সংসারজীবনে বদ্ধ থাকতে থাকতে, আমাদের মনে হয়, কত না পাপ করে ফেলেছি! সেই পাপ দূর করতে আমরা পুণ্যের সন্ধান করি। সেই নিমিত্ত কত না কাজ করি! কিন্তু এই পাপ-পুণ্য বলতে আমরা যা বুঝি, তা কি সত্যিই আছে না নেই? ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ একবার এ বিষয়ে উপদেশ দিয়েছিলেন ভক্তকে।
সংসারী মানুষ একটু পুণ্যের খোঁজ করেন। তার চারিদিকের হাজারও বন্ধন মাঝে খুঁজে বেড়ান মুক্তির পথ। যে পথ ধরে তিনি ঈশ্বরের কাছে তাঁর মনপ্রাণ অর্পণ করতে পারবেন। কিন্তু সে পথের সন্ধান পাওয়া তো সোজা নয়। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণই বলেছিলেন, সংসারে থেকে সাধন করা বড় কঠিন। অনেক ব্যাঘাত। রোগ শোক দারিদ্র্য, আবার স্ত্রীর সঙ্গে মিল নাই… ছেলে অবাধ্য গোঁয়ার।
আরও শুনুন: Spiritual: গৃহস্থের চঞ্চল মন শান্ত হবে কী করে? উপদেশ দিয়েছিলেন ঠাকুর ও শ্রীশ্রীমা সারদা
সংসারী মানুষ মাত্রই জানেন, ঠাকুরের এ কথা ঠিক কতখানি সত্যি। নানা প্রতিবন্ধকতা সামনে এসে পথ আটকে দাঁড়ায়। তাই মানুষ একটু পুণ্যের খোঁজ করেন। ঠাকুর বিধান দেন, নির্জনে গিয়ে ঈশ্বরের সাধনা করো। আর সাধুসঙ্গ করো। ভক্ত প্রশ্ন করেন, সাধু চিনব কেমন করে? ঠাকুর উত্তর দেন, যাঁর মন প্রাণ অন্তরাত্মা ঈশ্বরে গত হয়েছে, তিনিই সাধু। যিনি কামিনীকাঞ্চনত্যাগী, তিনিই সাধু। যিনি সাধু তিনি স্ত্রীলোককে ঐহিক চক্ষে দেখেন না, সর্বদাই তাঁদের অন্তরে থাকেন, – যদি স্ত্রীলোকের কাছে আসেন, তাকে মাতৃবৎ দেখেন ও পূজা করেন। সাধু সর্বদা ঈশ্বরচিন্তা করেন, ঈশ্বরীয় কথা বই কন না। আর সর্বভূতে ঈশ্বর আছেন জেনে তাঁদের সেবা করেন। মোটামুটি এইগুলিই হল সাধুর লক্ষ্মণ।
আরও শুনুন: Spiritual: পরলোকে কি পাপের শাস্তি হয়! এমন চিন্তা মনে এলে কী করা উচিত?
এমন সাধুর যদি সঙ্গ করা যায়, আর সংসার থেকে খানিক দূরে সরে গিয়ে যদি ঈশ্বরের উপাসনা করা হয়, তবেই গৃহস্থের সাধন সম্পূর্ণ হয়। ভক্তমনে তখন প্রশ্ন জাগে, তবে কি পাপ-পুণ্য বলে কিছু নেই?
এ বড় জটিল প্রশ্ন। বহু সংসারী মানুষের মনের প্রশ্ন। এর উত্তর সন্ধান করা তাই জরুরি। শ্রীরামকৃষ্ণ অবতারবরিষ্ঠ। তিনি তাই আমাদের মনের সমস্ত জটিল গিটগুলিকে আমাদের সামনেই সহজ করে খুলে দেন। যেমন, এই পাপ-পুণ্যের প্রসঙ্গে তিনি সেই ভক্তকে বুঝিয়ে যা বলেছিলেন, তা সকল সংসারীরই জানা উচিত। ঠাকুর বলেছিলেন, পাপ-পুণ্য আছে আবার নেই। তিনি যদি অহংতত্ত্ব রেখে দেন, তাহলে ভেদবুদ্ধিও রেখে দেন। পাপ-পুণ্য জ্ঞান-ও রেখে দেন। তিনি দু-একজনেতে অহংকার একেবারে মুছে ফেলেন। তারা পাপ-পুণ্য ভালোমন্দের পার হয়ে যায়।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।