আফগানভূম আপাতত তালিবানের কবজায়। নতুন সরকার গঠনের কাজও শেষ। কিন্তু মেয়েদের অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি তাতে। উলটে আফগানিস্তান থেকে পালাতে বাধ্য হলেন সে দেশের জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের সদস্যরা।
কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের জেরে একবার যাত্রা বাতিল হয়েছিল। এদিকে আসছিল লাগাতার হুমকি। শেষমেশ তালিবানি আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে পেরেছিল সে দেশের জাতীয় মহিলা ফুটবল দল। কিন্তু তখনও ভবিষ্যৎ ছিল অজানা। অবশেষে পর্তুগালে আশ্রয় পেলেন সেই মেয়েরা। মিলল আপাত স্বস্তি।
আরও শুনুন: বাদের খাতায় ‘ব্যাটসম্যান’, ক্রিকেট-অভিধানে নয়া শব্দের আমদানি
আফগানিস্তান তালিবানের দখলে যেতেই বিমানবন্দর এবং সীমানা অঞ্চলে দেখা গিয়েছে মানুষের ভিড়। দেশত্যাগ করেছেন অসংখ্য মানুষ। আর তালিবান শাসনে সে দেশের মেয়েদের যে কী অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মেয়েদের উপর তালিবানের জারি করা একের পর এক ফতোয়া শুনে চমকে উঠেছে বাকি পৃথিবী। মেয়েদের শিক্ষার অধিকার, অর্থকরী কোনও কাজ করার অধিকার, এমনকি ইচ্ছেমত পোশাক পরার অধিকারেও হস্তক্ষেপ করেছে তালিবান। কেড়ে নেওয়া হয়েছে গানবাজনা বা খেলাধুলা করার অধিকারও। যেহেতু কোনও খেলাতেই সর্বাঙ্গ ঢাকা পোশাক পরা সম্ভব নয়, সুতরাং মেয়েদের খেলাধুলার উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বোরখা-পন্থী তালিবান। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের সদস্যরাও দেশ ছেড়ে যেতেই চাইছিলেন। একে তো খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়, তার উপরে মেয়েদের হয়ে কথা বলার অপরাধ। সুতরাং তালিবান যে তাঁদের ছেড়ে কথা বলবে না, সে কথা বলাই বাহুল্য।
আরও শুনুন: ‘গোলন্দাজ’ হয়ে তিনি আসছেন পর্দায়, চিনে নিন নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী-কে
কিন্তু তালিবান কাবুল দখল করে নেওয়ার পরে দেশ ছেড়ে যাওয়াও খুব একটা সহজ ছিল না। দলের অধিনায়ক ফারখুন্দা মুহতাজ এই সময়ে ছিলেন তাঁর কানাডার বাড়িতে। তিনিও তাঁর দলের বাকি মেয়েদের সেফ প্যাসেজের ব্যবস্থা করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। এদিকে দিনের পর দিন দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরছিলেন ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সের ওই মেয়েরা। বুঝতে পারছিলেন না আদৌ তাঁরা কোনও সাহায্য পাবেন কি না। অবশেষে রবিবার জানা যায়, একটি চার্টার্ড প্লেনে দেশ ছাড়তে পেরেছেন তাঁরা। সঙ্গে রয়েছেন তাঁদের পরিবারের লোকেরাও। তবে বাড়িঘর এবং নিজেদের যাবতীয় জিনিসপত্র দেশেই ফেলে আসতে হয়েছে তাঁদের।
এই রেস্কিউ মিশনের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন সকার বলস’। যার সূত্রে নিরাপদে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন শহরে পা রাখতে পারলেন এই আফগান কিশোরীরা।