দিনের বিভিন্ন সময় আলাদা আলাদা রূপে সাজানো হয় বিগ্রহকে। দেশের অধিকাংশ মন্দিরেই এমনটা দেখা যায়। কিন্তু কখনও শুনেছেন মন্দিরের আরাধ্য নিজে থেকে রূপ পরিবর্তন করছেন। তাও দিনে তিনবার। কোথায় রয়েছে এমন মন্দির? আসুন শুনে নিই।
কোথাও হাওয়ার উলটো দিকে পতাকা ওড়ে, কোথাও আবার নিজে থেকে উচ্চতা বাড়ে বিগ্রহের। দেশের বিভিন্ন মন্দির ঘিরে রয়েছে আশ্চর্য সব কাহিনি। কিছুক্ষেত্রে তা সত্যিও বটে। তেমনই এক আশ্চর্য মন্দির রয়েছে নাগপুরে। এই মন্দিরের আরাধ্যা নিজে থেকে রূপ পরিবর্তন করেন। তাও দিনে তিন তিনবার।
আরও শুনুন: সন্তানলাভ কিংবা পরীক্ষায় সাফল্য, শ্রাবণের শেষ সোমবার এই কাজ করলে বদলাবে ভাগ্য
কথা বলছি নাগপুরের প্রসিদ্ধ কোরাডি মন্দির সম্পর্কে। মন্দিরের প্রধান আরাধ্যা দেবী জগদম্বা। যা আসলে দেবী মহামায়ার এক বিশেষ রূপ। তবে অনেকেই মনে করেন এই মন্দিরে স্বয়ং মহালক্ষ্মী বিরাজমানা। প্রতিদিন দূরদূরান্তের ভক্তরা মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। তবে নবরাত্রির সময় ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। নাগপুর শহর থেকে মাত্র ১৫ কিমি দূরে অবস্থিত কোরাডি অঞ্চলে অবস্থিত এই মন্দির। স্থানীয় বিশ্বাস এই মন্দিরে পুজো দিলে জীবনে টাকার অভাব থাকে না। সেইসঙ্গে যাবতীয় সমস্যার থেকেও মুক্তি মেলে। মন্দিরের গর্ভগৃহে অধিষ্ঠাত্রী দেবী জগদম্বা। সাধারণ দেবী মূর্তি তুলনায় এই বিগ্রহ কিছুটা আলাদা। দেবীর মুখবায়ব বেশ বড়। তবে সেটি আশ্চর্যের বিষয় নয়। আশ্চর্য লুকিয়ে আছে দেবীর রূপপরিবর্তন ঘটনাটি ঘিরে। এমনিতে যে কোনও মন্দিরেই বিগ্রহের পোশাক পরিবর্তন করা হয়। সেক্ষেত্রে দিনের বিভিন্ন সময় বিগ্রহের রূপ আলাদা হয়। তবে জগদম্বা মন্দিরে আপনা থেকেই বদলাতে থাকে দেবীর রূপ। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এই দেবী দিনে তিনবার নিজে থেকে রূপ পরিবর্তন করেন। বিগ্রহের মুখেই স্পষ্ট ফুটে ওঠে সেই ছাপ। দিনের শুরুতে বিগ্রহ দেখে মনে হবে, কোনও বালিকা বসে রয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলাতে থাকে সেই চেহারা। দুপুরে তিনি হয়ে ওঠেন পূর্ণ যুবতী। আর সন্ধ্যে বেলা তাঁকে দেখে মনে হবে, কোনও বয়স্কা মহিলা। এতই আশ্চর্য এবং সুক্ষ্মভাবে এই পরিবর্তন হয়, যে খালি চোখে বোঝা প্রায় অসম্ভব। তবে কেউ যদি দিনের বিভিন্ন সময় দেবী দর্শনে যান, তাহলে পরিষ্কার বুঝতে পারবেন রূপ পরিবর্তনের বিষয়টা।
আরও শুনুন: সামান্য আয়োজনেই হন তুষ্ট, শ্রাবণের সোমবার মহাদেবকে কোন ভোগ দেবেন?
মনে করা হয়, দেবীর এই তিন রূপ কেউ যদি একইদিনে দর্শন করতে পারেন, তাহলে তাঁর জীবনে আর কোনও দুঃখ থাকে না। তবে চাইলেই সে কাজ করা সম্ভব হয় না। স্থানীয় বিশ্বাস দেবীর ইচ্ছা ছাড়া, এমনটা প্রায় অসম্ভব। অনেকেই চেষ্টা করেও এমনটা করতে পারেন না। তবু এই বিশেষ দর্শনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিদিনই মন্দিরে ভিড় জমান ভক্তরা। পাশাপাশি নবরাত্রির সময় মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। সে সময় মন্দির সাজানোও হয় বিশেষভাবে। তবে এমন নিজে থেকে বিগ্রহের রূপ পরিবর্তনের ঘটনা নজিরবিহীন।