শুনে নিন সুবোধ সরকার – এর লেখা ও পাঠ করা কবিতা মেয়েরা আজও ডাকাত ভালবাসে
দিঘা যেমন ওপরে ওঠে, দিঘা নামেও নিচে
কেউ তো আর সারা জীবন থাকে না সি-বিচে।
সুর যেমন তারায় ওঠে তেমনি নামে খাদে
কেউ জানে না, কে চলে যাবে এক মিনিট বাদে।
ভাগ্য ওঠে ভাগ্য নামে ভাগ্য ঈগল পাখি
ঠোঁট পেয়েছি মুখ পেয়েছি আসল কাজ-ই বাকি।
মানুষ যেমন ওপরে ওঠে তেমনি নামে অতলে
ওঠার সময় ডাকে না এসো, নামার সময় বলে।
মানুষ যেমন ওপরে ওঠে তেমনি নামে নীচে
দিঘা না গিয়ে কেউ কি যায় পুরীর সি-বিচে?
চিরন্তনী কাফে
সমকালের বাতাস এলে কাঁপে।
এখানে কেউ চিরহরিৎ নয়
সবার আছে ভয়।
সবার আছে সাম্প্রতিক
বসন্ত আর বর্ষা তাকে দু’ভাগ করে নিক।
কেউ কি ছিল চিরকালীন?
থাকত যদি,
কেন এখানে নালা?
যেখানে ছিল সরস্বতী নদী।
চিরন্তনী মেয়ে
কেন রয়েছ আমার দিকে চেয়ে?
সব বাড়িতে চোর ঢোকে না
গহনা পড়ে থাকে
কেউ জানে না ওপরঅলা
কাকে চেয়ারে রাখে।
কাকে কখন সরায়?
বিপ্লবী কী ফুলের বনে সুগন্ধকে ডরায়?
সব বাড়িতে চোর ঢোকে না
ডাকাত ঢোকে রাতে
ডাকাত কী আর
গান শোনাতে আসে?
আমরা চোর ভালবাসিনা
মেয়েরা কিন্তু ডাকাত ভালবাসে।
দিন ফুরল বুক জুড়ল
এবার একটু বসি
দিনের শেষে আশকারা দেয় ডুবন্ত উর্বশী।
ডুবন্ত চুল হাতে জড়িয়ে
তক্ষুনি তাকে তুলি
উঠেই বলে ফিরিয়ে দাও যতটা ছিল গোধূলি।
গোধূলি আমি ফিরিয়ে দেব
আমি এতটা দোষী?
সারা জীবন আশকারা দেয় ডুবন্ত ঊর্বশী।
দিলেই হল, যাব?
নিজেই আমি নিজের নেশা নিজেই সামলাব।
ডাকো বসন্তকে
কী করে এত স্পর্ধা হয় তোমার ফুল ফোটায়?
ডাকো দিগন্তকে
কার হুকুমে তোমার পাতা বৃষ্টি দিয়ে মোছায়?
ডাকো অনন্তকে
তোমাকে নিয়ে কল্পনা তার থামিয়ে দেব বোঁটায়।
হ-য়ে হসন্তকে
ছেড়ে দিলাম সূর্য আজ ঠিক সময়ে ওঠায়।
আমাকে আর নিয়ে যেও না সে-কার্নিসে
আমাকে মেরে ফেল
আমাকে মারো দুপুর আর বিকেল দিয়ে পিষে
আমাকে মেরে ফেল
আমাকে আর নিয়ে যেও না অকুস্থলে
আমাকে মেরে ফেল
আমাকে আর নিয়ে যেও না বহ্নিজলে
আমাকে মেরে ফেল।
কী করে আমি সহ্য করি তোমার ভালবাসা
আমাকে মেরে বাঁচাও তুমি, পিপাসা।
লেখা: সুবোধ সরকার
পাঠ: সুবোধ সরকার
আবহ: শঙ্খ বিশ্বাস