শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি। গোটা দেশ জুড়ে পালিত হবে জন্মাষ্টমী উৎসব। তবে চলতি বছরের অষ্টমী তিথিটি বিশেষ। জ্যোতিষমতে এই দিনেই তৈরি হবে এমন এক শুভ যোগ, যা বদলে দেবে অনেকের ভাগ্য। ঠিক কখন পুজোয় বসবেন এবারের জন্মাষ্টমীতে? আসুন শুনে নিই।
ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি কংসরাজের কারাগারে মাতা দেবকীর কোল আলো করে জন্ম নেন শিশু শ্রীকৃষ্ণ। দেবকী ও বসুদেবের অষ্টম গর্ভের সন্তান। জন্মলগ্ন থেকেই যিনি সম্মুখীন হয়েছেন নানান ভয়ানক বিপদের। তবে কংসের হাত থেকে সন্তানকে রক্ষা করার জন্য জন্মের পরই শিশু কৃষ্ণকে নিয়ে বৃন্দাবনের গোকুল গ্রামে চলে যান বসুদেব। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে যমুনা নদী পার করার সময় শিশু কৃষ্ণের উপর ছাতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল স্বয়ং নাগরাজ বাসুকি। সবার অগোচরেই নন্দরাজের ঘরে কৃষ্ণকে রেখে এসেছিলেন বসুদেব। তাই গোকুলবাসীর কাছে কৃষ্ণ ছিলেন যশোদা ও নন্দের পুত্র। ছোটবেলায় তাঁকে সবাই আদর করে গোপাল বলে ডাকত। তাই ঘরে ঘরে এই ভাদ্র মাসের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণ বা গোপাল পূজার আয়োজন করা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীকে কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী এবং শ্রীজয়ন্তীও বলা হয়।
আরও শুনুন: শ্রাবণপূর্ণিমায় রয়েছে ভাগ্য বদলের যোগ, এদিন ভুলেও করবেন না কোন কাজ?
কথিত আছে, এইদিন ভক্তিভরে গোপাল পুজোর আয়োজন করলে বিশেষ ফল মেলে। অনেকেই বাড়ির গোপালকে সন্তানের মতো স্নেহ করেন। আদর করে রোজ দু-বেলা সেবা করেন গোপাল বিগ্রহের। আর জন্মাষ্টমীর দিন সেই উৎসব হয় দেখার মতো। এইদিন গোপালকে বিশেষভাবে স্নান করানোর রেওয়াজ রয়েছে। দেশের বিভিন্ন কৃষ্ণ মন্দিরেও আয়োজন করা হয় বিশেষ পুজোর। বিগ্রহের সামনে সাজিয়ে রাখা হয় একাধিক পদ। মালপোয়া, নাড়ু, ক্ষীর, মিষ্টি সব কিছুই দেওয়া হয় গোপালের ভোগ হিসেবে। সেইসঙ্গে তালের বড়া অবশ্যই থাকে। মরশুমি ফল হিসেবে তালের অন্যান্য পদও দেওয়া হয়। তবে অন্যান্য বছরের মতো এবারের জন্মাষ্টমী তিথি পালন করলে চলবে না। অনেক জায়গাতেই এবার জন্মাষ্টমী হিসেবে দুটি দিনের উল্লেখ রয়েছে। তাই সঠিক ভাবে কোন দিন বা কোন সময় পুজোয় বসতে হবে, তা আগে থেকে জেনে নেওয়া উচিত।
আরও শুনুন: শিবলিঙ্গে জল ঢালার সঠিক নিয়ম জানেন তো? না মানলে রুষ্ট হবেন স্বয়ং মহেশ্বর
পঞ্জিকামতে বাংলার ১৫ ভাদ্র (৬ সেপ্টেম্বর) অর্থাৎ বুধবার শুরু হচ্ছে সপ্তমী তিথি। তবে এইদিন দুপুর অবধি কৃত্তিকা নক্ষত্রের যোগ বর্তমান থাকবে। তারপরে রোহিণী নক্ষত্র বিরাজ করবে সারা রাত ধরে। পরেরদিন, ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পড়বে অষ্টমী। তাই বৃহস্পতিবার জন্মাষ্টমী পালনের জন্য উপযুক্ত। যদিও এই নিয়ে মতবিরোধ থাকতেই পার। তবে বৃহস্পতিবার কেউ যদি জন্মাষ্টমী ব্রত পালন করেন তাহলে শুভাশুভ ফল পেতে পারেন। কারণ এই সময় বহুবছর পর একসঙ্গে রোহিণী ও কৃত্তিকা নক্ষত্রের যোগ ধরা পড়েছে। শোনা যায়, স্বয়ং কৃষ্ণের জন্মের সময়ও একই যোগ দেখা গিয়েছিল। এছাড়া জ্যোতিষমতে এইদিন জয়ন্তীযোগ দেখা যাবে। যা বিশেষ শুভ সকলের জন্যই। তাই এইদিন নিয়ম মেনে নিষ্ঠাভরে জন্মাষ্টমী পালন করলে হতে পারে বিশেষ লাভ।