কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় চলবে না তুলসিপাতা। ব্যবহার করা যাবে না সাদা ফুল। অন্য পুজোয় বাদ্য বাজানো হলেও লক্ষ্মীপুজোয় তা নৈব নৈব চ। এই লক্ষ্মীপুজোয় আর কী কী করলে রুষ্ট হন দেবী? আসুন শুনে নিই।
“নিশীথে বরদা লক্ষ্মীঃ জাগরত্তীতিভাষিণী।
তস্মৈ বিত্তং প্রযচ্ছামি অক্ষৈঃ ক্রীড়াং করোতি যঃ।”
কথিত আছে, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিনে ধন-সম্পদের দেবী লক্ষ্মী মর্তে অবতরণ করেন। এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে সকলকে আশীর্বাদ দেন। যার বাড়ির দরজা বন্ধ থাকে, তাঁর বাড়িতে লক্ষ্মী প্রবেশ করেন না। বরং ফিরে চলে যান। সেই কারণেই লক্ষ্মী পুজোয় রাতে জেগে থাকার রীতি যুগ যুগ ধরে প্রচলিত। গোটা দেশে দীপাবলির সন্ধ্যায় দীপান্বিতা লক্ষ্মীর পুজোর চল থাকলেও বাংলার ঘরে ঘরে হয়ে থাকে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। পুজো হয় ঘটে ও পটে। মূর্তি পুজোও প্রচলিত বহু গৃহস্থ বাড়িতে। তবে কিনা পুজো আপনি যেদিনই করুন, যেভাবেই করুন লক্ষ্মীপুজোয় ভুলেও এই কাজগুলি করবেন না। নচেত দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়বে না।
আরও শুনুন: ব্রহ্মচারী বলেন ‘এগিয়ে যাও’… এগোলে কী মেলে?
লক্ষ্মীর পুজোয় তুলসি পাতা যেন না থাকে। এতে অসন্তুষ্ট হন দেবী। কথিত আছে, তুলসির সঙ্গে শালগ্রাম শিলার বিবাহ হয়। শালগ্রাম শিলা নারায়ণের প্রতিভূ। যেহেতু শ্রীলক্ষ্মীও বিষ্ণুপত্নী, তাই এই পুজোয় তুলসির ব্যবহার চলে না কোনওমতে। দেবী লক্ষ্মীকে সাদা রঙের ফুল দিয়ে পুজো করা যাবে না। লক্ষ্মীপুজোয় লাল, হলুদ, গোলাপি রঙের ফুল ব্যবহার করতে পারেন বরং। শাস্ত্রবিদেরা মনে করেন, মা লক্ষ্মীকে লাল ফুল দিয়ে পুজো করলে বাড়ির অলক্ষ্মী দূর হয়। পুজোর আসনেও সাদা বা কালো রঙ থাকা একেবারে চলবে না। তার বদলে ব্যবহার করা যেতে পারে লাল, গোলাপি প্রভৃতি রঙের আসন।
শাস্ত্র মতে, লক্ষ্মী পুজোর দিনে তোলা চাল অন্য কাউকে দিতে নেই। পুজোর পর মন্দির বা ঠাকুর ঘরের দক্ষিণমুখে প্রসাদ অর্পণ করার রীতিই প্রচলিত। তবে মনে রাখতে হবে, লক্ষ্মীপুজোর প্রসাদে না বলতে নেই। অল্প হলেও মুখে তুলবেন প্রসাদ। এতে দেবীর কৃপা পাবেন। এছাড়া কোনওভাবেই যেন ঢাক-ঢোল-কাঁসর-ঘণ্টা লক্ষ্মীপুজোর সময় বাজানো না হয়। অত্যধিক শব্দ পছন্দ করেন না শ্রীলক্ষ্মী দেবী। এমনিতে সব পুজোতেই কোনও না কোনও বাদ্য বাজানোর নিয়ম রয়েছে। কিন্তু মা লক্ষ্মীর বেলায় এই নিয়ম খাটে না। পুজোয় কাঁসর ঘণ্টা বাজালে দেবীর অসন্তুষ্ট হন বলেই মনে করা হয়। এছাড়াও রীতি অনুযায়ী, লক্ষ্মীপুজো করার সময় কোনওভাবেই কালো পোশাকও পরা যাবে না। এতেও অসন্তুষ্ট হন দেবী।
আরও শুনুন: ঈশ্বরলাভে কেন দেরি হয়ে যায় মানুষের?
শাস্ত্র মতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিনে এই নিয়মগুলি সঠিক ভাবে পালন করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়। মর্তে অবতীর্ণ হয়ে যজমানকে কৃপা করেন ধন-সম্পদের দেবী। সমৃদ্ধি আসে সংসারে ও জীবনে।