মাঠে খেলছেন শুভমান গিল। কিন্তু গ্যালারিতে সারাকে দেখলেই নজর সরে যাচ্ছে অনেকের। ‘শুভমান, শুভমান’ চিৎকার বদলে যাচ্ছে ‘সারা ভাবি’-কে নিয়ে তুমুল চিৎকারে। ফ্যানদের এই অতি উন্মাদনা দেখে ভয় হয়, সারার অবস্থাও বিরাট-পত্নী অনুষ্কার মতো হবে না তো?
নিজের চওড়া ব্যাটে ভর করে রোহিত ব্রিগেডে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছেন শুভমান গিল। তরুণ তারকার খেলার দিকে যেমন এখন দেশজোড়া ফ্যানের নজর, তেমনই তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিও সমান তালে উঁকিঝুঁকি চলে। আর সেখানে সবচেয়ে বেশি করে উঠে আসে খোদ শচীন তেন্ডুলকরের কন্যা সারা-র নাম। সারা এবং শুভমনের সম্পর্ক নিয়ে একটা জল্পনা মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। ফলে কোনও ম্যাচে সারাকে গ্যালারিতে দেখা গেলেই বাড়তি উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন গিল-ভক্তরা। যার নমুনা দেখা যাচ্ছে চলতি বিশ্বকাপেও। আর ভয় সেখানেই। ভক্তদের উন্মাদনা সবসময়েই দাঁড়িয়ে থাকে খেলোয়াড়ের ফর্মের উপরে। রান পেলে যিনি হিরো, দলের প্রয়োজনে রান করতে না পারলে তাঁকে ঘিরেই আবার ছোটে কটূক্তির বন্যা। তা থেকে রেহাই পান না তারকাদের স্ত্রী বা প্রেমিকারাও। যাদের প্রেম নিয়ে এমনিতে ভক্তরা উচ্ছ্বসিত হন, তারকা ফর্মে না থাকলে সেই প্রেমকেই তাঁরা দাঁড় করিয়ে দেন আসামির কাঠগড়ায়। বিরাট-অনুষ্কার ক্ষেত্রে যেমনটা বারবার দেখা গিয়েছে। সারার ক্ষেত্রেও ভবিতব্য তেমনই হবে কি না, সে আশঙ্কা তো থেকেই যায়।
আরও শুনুন: বাংলা জানেন ধোনি, বোঝেননি বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা! ফল কী হয়েছিল?
ওয়াংখেড়ে-তে শচীনের মূর্তি প্রতিষ্ঠার দিনে স্বাভাবিকভাবেই গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। সঙ্গে ছিলেন কন্যা সারাও। আর সেদিনই মাঠে ঝড় তোলেন শুভমান। রোহিত প্রথমেই আউট হয়ে যাওয়ার পর ম্যাচের হাল ধরে ১৮৯ রানের বড় জুটি গড়েন বিরাট ও শুভমান। ৯২ রান করে আউট হন তরুণ তুর্কি শুভমান। এরপর শুভমান যখন স্লিপে ফিল্ডিং করছেন, সেই সময়েই গ্যালারি থেকে চিৎকার ওঠে- “হামারি ভাবী ক্যায়সি হো/ সারা ভাবী জ্যায়সি হো।” সম্পর্কের জল্পনায় সারা বা শুভমান কেউই শিলমোহর না দিলেও ফ্যানদের রোখে কে! সেসময় অবশ্য বিরাটকেই দেখা যায় দর্শকদের দিকে থামার ইশারা করতে। নিজের স্ত্রীর কথা মনে করেই কি এই সতর্কতা কোহলির? আসলে বিরাটের সঙ্গে অনুষ্কার সম্পর্কের শুরু থেকেই বারবার এই জুটিকে নিয়ে নেতিবাচক কথা শোনা গিয়েছে। এমনকি একসময় যখন তাঁদের বিচ্ছেদের জল্পনা শোনা যাচ্ছিল, সেই সময়েও বিরাটের খারাপ ফর্মের জন্য অনুষ্কাকেই দায়ী করেছিলেন ফ্যানদের একাংশ। চলতি বছরেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল থেকে বিদায়ের পর দেখা যায় একই ছবি। বড় ম্যাচের আগেই লন্ডনে উড়ে গিয়েছিলেন অনুষ্কা। স্বামীর খেলার সময়ে মাঠেও হাজির ছিলেন তিনি। কিন্তু ভারতের হার এবং কোহলির রান না পাওয়ার দায় অনুষ্কার উপরেই চাপিয়ে দিতে ছাড়েননি সমর্থকদের একাংশ। কেউ কেউ মন্তব্য করে বসেন, “যবে থেকে এই মহিলা ক্রিকেট দেখা শুরু করেছেন, ভারত আর আইসিসি টুর্নামেন্ট জেতে না।” এমনকি তাঁকে ‘অপয়া’ বলেও দেগে দিয়েছিলেন নেটিজেনদের একাংশ। অথচ এখন বিরাটের ঝোড়ো ব্যাটিং-এ উচ্ছ্বাসে ভেসে যাচ্ছেন সেই ভক্তরাই।
আরও শুনুন: অবিকল কোহলি! এবারের বিশ্বকাপ মাতানো এই নকল বিরাট কে জানেন?
সত্যি বলতে, কেউ নিজেদের সম্পর্ক ঘোষণা করার আগে পর্যন্ত তা নিয়ে কথা বলার অধিকার কারোরই নেই। কিন্তু তারকাদের গোটা জীবনটাকেই খোলা বইয়ের মতো পড়তে ভালোবাসেন ভক্তরা। তার জেরেই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা কমে না কখনোই। কিন্তু শুভমানের দুরন্ত ফর্মের দিনে কেবল সেটুকু নিয়েই কথা হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল, সারাকে নিয়ে চিৎকার নয়। এই বাড়াবাড়ি উচ্ছ্বাস দেখে তাই আশঙ্কাই হয়, কোনও দিন শুভমান যদি এই ভক্তদের পছন্দের তালিকা থেকে সরে যান, তার কোপ শচীন-কন্যার উপরেও এসে পড়বে না তো?