সরলতাই ঈশ্বরলাভের উপায়। কপটতা, পাটোয়ারী থাকলে ঈশ্বরকে পাওয়া যায় না। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ তাই বলেন, পাগল যদি হতেই হয়, তবে সংসারের জিনিস নিয়ে কেন হবে? ঈশ্বরের জন্য পাগল হও। শোনাচ্ছেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।
যাঁরা সংসারে থাকেন, তাঁদের প্রতিদিন ব্যস্ত থাকতে হয় সংসারের হাজার জিনিস নিয়ে। সংসারের ভালো কীসে, সেই চিন্তা করতে করতেই পাগল হওয়ার জোগাড়। আর এসবের ফাঁকেই কখন যে ঈশ্বর থেকে মন সরে যায় অন্যদিকে, আমরা যেন তা ঠাহর অবধি করতে পারি না। আমরা, সাধারণ মানুষ যাঁরা, তাঁরা এই চক্রব্যূহ ঢুকে তো পড়ি, কিন্তু বের হওয়ার মন্ত্র জানি না।
আমাদের যুগপুরুষগণ ঠিক এইখানেই আমাদের সতর্ক করেন। শিখিয়ে দেন সেই মন্ত্র। আমরা যদি ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের কথা শুনি, সেখানেও পাব এই ইঙ্গিত।
আরও শুনুন – Spiritual: কোন উপায়ে শোক থেকে মিলবে পরিত্রাণ?
সেবার ঠাকুরের এক তরুণ ভক্ত এসেছেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। ঠাকুর কীর্তনান্তে তখন স্থির হয়ে একটু বসেছেন। ভক্ত তখন তাঁকে প্রণাম করতেই, ঠাকুরের মুখে খেলে গেল অপূর্ব হাসি। ভক্তকে দেখে তিনি ভারী আনন্দিত হলেন। কাছেই বসেছিলেন কথামৃতকার মাস্টারমশাই। তাঁর দিকে তাকিয়ে ঠাকুর বললেন, ‘দেখ এ ছোকরাটি বড় সরল। সরলতা পূর্বজন্মে অনেক তপস্যা না করলে পাওয়া যায় না। কপটতা, পাটোয়ারী- এ-সব থাকতে ঈশ্বরকে পাওয়া যায় না।
উপস্থিত ভক্তরা তখন ঠাকুরের মুখ থেকে এ বিষয়ে আরও কিছু শুনবে বলে উন্মুখ। ঠাকুর তাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘দেখছো না, ভগবান যেখানে অবতার হয়েছেন, সেখানেই সরলতা। দশরথ সরল। নন্দ – শ্রীকৃষ্ণের বাবা কত সরল। লোকে বলে, আহা কি স্বভাব, ঠিক যেন নন্দ ঘোষ।’
ভক্তরা যেন মনে মনে এবার অন্য কিছু অনুভব করছেন। বুঝতে পারছেন ঠাকুরের ইঙ্গিত। ঠাকুর কি তবে ঈঙ্গিত করছেন যে, আবার ভগবান অবতীর্ণ হয়েছেন ধরাধামে?
আরও শুনুন – Spiritual: উপবাসেই কি প্রার্থনায় সাড়া দেন ভগবান?
ঠাকুর অবশ্য এর উত্তর দিলেন না। সেই তরুণ ভক্তের মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘দেখ তোর মুখে যেন একটা কালো আবরণ পড়েছে। তুই অফিসের কাজ করিস কিনা, তাই পড়েছে। অফিসের হিসাবপত্র করতে হয়, আরও নানারকম কাজ আছে। সর্বদাই ভাবতে হয়।
বাকিটা শুনে যাও প্লে-বাটন ক্লিক করে।