সকালে উঠে ইদানিং কর্মব্যস্ত সময়ে আধুনিক মানুষ, বিছানায় বসে বেড টি খান। ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই হাত যায় ফোনের দিকে। সেখানে নোটিফিকেশন দেখা থেকে শুরু হয় দিন। কিন্তু গৃহী মানুষের জীবনে অধ্যাত্ম চিন্তা বা নিত্যকর্ম কেমন হওয়া উচিত! কী বলছে ধর্মশাস্ত্র! শোনাচ্ছেন, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।
আধুনিক মানুষের জীবনযাত্রা খুবই কর্মপ্রধান। সনাতন ধর্মশাস্ত্র অনুযায়ী যদিও দিনের ঘণ্টা ধরে মানুষের কৃত্যাদির প্রসঙ্গ উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু সেসব আজ অচল। প্রয়োজন সরল মহৎ অথচ ঐকান্তিক ব্যবস্থার। শাস্ত্রের দোহাই দিয়েও মানুষকে সেইসব আজ অনুসরণ করানো মুশকিল।
আরও শুনুন – Spiritual: ফললাভের কামনা করেই কি পুজো করা উচিত?
প্রত্যহ যে সব কাজ করলে মানুষ ক্রমে ক্রমে উচ্চ থেকে উচ্চতর অধ্যাত্ম ভাবরাশি উপলব্ধি করতে পারে, তারই উল্লেখ মেলে ধর্মশাস্ত্রগুলিতে। নিত্যকর্ম অবশ্য কর্তব্য হিসেবে বিধেয়, একদিনও তাকে বাদ দিয়ে চলা যায় না, এইরকম মানসিক দৃঢ়তার প্রয়োজন। যেমন খুশি জীবনযাপন শাস্ত্রমতে পশুত্বের লক্ষণ। মানুষের জীবনে নিজেকে জীবিত রাখা ছাড়া মহত্তর কিছু পাবার চেষ্টা রয়েছে, সেই জন্যই সে জীবন যাপন করে। এখানেই মানুষের মনুষ্যত্ব।
আরও শুনুন – Spiritual: মানুষের জীবনে সাধন-ভজনের গুরুত্ব কী?
শাস্ত্রে ঘুম থেকে ওঠা প্রসঙ্গে নানা উপদেশ দেওয়া হয়েছে। এখন আমাদের কর্মব্যস্ত জীবনের জন্য আমরা বাড়ি ফিরি অনেক রাতে, রাতের খাবার খাই মধ্যরাত পেরিয়ে ঘুমাতে যাই ভোররাতে। কিন্তু শাস্ত্রে বলেছে ব্রাহ্মমুহূর্তে শয্যাত্যাগ করতে হবে। প্রতিদিনের আলাদা আলাদা সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় থাকে। সূর্যোদয়ের অন্তত ৪৮মিনিট আগের মুহূর্তকে বলে ব্রাহ্মমুহূর্ত, ঠিক তেমনই সূর্যোদয়ের পরবর্তী প্রথম ৪৮ মিনিটকে বলে রৌদ্র মুহূর্ত। ঘুম থেকে উঠতে হবে সূর্যোদয়ের অন্তত আধঘণ্টা আগে।
ঘুম থেকে উঠেই, যাঁদের দীক্ষা হয়েছে তাঁরা মনে মনে স্মরণ নেবেন শ্রী গুরুর। তাঁর ধ্যান এবং প্রণাম করবেন। যাদের দীক্ষা হয়নি, তাঁরা ঈশ্বরের যে কোনও নাম নেবেন, মনে মনে প্রণাম করবেন।
শাস্ত্রে বলেছে,
প্রবুদ্ধশচিন্তয়েৎ ধর্মমর্থঞ্চস্য অবিরোধিনম্।
অপীড়য়া তয়োঃ কাম্যমুভয়োরপি চিন্তয়েৎ।।
অর্থাৎ নিদ্রা থেকে জাগরিত হয়ে প্রথমে ধর্মচিন্তা, পরে অন্য চিন্তা করবে। অনন্তর পৃথিবীকে নমস্কার করবে।
ঊষাকালে বলা হয়েছে দূর্গা নাম স্মরণ করতে। যেমন সূর্য উঠলে অন্ধকার দূর হয়ে পুনরায় জগতে আলোর প্রতিষ্ঠা হয়, তেমনই যিনি প্রভাতকালে দূর্গা দূর্গা এই অক্ষরদ্বয় নিত্য স্মরণ করেন তাঁর সকল আপদ বিনষ্ট হয়।
প্রভাতে যঃ স্মরেন্নিত্যং দূর্গা দূর্গাক্ষরদ্বয়ম্।
আপদস্তস্য নশ্যন্তি তমঃ সূর্যোদয়ে যথা।।
বাকি অংশ শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।