একদিকে রক্ষণশীলতা। মহিলা-পুরুষ উভয়ের জন্যই নানা নিয়মের বিধিনিষেধ। অন্যদিকে সেই কাতারেই প্রথমবার পুরুষদের বিশ্বকাপে খেলার রাশ হাতে থাকবে মহিলা রেফারির। স্টেফানি ফ্র্যাপার্ট ও তাঁর সহকারীদের হাত ধরে তাই স্মরণীয় হয়ে থাকতে চলেছে কাতার বিশ্বকাপ।
নিয়মের বজ্র আঁটুনিতে কাতার যেন বিতর্কের আগ্নেয়গিরি। রক্ষণশীলতায় মোড়া মুলুকে গিয়ে হাঁসফাঁস দশা ইউরোপীয় দেশগুলির। তা সত্ত্বেও নানা কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকছে কাতার বিশ্বকাপ। মনে করা হচ্ছে, এই বিশ্বকাপেই শেষবার দেখা যাবে ফুটবলবিশ্বের বেশ কয়েকজন মহাতারকাকে। বয়সের কারণেই হয়তো পরের বিশ্বকাপে আর খেলতে পারবেন না তাঁরা। তা ছাড়া এই প্রথম বার বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রযুক্তির চূড়ান্ত ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। ফুটবলে সেন্সরের ব্যবহার থেকে VAR প্রযুক্তি যেমন কার্যকরী, তেমন বিতর্কেরও জন্ম দিচ্ছে। আর এই সবকিছুর মধ্যে আরও একটা কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকছে কাতার। এই প্রথমবার বিশ্বকাপে পুরুষদের খেলার রাশ হাতে তুলে নেবেন একজন মহিলা রেফারি। তিনি স্টেফানি ফ্ল্যাপার্ট। তাঁর সহযোগী হিসাবে থাকছেন দুজন মহিলা রেফারি। তাঁদের কৃতিত্বে ফুটবল ইতিহাসে যুক্ত হল এক নতুন অধ্যায়।
আরও শুনুন: একই ম্যাচে একজন খেলোয়াড়কে তিন বার হলুদ কার্ড, নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী ছিল বিশ্বকাপ
ফ্রান্সের স্টেফানি ফ্ল্যাপার্ট অবশ্য ফুটবলের দুনিয়ায় অতি পরিচিত। ক্লাব ফুটবলে তাঁকে ম্যাচ পরিচালনা করতে দেখা গিয়েছে। ২০২১-এ বিশ্বকাপের যোগ্যতা নির্ণয় পর্যায়ের ম্যাচেও বাঁশি হাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কাতার বিশ্বকাপের গোড়াতেই ঘোষণা করা হয়েছিল যে, এবারের বিশ্বকাপে থাকবেন মহিলা রেফারিরা। মোট ৩৬ জন্য রেফারির মধ্যে তাই ছিলেন স্টেফানি-সহ অন্যান্য মহিলা রেফারিরাও। এবার গ্রুপ-ই পর্যায়ে আসন্ন জার্মান বনাম কোস্টারিকা ম্যাচের অফিসিয়ালদের নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছে ফিফা। যেখানে পুরুষদের বিশ্বকাপে এই প্রথমবার পুরো রাশটাই থাকছে মহিলা রেফারিদের হাতে। প্রধান রেফারি হিসাবে থাকছেন স্টেফানি স্বয়ং। সহকারী হিসাবে থাকবেন ব্রাজিলের নেউজা ব্যাক ও মেক্সিকোর কারেন দিয়াজ।
ইতিহাসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কী বলছেন স্টেফানি? যথেষ্ট চাপ যে আছে স্বীকার করে নিয়েই তাঁর দাবি, সে সব নিয়ে খুব বেশি ভাবছেন না তাঁরা। এমনকী সংবাদমাধ্যমে কী বলাবলি হচ্ছে, তা নিয়েও চিন্তিত নন। মাঠের মধ্যে তাঁরা নিজেদের পালটাবেন না। শান্ত আর লক্ষ্যে স্থির থাকাই তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য। অঙ্কের নিয়মে বিশ্বকাপ এগিয়ে যাবে। জার্মান থাকবে না থাকবে না, সে তো পরের কথা। তবে স্টেফানিদের হাত ধরে বিশ্বকাপে বৃহস্পতিহার ঐতিহাসিক মুহূর্তেরই সাক্ষী থাকবে গোটা বিশ্ব।