এবার থেকে পর্ন সাইটে ঢুকলে গ্রেপ্তার হতে পারে যে কেউ। দিতে হতে পারে মোটা টাকা জরিমানা। কিন্তু কেন? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
পর্ন সাইট চেক করলে আসতে পারে গ্রেপ্তারির শমন। ব্যক্তিগত অভ্যাসে অথবা নিছক সময় কাটানোর জন্য চোখ রাখছেন নীল ছবির সাইটে। কিন্তু সাবধান! ঘটতে পারে বিপত্তি! এই অছিলাতেই হাতে পড়তে পারে হাতকড়া। চলতে পারে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ওপর নজরদারি। আর তার পোশাকি নাম ডিজিটাল গ্রেপ্তার। কী এই গ্রেপ্তারি? ঘিরে ধরবে না পুলিশ, হাতে পড়বে না বেড়ি। এই গ্রেপ্তারির খেসারতে কেবল দিতে হবে মোটা টাকার জরিমানা। আর তাতেই মিলবে মুক্তি। কিন্তু এ কি আদৌ প্রশাসনিক পদক্ষেপ, নাকি আরও ভয়ানক কোনও ফাঁদ!
আরও শুনুন: মাত্র ১ পয়সার জন্য বেঁচে গেল ১০ হাজার টাকা, বানচাল ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ছক
অভ্যাসে হোক বা কৌতূহলে, বরাবরই এই ধরনের সাইটে ভিড়ের কমতি নেই। তবে পর্ন সাইটে নিত্য যাতায়াত থাকলে এবার একটু সাবধান হবার সময় এসেছে। কারণ শোনা যাচ্ছে, পর্ন দেখাকালীন যখন-তখন আসতে পারে পুলিশের নোটিশ। তার সঙ্গে আছে মোটা টাকার জরিমানা দেওয়ার লিঙ্ক। লিঙ্কে ক্লিক করে টাকা পাঠালেই মিলবে মুক্তি। অন্যথায় বাড়িতে এসে পৌঁছবে পুলিশ। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞপ্তিতে থাকতে পারে অ্যাপ ডাউনলোড করার লিঙ্কও। সেই অ্যাপে ভিডিও কলে উর্দিধারী পুলিশকর্তার সঙ্গে সরাসরি কথাও বলা যায়। লোকে বলে বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা, পুলিশে ছত্রিশ। তাই পুলিশের ফাঁড়া থেকে বাঁচতে গাদাখানেক টাকার আক্কেল সেলামি দিতেই হবে।
কী ভাবছেন, সমস্যা মিটল? আজ্ঞে না।
আসলে এমন কোনও বিজ্ঞপ্তিই আসেনি পুলিশের তরফ থেকে। বদলে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে দুর্বৃত্তরা। আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। প্রতারকরা বারবার পালটেছে তাদের প্রতারণার চেনা ছক। এটিএম পিনের দুর্নীতি, অনলাইন শপিং দুর্নীতি, ফোনের মাধ্যমে করা চুরি আরও কত কী! কিন্তু সেই সব ছাপিয়ে এখন তারা হাজির হয়েছে পুলিশের ছদ্মবেশে। আর সেই প্রতারণারই নয়া নাম ডিজিটাল অ্যারেস্ট। সম্প্রতি সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মে থেকে জুনের মধ্যে প্রায় ১৩০০ জন ভারতীয়ের কাছ থেকে এই ধরনের কেলেঙ্কারির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সর্বমোট ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করতে গেলে মাথায় হাত পড়বে। বিভিন্ন ধরনের সাইবার জালিয়াতির দৌলতে ১৯,৮৮৮.৪২ কোটি টাকা প্রতারিত হওয়ার কথা জানা গেছে। গত বছরে এই পরিমাণটা ছিল ৯২১.৫৯ কোটি টাকা।
একের পর এক এমন অভিযোগ আসায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। তাঁদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, পুলিশ, প্রশাসন কাউকে ভিডিও কলে অ্যারেস্ট করা অথবা জরিমানার কথা বলে না। সুতরাং এহেন ঘটনার সম্মুখীন হলে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। বরং অতি দ্রুত নিতে হবে পুলিশের সাহায্য, আমআদমিদের প্রতি এমনই পরামর্শ পুলিশের। অন্যদিকে, টেক বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা, যে কোনও সাইটে ঢোকার আগে সেই সাইটটি নকল কি না ভালো করে বুঝে নিতে হবে। সন্দেহজনক কিছু মনে হলেই করতে হবে ব্লক অথবা রিপোর্ট। কারণ সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, বিষয়টি যে কিছুটা বাড়তি সতর্কটা দাবি করে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই কিছুতেই।