চন্দ্রের পূর্ণবিকাশের তিথি পূর্ণিমা। হিন্দু ধর্মের বিশেষ এক তিথি। শ্রীকৃষ্ণের বড় প্রিয় এই পূর্ণিমা তিথি। তাই প্রতি মাসের পূর্ণিমাতেই নারায়ন পুজোর আয়োজন করেন অনেকে। তবে বাংলা বছরের শেষ পূর্ণিমা হিসেবে চৈত্র পুর্ণিমার বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। শাস্ত্রমতে এইদিন নিষ্ঠাভরে কিছু নিয়ম পালন করলে, জীবনে অবশ্যই সুখ সমৃদ্ধি বজায় থাকে। আসুন শুনে নিই।
বাংলা বছরের শেষ মাস চৈত্র। আবার হিন্দি ক্যালেণ্ডার মতে এই মাস থেকেই নতুন বছরের শুরু। তাই চৈত্রমাসের পূর্ণিমা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আবার এই তিথিই শ্রী হনুমানের আবির্ভাব তিথি। এইদিন বিশেষ কিছু নিয়ম পালন করলে প্রীত হন, শ্রী বিষ্ণু, লক্ষ্মী ও হনুমান সহ একাধিক দেবদেবী।
আরও শুনুন: স্বয়ং মহাদেব ভিক্ষা নেন তাঁর কাছে, ভক্তের অন্নের অভাব দূর করেন দেবী অন্নপূর্ণা
প্রথমেই আসা যাক শ্রীবিষ্ণুর প্রসঙ্গে। পূর্ণিমা মাত্রেই নারায়ণের প্রিয় তিথি। দোল, রাস সহ একাধিক উৎসব পালিত হয় এই তিথিতেই। এই দিনে সাধারণত নারায়ণ পুজোর আয়োজন করেন অনেকে। তবে ঘরোয়া ভাবেও শ্রী বিষ্ণুর আরাধনা করা সম্ভব। ভক্তিভরে শুদ্ধ চিত্তে নারায়নকে কল্পনা করলেই প্রীত হন তিনি। তারপর নারায়ন শিলায় তুলসী পাতা অর্পন করতে হয়। একইসঙ্গে পুজোর পর দানধ্যান করার নিয়মও রয়েছে। বিশেষ করে চৈত্র পূর্ণিমার দিন কেউ যদি অভুক্তকে অন্ন দান করেন, তবে তাঁর বিশেষ পুন্যলাভ হয়। অনেকে আবার এই দিনে চন্দ্রদেবের আরাধনাও করে থাকেন। সে ক্ষেত্রেও বিশেষ ফল মেলে।
আরও শুনুন: রাম নাম লেখা পাথরও ভাসে জলে, রামের প্রতি ভক্তিতেই জন্ম অজস্র জনশ্রুতির
তবে শুধু নারায়ণ নন। এই তিথি মা লক্ষ্মীরও খুবই প্রিয়। নারায়ণের সঙ্গেই প্রতি পূর্ণিমায় তাঁর আরাধনা করা যেতে পারে। শাস্ত্র মতে এইদিন নদীতে স্নান সেরে মা লক্ষ্মীর আরাধনা করতে হয়। পুজোয় ব্যবহার করতে হয় পদ্মফুল ও দূর্বা। দেবীর প্রিয় ফল হিসেবে নারকেল নিবেদন করেন অনেকে। বিগ্রহের সামনে প্রদীপ জ্বালানোর নিয়মও রয়েছে। অন্যদিকে এই পূর্ণিমা তিথি হনুমান জয়ন্তী হিসেবে পালন করা হয়। শাস্ত্রমতে এটিই হনুমানের আবির্ভাব তিথি। তাই হনুমানের পুজো করলেও পুন্যলাভ হয়। এইদিনে শ্রী হনুমানকে লাড্ডু নিবেদন করা যেতে পারে। অনেকে আবার পাকা কলা নিবেদন করেন হনুমানকে। তবে হনুমান চল্লিশা পাঠ করলে খুবই প্রীত হন পবননন্দন। তাই ভক্তিভরে হনুমানের সামনে চল্লিশা পাঠ করলে বিশেষ ফল মেলে। এমনই বিভিন্ন কারণে চৈত্র পূর্ণিমা খুবই পবিত্র। তাই এইদিনে শুদ্ধ চিত্তে থাকলে সারা বছর সুখে শান্তিতে কাটবে বলেই মনে করেন অনেকে।