ধর্মসাধনায় ঈশ্বর যে পথের নির্দেশ দেন, তাই-ই মান্য করতে হয়। তাকে প্রাধান্য না দিয়ে যদি নিজেকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, তবে সেই অহং কেবলই অশান্তি বয়ে আনে। কী অবস্থা হয় তখন? আসুন, আমরা শুনে নিই ঘণ্টাকর্ণের গল্প।
একবার এক ব্যক্তি মন দিয়ে শিবের সাধনা করছিলেন। নিবিষ্ট তাঁর চিত্ত। একাগ্র সাধনায় তিনি শিবের মন জয় করলেন। শিব তাঁকে দেখা দিয়ে বললেন, আমি তোমার সাধনায় সন্তুষ্ট হয়েছি। তুমি আমার সাধনা করেছ, সে তো খুব ভালো কথা। কিন্তু একই সঙ্গে তোমার মনে হরি অর্থাৎ নারায়ণের প্রতি যে বিদ্বেষ আছে, তা পরিত্যাগ করো।
আরও শুনুন: কার্তিক মাসে কেন জ্বালানো হয় আকাশপ্রদীপ?
এই বলে মহেশ্বর চলে গেলেন। ভক্ত তাঁর আরাধ্যের সব কথা শুনলেন বটে, কিন্তু কাজের কাজ কিছু করলেন না। তিনি আরও কঠোর সাধনায় মন দিলেন। এবারও শিব সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে দিলেন। তবে একটু অন্য মূর্তিতে। এবার তিনি ধরা দিলেন হরিহর রূপে। অর্থাৎ একই অঙ্গে মহাদেব এবং নারায়ণ। ভক্ত মন দিয়ে আনন্দের সঙ্গে তাঁর আরাধ্যের পা ধুইয়ে দিলেন। কিন্তু হরির চরণের দিকে তাকালেনই না। এবার মহাদেব তাঁর ভক্তকে বললেন, তিনি যা কামনা করছেন তা পূর্ণ হবে। কিন্তু এই যে হরির প্রতি তাঁর বিদ্বেষ, এর জন্য তাঁকে কষ্টও পেতে হবে।
আরও শুনুন: Spiritual: বিদ্বেষ পেরিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মিলনের স্বপ্ন দেখেছিলেন সন্ত কবীর
ভক্ত সাত-পাঁচ ভেবে ঠিক করলেন, এই গ্রাম ছেড়ে অন্য গ্রামে চলে যাই, তাহলে কষ্ট থেকে রেহাই মিলবে। কিন্তু হল ঠিক উলটো। সেখানে কী করে যেন সবাই জেনে গেল যে ওই ব্যক্তি হরিবিদ্বেষী। তাই গ্রামের লোকেরা তাঁকে দেখলেই হরি হরি করে হাততালি দিয়ে তার পিছনে ঘুরতে লাগল। শেষমেশ হরির নাম শুনবেন না বলে, লোকটি দুই কানে দুই ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখত। গ্রামের লোকেরা তখন তাকে ঘণ্টাকর্ণ বলে খেপাতে শুরু করল। শেষমেশ সেই শিবভক্ত বুঝলেন, সত্যিই অশান্তির শেষ নেই। যা তাঁর ইষ্টদেবতা তাঁকে বলেছিলেন, তা করলে এই ঝামেলা তাঁকে ভোগ করত হত না।
বাকি অংশ শুনে নিন।