একটি বেলপাতা, আর গঙ্গাজল। এতেই তুষ্ট হন মহেশ্বর। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মন্দিরগুলিতে রাজকীয় ভাবে আয়োজন করা হয় শিবের পুজো। সেক্ষেত্রে মহাদেবকে বিশেষ ভোগও নিবেদন করা হয়। কিন্তু বাড়িতে পুজোর সময় কোন ভোগে তুষ্ট হন মহাদেব? আসুন শুনে নিই।
অল্পেতেই তুষ্ট হন মহাদেব। এ কথায় মান্যতা দেয় শাস্ত্রও। তাই বলে শিবপুজোয় বেলপাতা আর গঙ্গাজল ছাড়া আর কিছুই যে ব্যবহার করা যাবে না এমনটা নয়। বরং রাজকীয় ভাবে দেবাদিদেবের পুজোর প্রচলনও রয়েছে। জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরগুলিতে তো বটেই, তাছাড়াও দেশের বিভিন্ন শিব মন্দিরে মহাদেবের রুদ্রাভিষেক করা হয়। সে সময় অন্যান্য দেবতাদের মতোই ষড়োশোপচারে পুজোর ব্যবস্থা করা হয় মহাদেবের। নিবেদন করা হয় রাজকীয় ভোগও।
আরও শুনুন: শ্রাবণপূর্ণিমায় রয়েছে ভাগ্য বদলের যোগ, এদিন ভুলেও করবেন না কোন কাজ?
বেনারস থেকে শুরু করে সোমনাথ, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে মহাদেবের একাধিক বিখ্যাত মন্দির। বছরভর সেইসব মন্দিরে ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। তবে শ্রাবণ মাসে এই মন্দিরগুলিতে ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত। শাস্ত্রমতে শ্রাবণ শিবের প্রিয় মাস। এইসময় শিবভক্তরা বাঁক নিয়ে বাবার মাথায় জল ঢালতে যান। তবে বাড়িতেও প্রতি সোমবার শিবের পুজো করা বিশেষ ফলদায়ক। সেক্ষেত্রে মূলত বেলপাতা আর গঙ্গাজলই যথেষ্ট। তবে কেউ চাইলে আরও কিছু উপকরণ শিবের পুজোয় ব্যবহার করতে পারেন। স্রেফ গঙ্গাজল নয়, সেইসঙ্গে ব্যবহার করা যেতে পারে দুধ, দই, ঘি ও মধু। এইসব কিছু দিয়েই শিব লিঙ্গ স্নান করানো যেতে পারে। তারপর চন্দন বা অষ্টগন্ধা দিয়ে শিবলিঙ্গ সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। যেকোনও ফুল দিয়েই মহাদেবের পুজো করা যেতে পারে। তুবে আকন্দ, ধুতরা বা নীল অপরাজিতা ফুলে বিশেষ তুষ্ট হন মহাদেব। সাজানো সম্পূর্ণ হলে সুগন্ধী জ্বালানো যেতে পারে। ধূপ ধুনোর গন্ধে তুষ্ট হন মহেশ্বর। এরপর প্রস্তুত করতে হয় বিশেষ ভোগ।
আরও শুনুন: শিবলিঙ্গে জল ঢালার সঠিক নিয়ম জানেন তো? না মানলে রুষ্ট হবেন স্বয়ং মহেশ্বর
যিনি বেলপাতা আর গঙ্গাজলেই তুষ্ট হন, তাঁর ভোগের আয়োজনও যে সামান্যই হবে তা বলাই বাহুল্য। শাস্ত্রমতে মহাদেবের বিশেষ প্রিয় সিদ্ধি আর ভাঙ। মহাদেবের ভোগে অবশ্যই এই দুই জিনিস রাখা উচিত। তবে এ তো গেল নেশার দ্রব্যের কথা। খাবার হিসেবে মহাদেবের প্রিয় দ্রব্য মিষ্টি। যে কোনও নিরামিষ পদই মহাদেবের জন্য প্রস্তুত করা যেতে পারে। অনেকেই লুচি, ছোলার ডাল, সুজির পায়েস মহাদেবকে ভোগ হিসেবে অর্পণ করেন। সেইসঙ্গে ক্ষীর দিলেও বিশেষ তুষ্ট হন মহেশ্বর। এছাড়া মিষ্টি পোলাও নিবেদন করা যেতে পারে মহেশ্বরকে। তবে কথিত আছে, মহাদেবের সবথেকে প্রিয় মিছরি। মহাদেবের ভোগে এই মিষ্টি দিলে বিশেষ তৃপ্ত হন তিনি। তবে সবক্ষেত্রেই খেয়াল রাখতে হবে, ভোগ নিবেদনের সময় তার উপর একটি বেলপাতা দিতে হবে। তবেই সম্পূর্ণভাবে নিবেদন সম্পন্ন হবে।