ঈশ্বরলাভই জীবনের উদ্দেশ্য। এদিকে কর্ম থেকে দূরে থাকার তো জো নেই। কেউ বলে কর্ম করো। কেউ বলে ঈশ্বরসাধনা করো। এই দুইয়ের মেলবন্ধন কীভাবে হয়?
ঠাকুর একবার তাঁর এক ভক্তকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তো বিলেত গিয়েছিলে। সেখানে কী দেখলে সব বলো। ভক্ত জানালেন, ঠাকুর যাকে কাঞ্চন বলেন, সেখানে অর্থাৎ বিলেতে তারই পূজা। তবে কেউ কেউ অনাসক্ত লোকও আছে। তবে আগাগোড়া রজোগুণের কাণ্ড। ঠাকুর বলেন, বিষয়কর্মে আসক্তি শুধু যে বিলাতে আছে, এমন নয়। সব জায়গায় আছে। তবে কি জানো? কর্মকাণ্ড হচ্ছে আদিকাণ্ড। সত্ত্বগুণ অর্থাৎ ভক্তি, বিবেক, বৈরাগ্য, দয়া এইসব না হলে ঈশ্বরকে পাওয়া যাবে না। রজোগুণে কাজের আড়ম্বর বেশি হয়। তাই রজোগুণ থেকে তমোগুণ এসে পড়ে। বেশি কাজে জড়ালেই ঈশ্বরকে ভুলিয়ে দেয়। আর কামিনী-কাঞ্চনে আসক্তি বাড়ে। তবে ঠাকুরের মত, কর্ম একেবারে ত্যাগ করার জো নেই। কেননা মানুষের প্রকৃতিই তাকে দিয়ে কর্ম করিয়ে নেয়। ঠাকুর তাই বলেন, অনাসক্ত হয়ে কর্ম কর। অর্থাৎ, কর্মের ফলের আকাঙ্ক্ষা করবে না। যেমন জপতপ করছো, কিন্তু লোকমান্য হবার কিংবা পুণ্য করবার জন্য নয়।
আরও শুনুন: Spiritual: ‘লোহার তরোয়াল সোনার হলে আর কারও অনিষ্ট করে না’
ঠাকুর বারবার করে বলেন তাই, ঈশ্বরলাভই জীবনের উদ্দেশ্য। ঠাকুর তখন শোনান এক কাঠুরের গল্প। একজন কাঠুরে বনে কাঠ কাটতে গিয়েছিল। হঠাৎ এক ব্রহ্মচারীর সঙ্গে দেখা হল। ব্রহ্মচারী বললেন, ওহে এগিয়ে পড়ো। কাঠুরে সে কথা শুনে ফিরে এল প্রথমে। তারপর ভাবতে লাগল, কেন ব্রহ্মচারী তাকে এগিয়ে যেতে বলল? একদিন সে বনের মধ্যে এগিয়ে গিয়ে চন্দনকাঠের দেখা পেল। ভারি খুশি হল কাঠুরে। তারপর তার মনে হল, আর একটু এগিয়ে যাই, ব্রহ্মচারী তো এগিয়ে যেতেই বলেছিলেন। আর একটু এগোতেই দেখা পেল রূপোর খনির। তখন তার মনে হল, আরও একটু এগোই বরং। তখন দেখা মিলল সোনার খনির। তাতেও সে থামল না। ভাবল, আর একটু এগোই। এগোতে এগোতে সে একদিন গিয়ে দেখতে পেল হিরে মাণিক রাশি রাশি পড়ে আছে। সে যেন কুবেরে ঐশ্বর্য।
শুনে নিন বাকি অংশ।