যে কোনও শুভ কাজের সূচনায় ফাটানো হয় নারকেল। এ প্রথা দীর্ঘদিনের। কিন্তু কেন নারকেলই ফাটানো হয়? অন্য কোনও ফল ফাটালে কি একই ফল মিলত না? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলেই আমরা জানব, আসলে এই প্রথার নেপথ্যে আছে কিছু নির্দিষ্ট কারণ। কী সেগুলো? আসুন শুনে নিই।
নারকেল ফাটিয়ে শুভকাজের সূচনা। ভারতের প্রায় সর্বত্রই কমবেশি এই প্রথা আছে। পুজোর ডালিতেও থাকে নারকেল। যা উৎসর্গ করা হয় দেবতাকে। কিন্তু, কেন নারকেল ফাটানো হয় শুভ কাজে? আসলে ভারতীয় সব প্রথার পিছনেই আছে কিছু নির্দিষ্ট কারণ। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নেই।
আরও শুনুন: ধনরত্নের বিনিময়ে কি মেলে ভগবানের ভালবাসা?
বলা হয়, ঈশ্বরের কাছে যখন যেতে হয়, তখন সব অহংকার বিসর্জন দিয়েই যেতে হয়। সামান্যতম অহং থাকলেও, ঈশ্বরের কাছে আসা পূর্ণতা পায় না। এই ভাবনার বাহ্যিক রূপ হিসেবে নানা আচারের উৎপত্তি হয়েছে। যেমন, খালি পায়ে মন্দিরে প্রবেশ। বা, সঙ্গের টাকা-পয়সা বা মূল্যবান জিনিস সরিয়ে রেখে মন্দিরে দেবতার মূর্তির সামনে দাঁড়ানো। কেউ কেউ বলেন, এই ভাবনারই আর এক প্রকাশ নারকেল ফাটানোর মধ্যেও দেখা যায়। ফল হিসেবে নারকেলের বাইরেটা শক্ত। কিন্তু ভিতরটা শাঁস-জলে পরিপূর্ণ।
আরও শুনুন: স্বর্গের সিংহাসন পেয়েও কেন পতন হয়েছিল রাজা নহুষের?
অর্থাৎ, এমন একটি ফল যার বাইরের আবরণটা ভেদ করতে পারলে ভিতরের কোমলতাকে স্পর্শ করা যায়। ঠিক একই কথা মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অহংকারের শক্ত আবরণটিকে যদি ভেঙে ফেলা যায়, তবেই ভিতরে মানবিকতার কোমল রূপের সন্ধান মিলবে। এই ভাবনাটিই প্রথার মধ্যে দিয়ে ধরা পড়েছে। নারকেল ফাটানো আসলে অহং নাশের প্রতীক। এই প্রথা শুধু হাতেকলমে পালন করলেই হয় না, এর অন্তর্নিহিত অর্থটিও তাই আমাদের জানা জরুরি। ঈশ্বরের কাছে যখন নিজেকে সমর্পণ করি তখন এভাবেই বাইরের সকল কঠিন আবরণ মোচন করে ভিতরের আমিটিকে প্রকাশ করতে হয়।
বাকি অংশ শুনে নিন।