রামভক্ত হনুমান। তাঁর স্মরণ নিলে কাটে সমস্ত বিপদ। এমনকি গ্রহরাজ শনিও হনুমানকে সমঝে চলেন। বলা হয়, প্রতি শনিবার হনুমানের পুজো করলে শনির কোপ থেকে রক্ষা মেলে। আর কী সমস্যার সমাধান হয় হনুমানের পুজো করলে? আসুন শুনে নিই।
পবনপুত্র সংকটমোচন হনুমান। নামেই প্রকাশ মেলে তাঁর মাহাত্ম্য। ভক্তকে যে কোনও বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারেন বজরংবলি। বলা হয়, প্রতি শনি ও মঙ্গলবার হনুমানের পুজো করলে বিশেষ ফল মেলে। আর এই দুদিন কেউ যদি হনুমান চল্লিশা পাঠ করেন, তাহলে যাবতীয় দুঃখ কষ্ট দূর হতে বাধ্য।
আরও শুনুন: হনুমান চালিশার শক্তি টের পেয়েছিলেন মোগল সম্রাট আকবরও, জানেন সে-কাহিনি?
পুরাণে যে আট চিরঞ্জীবীর উল্লেখ মেলে, হনুমান তাঁদের মধ্যে অন্যতম। মনে করা হয়, তিনি এখনও কোনও নির্জন স্থানে একমনে রামনাম জপ করে চলেছেন অবিরাম। অনেকে দাবিও করেন হনুমানকে স্বচক্ষে দেখতে পেয়েছেন। তবে স্বচক্ষে না দেখলেও, ঠিকমতো হনুমানের নাম করলে যে কোনও বিপদ থেকে মুক্তি মেলে। সে প্রমাণ পেয়েছিলেন খোদ মোঘল সম্রাট আকবরও। বলা হয়, ঠিকমতো হনুমানের পুজো করলে কাটে অর্থকষ্ট।
তবে শুধুমাত্র হনুমানের পুজো করলে চলবে না। একইসঙ্গে রাম নামও জপতে হবে। প্রভু রামের পুজো হলেই অধিক তুষ্ট হন সংকটমোচন। তাই যে কোনও হনুমান মন্দিরেই রামের মূর্তি বা ছবি অবশ্যই চোখে পড়ে। আবার রাম মন্দিরেও থাকে হনুমানের মূর্তি। অযোধ্যার মন্দিরও এর ব্যতিক্রম হবে না। মন্দির চত্বরে ইতিমধ্যেই স্থাপিত হয়েছে হনুমানের মূর্তি। তবে হনুমান পুজোয় বিশেষভাবে যে ফল মেলে, তা হল শনিদেবের দৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়া।
আরও শুনুন: হনুমান পুজোর দায়িত্ব সামলান মুসলিমরা, কোথায় রয়েছে এমন মন্দির?
আসলে শনিদেব সূর্যপুত্র। আবার হনুমান সূর্যের শিষ্য। কথিত আছে, স্বয়ং সূর্যদেব প্রিয় শিষ্য হনুমানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন শনিদেবের অহংকার চূর্ণ করার। গুরুর কথামতো সেই দায়িত্ব অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন হনুমান। পুরাণের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, শনিদেব এতটুকু অন্যায় সহ্য করেন না। কেউ কোনও ভুল করলেই তাঁকে শাস্তি দিতে উদ্যত হন। সাধারণ মানুষ তো বটেই, দেবতারাও শনির দৃষ্ট থেকে রক্ষা পেতেন না। আর এই নিয়েই শনিদেবের রীতিমতো অহংকার ছিল বলে শোনা যায়। হনুমান প্রথমে শনিদেবকে তিনি বোঝান। তিনি বলেন, সকলের মধ্যেই কিছু না কিছু খুঁত রয়েছে। তাই নিজেকে নিয়ে অহংকার করা একেবারেই অনুচিত। কিন্তু যতই বোঝানো হোক, সেকথা মানতেই চান না শনিদেব। অগত্যা তাঁর সামনে নিজের শক্তি প্রদর্শন করতে বাধ্য হন হনুমান। প্রথমে লড়াই করলেও, একসময় নিজের ভুল বুঝতে পারেন গ্রহরাজ শনিও। এরপর তিনি হনুমানকে কথা দেন, যে বা যারা নিষ্ঠাভরে হনুমানের পুজো করবে, তাঁকে শনিদেব কিচ্ছুটি করবেন না। তারপর থেকেই এমন ধারণা প্রচলিত হয়, ভক্তিভরে হনুমানের পুজো করলে শনিদেবের কোপ থেকে রক্ষা মেলে।