হিন্দু শাস্ত্রে তুলসী অতি পবিত্র গাছ। তাই অধিকাংশ হিন্দু বাড়িতেই এই গাছ দেখা যায়। স্রেফ ধর্মীয় কারণ নয়, তুলসীর মাধ্যমে উপশম মিলতে পারে একাধিক রোগের প্রকোপ থেকেও। এছাড়া তুলসী গাছ নির্দেশ করে গৃহস্থের আসন্ন বিপদেরও। তুলসীগাছে ঠিক কী পরিবর্তন দেখলে বিপদের আঁচ মিলবে? আসুন শুনে নিই।
তুলসী গাছ নেই, এমন হিন্দু বাড়ি প্রায় বিরল। ভেষজ দিক থেকে এই গাছ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই ধর্মীয় ক্ষেত্রে এই গাছ অতি পবিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই গৃহস্থের মঙ্গল কামনায় তুলসীর পুজো করেন অনেকেই। আর এই তুলসীগাছেরই বিশেষ কিছু লক্ষণ নির্দেশ করতে পারে আসন্ন বিপদের।
আরও শুনুন: শিবলিঙ্গে জল ঢালার সঠিক নিয়ম জানেন তো? না মানলে রুষ্ট হবেন স্বয়ং মহেশ্বর
স্নান সেরে নিয়মিত তুলসীগাছে জল ঢালার অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। শাস্ত্রমতে এতে বিশেষ প্রীত হন নারায়ণ। বিষ্ণুপুজো তুলসীপাতা ছাড়া অসম্ভব। কোনওভাবেই তুলসীর অপমান করা উচিত নয়। নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে তবেই তুলসী স্পর্শ করতে হয়। অন্যথায় বিনা কারণে তুলসী গাছ শুকিয়ে যেতে পারে। যা মারাত্মক বিপদের ইঙ্গিত। এমনটা হলে সংসারে নিত্য অশান্তি হতে পারে। পরিবারের কারও মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। এছাড়া তুলসীর পাতা যদি আপনা থেকেই বিবর্ণ হয়ে যায় তাহলেও বিপদ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে শুদ্ধাচারে তুলসীর পুজো করা উচিত। সম্ভব হলে নতুন একটি তুলসী গাছ প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এছাড়া তুলসী মঞ্জরীও শাস্ত্রে বিশেষ গুরুত্ব পায়। বছরের নির্দিষ্ট সময় তুলসীগাছে মঞ্জরী দেখা যায়। সেইসময় একেবারেই অশুচী অবস্থায় তুলসী স্পর্শ করা উচিত নয়। অনেকে তুলসী গাছে লাল কাপড় ঢেকে রাখেন। শাস্ত্রেও এর উল্লেখ মেলে। মনে করা হয় এমনটা করলে দেবি লক্ষ্মীর কৃপালাভ সম্ভব।
আরও শুনুন: শিব বা শনিদেব নন, শ্রাবণ মাসে আরও এক দেবতার পুজো করলে মিলবে বিশেষ ফল
এছাড়া তুলসীগাছ রাখার সময় একটি নির্দিষ্ট দিকের কথাও মাথায় রাখতে হয়। বাস্তুমতে, বাড়িতে তুলসী গাছ উত্তর বা উত্তর পূর্ব দিকে রাখতে হয়। এই স্থান ইশ্বরআরাধনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত। তাই প্রতিদিন সন্ধ্যায় এই তুলসীগাছের সামনে ধূপ বা প্রদীপ জ্বালানো বিশেষ ফলদায়ক। এছাড়া পূর্ব দিকেও তুলসী গাছ রাখা যেতে পারে। এতে গোটা বাড়িতে একরকমের পজিটিভ এনার্জি ছড়িয়ে পড়ে। যা বাড়ির অমঙ্গল দূর করে। যে কোনও রকম বাস্তুদোষ কাটাতে তুলসীগাছ বাড়িতে রাখার পরামর্শ দেন জ্ঞানীজনরা। সাধারণত প্রতিদিনই তুলসীগাছে জল দেন ভক্তরা। তবে একাদশীর দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের দিন তুলসী গাছে জল না দেওয়াই ভালো। পূর্ণিমা বা গ্রহণের দিন তুলসী গাছ ছোঁয়াও শাস্ত্রবিরুদ্ধ। এইসব নিয়ম মেনে চললে একদিকে যেমন গৃহে শান্তি ছড়িয়ে পড়তে বাধ্য, তেমনই এর অন্যথায় ঘটতে পারে মারাত্মক বিপদ।