলোড করেছিলেন। কেউ কেউ বলেছিলেন, পোশাকবিধি ভাঙার জেরে তাঁর জেল পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু কোনও কিছুরই তোয়াক্কা করেননি ক্রোয়েশিয়ার এই সুন্দরী। যত বিশ্বকাপ গড়িয়েছে, তত বেড়েছে তাঁর পোশাকের বাহার। এক সময় তর্ক বিতর্ক ছেড়ে বিশ্ব মশগুল হয়ে গিয়েছিল তাঁর পোশাক আর সাহসের চর্চায়। সেই ইভানাই এখন বেশ চটেছেন ফিফার উপর।
আরও শুনুন: মেসি-এমবাপে মহারণের দিন সারা বিশ্ব কী খুঁজছিল গুগলে? ফাঁস করলেন সুন্দর পিচাই
গোটা বিশ্বকাপে, আর ফাইনালে যেভাবে নিজের দলকে জিতিয়েছেন মেসি, তাতে ফিফা প্রায় অবধারিত ভাবেই গোল্ডেন বল তুলে দিয়েছে মেসির হাতে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ ইভানা। ফাইনালের পর নিজের মনের কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, এই খেতাব প্রাপ্য ছিল কিলিয়ান এমবাপের। ‘ফিফা’কে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভুল মানুষের হাতেই গোল্ডেন বল তুলে দিয়েছে সংস্থা। আর্জেন্টিনা জিতেছে, এ কথা সত্যি, তবে সত্যিকারের গোল্ডেন বল জেতার দাবিদার যদি কেউ থাকেন, তবে তিনি কিলিয়ানই।
মেসিদের বিশ্বজয়ের মধ্যে অবশ্য বরাবরই চর্চায় উঠে আসছেন কিলিয়ান। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তাঁর যে নাছোড় লড়াই, তার তারিফ না করে পারছেন না কেউই। ইভানাও যে সেই দলে, তা একরকম বলেই দিয়েছেন তিনি। তবে মেসি যে এই বিশ্বকাপে তারকা থেকে মিথের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছেন, তা-ও মেনে নিয়েছে ফুটবলবিশ্ব। অতএব এই তর্ক-বিতর্কের আর কোনও মানে নেই, এমনটাই মত অনুরাগীদের।
ক্রোয়েশিয়াকে শেষমেশ তৃতীয় স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে এই বিশ্বকাপে। তবে এই বিশ্বকাপে ইভানার প্রাপ্তির ঝুলি পূর্ণ হয়েছে। সারা বিশ্বের নজর তো কেড়েইছেন, সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাফিয়ে বেড়েছে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা। ইভানা বলছেন, তাঁর দেশে যত মানুষ আছেন, সেই সংখ্যার থেকেও এখন তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা বেশি। মেসিরা ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরেছেন। খালি হাতে ফেরেননি ইভানাও। অসংখ্য অনুরাগীর ভালবাসা নিয়েই বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরেছেন তিনি।