এ দেশে গণেশ মন্দিরের কমতি নেই। তবে বিশ্বের প্রাচীনতম গনেশমূর্তিটি এ দেশের কোনও মন্দিরে নেই। রয়েছে ভারতের প্রতিবেশী দেশে। মূর্তিটি দেখতেও বেশ অন্যরকম। কী বিশেষত্ব সেই মূর্তির? তা রয়েছেই বা কোন দেশে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শাস্ত্রমতে, গণেশের পুজো দিয়েই যে কোনও শুভ কাজ শুরু হয়। তাই এ দেশের প্রায় সবর্ত্রই গণেশ মন্দির চোখে পড়ে। কিন্তু এখানকার কোনও মন্দিরই প্রাচীনতম নয়। অন্তত মূর্তির হিসাবে। বিশ্বের সবথেকে পুরনো গনেশ মূর্তিটি রয়েছে ভারতের বাইরে।
:আরও শুনুন:
শুধু মহাদেব নয়, বাণলিঙ্গে যে কোনও দেবতার পুজো সম্ভব, কী বিশেষত্ব এর?
তিনি সিদ্ধিদাতা। বিঘ্ননাশ করেন তিনি। তাই সুখ, সমৃদ্ধির কামনায় তাঁর পুজো করেন সাধারণ মানুষ। তাঁর মূর্তি মানব জীবনের নানা গুণের প্রতীক। সহনশীলতা, বিচারবুদ্ধি, বিচক্ষণতা ইত্যাদির প্রতীক হয়েই আছে গণপতির মূর্তি। তাঁর আরাধনা তাই নানাদিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবছর গণেশ চতুর্থীতে বিঘ্নহর্তা আরাধনা চলে দেশজুড়ে। মূলত মহারাষ্ট্র সহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন এলাকা গনেশ আরাধনার জন্য প্রসিদ্ধ। এছাড়া দেশজুড়ে বিভিন্ন মন্দিরে সারা বছর চলে গণেশপুজো। স্বাভাবিকভাবেই মনে হতে পারে, এর মধ্যে কোনও একটি মন্দিরে প্রাচীনতম গণেশ মূর্তিটি রয়েছে। তবে আদতে তা সত্যি নয়। বিশ্বের সবথেকে পুরনো গণেশ মূর্তি রয়েছে চিনে।
:আরও শুনুন:
শ্রাবণ মাসে নিরামিষ খাওয়ার ধুম, আদৌ সাত্ত্বিক আহার হচ্ছে তো?
গবেষকদের মতে, ষষ্ঠ শতকের পর থেকেই গণেশ দেবতা হিসেবে মান্যতা পেয়েছেন। তার গণেশ মূর্তিতে দুটি হাত দেখা যেত। দেবতা গণেশের চার হাত। চেহারার ধরণও সাধারণ দেবতাদের তুলনায় অনেকটাই আলাদা। গণেশের প্রাচীনতম মূর্তিতে সেই ছাপ স্পষ্ট ধরা পড়ে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই মূর্তি ৫৩১ খ্রিষ্টাব্দের। পাওয়া গিয়েছিল চিনের এক বুদ্ধ মন্দিরে। কীভাবে সেই মূর্তি সেখানে পৌঁছেছে, তার সঠিক ব্যাখ্যা মেলে না। মূর্তিটি এখনও চিনেই রয়েছে। তবে এই মূর্তিই যে বিশ্বের মধ্যে প্রাচীনতম, তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। বছরখানেক আগে, ভারতেই বিশেষ এক গণেশ মূর্তি খুঁজে পান জনপ্রিয় প্রত্নতাত্ত্বিক ডা. প্রকাশ কোঠারি। মূর্তিটি ছোট মোহরের আকারের। পিছনে খোদাই করা ব্রাহ্মি লিপি। ভালো করে বোঝা না গেলেও, তাঁর দাবি এই মূর্তি গণেশের। তবে তা ষষ্ঠ শতকেরও আগেকার। কারণ মূর্তিটিতে চারটির বদলে দুটি হাত রয়েছে। একইসঙ্গে অন্যান্য বৈশিষ্টও রয়েছে। যা প্রমাণ করে মূর্তিটি গণেশের হলেও বর্তমানে প্রচলিত মূর্তির মতো নয়। বয়সের হিসাবে মূর্তিটি প্রাচীন হলেও, একে দেবতা গণেশের মূর্তি হিসেবে মানতে চাননি অনেকেই। তাই চিনের মূর্তিটিকেই প্রাচীনতম গনেশমূর্তির আখ্যা দেওয়া হয়। যদিও এ দেশের কিছু মন্দির প্রাচীনত্বের দাবি করে থাকে। যেমন, রাজস্থানের প্রথমা গণেশ মন্দিরে থাকা মূর্তিটিকেই গণেশের প্রাচীনতম মূর্তি হিসেবে মনে করেন স্থানীয় ভক্তরা। তবে বিজ্ঞানের হিসাবে, চিনের মূর্তিটিই সবথেকে পুরনো গণেশ মূর্তি।