নিজের বিয়েতে নিজেই মন্ত্র পড়ল বর। পুরোহিত ছাড়াই বিয়ে হল দম্পতির। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেটদুনিয়া তোলপাড়। কোথায় ঘটেছে এমনটা? নিজেই মন্ত্র পড়ার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বিয়ে করতে গেলে পুরোহিত লাগবেই, এমন কোনও কথা নেই। স্রেফ একটা সই করই কাজ মেটানো যেতে পারে। কিন্তু শাস্ত্রমতে বিয়ে করতে হলে একজন পুরোহিত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অবশ্য সে বালাইটুকুও নেই! সম্প্রতি ভাইরাল এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পুরোহিত ছাড়াই বিয়ে করছেন এক দম্পতি। সেখানে মন্ত্রপাঠ থেকে যাবতীয় আচার নিয়ম পালন করছেন বরমশাই স্বয়ং!
নেটদুনিয়ায় ভাইরাল কনটেন্টের কমতি নেই। কখনও বিখ্যাত বা পরিচিত হওয়ার জন্য কেউ জোর করে অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়ে বসেন, কখনও আবার অজান্তেই এমন কিছু করে ফেলেন কেউ কেউ, যা শোরগোল ফেলে দেয়। দ্বিতীয় ক্ষেত্রেই জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কারণ সেখানে কোনও অভিনয় নেই। তাই দর্শকরাও ভরপুর বিনোদনের স্বাদ পান। এই ঘটনায় ঠিক তেমনটাই হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, রাজকীয় সাজে সজ্জিত এক দম্পতিকে। বোঝাই গেল, তাঁদের বিয়ে চলছে। বরের কাঁধে হাত রেখেছে কনে। মন্ত্রোচ্চারণে সামনে থাকা যজ্ঞের আগুনে আহুতি দিচ্ছেন বরমশাই। এ দৃশ্য একেবারেই স্বাভাবিক। হিন্দু বিয়েতে যজ্ঞ করাই নিয়ম। তারপর সেই অগ্নিকে সাক্ষী রেখে সাত-পাক ঘোরা। তবেই সম্পন্ন হবে বিবাহ। এক্ষেত্রে বর-কনের সঙ্গে আরও একজনকে অবশ্যই দেখা যায়, তিনি হলেন পুরোহিত। তবে ভাইরাল ভিডিওতে পুরোহিত মিসিং। তাহলে মন্ত্র পড়ছে কে? উত্তরটা বরমশাই স্বয়ং। নিজের বিয়েতে তিনি নিজেই মন্ত্র পড়ছেন, নিজেই আহুতি দিচ্ছেন। সবটাই কী ভীষণ সহজভাবে করে ফেলছেন তিনি। যেন এই কাজ রোজের অভ্যাস। কিন্তু বিয়ে কী কেউ রোজ করে! একেবারেই না। তাহলে কী এই বর নিজেই পুরোহিত? সেই উত্তরেও সম্মতি মিলবে না। তবে হ্যাঁ, বিয়ের মন্ত্র সম্পর্কে বরের যে বেশ দাপট তা বলাই বাহুল্য!
:আরও শুনুন:
বর হিন্দু, কনে মুসলিম! বিয়ের অনুষ্ঠানে দুই রীতিকেই মিলিয়ে দিলেন যুগল
আসলে, যার কথা বলা হচ্ছে সেই বরমশাই পুরোহিত না হলেও সংস্কৃতের ছাত্র। বেদ-উপনিষদ নিয়েই তাঁর পড়াশোনা। বর্তমানে গুরুকুল কাংরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত। কাজেই বিয়ের সময় মন্ত্র পাঠের জন্য আর কারও প্রয়োজন আছে বলে তাঁর মনে হয়নি। বরং সেই দায়িত্ব অন্য অনেকের থেকে তিনি নিজেই ভালো সামলাবেন বলে ঠিক করেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। নতুন বউকে পাশে বসিয়ে যজ্ঞ করেন নিজেই। অন্যান্য আচার নিয়মও পালন করেন নিষ্ঠাভরে। সেই ঘটনার ভিডিওই ছড়িয়ে পড়ে নেটদুনিয়ায়। আর তাতেই শোরগোল শুরু করে নেটিজেনরা। অনেকেই এই ঘটনার ব্যাখ্যায় ঠাট্টা করে ‘আত্মনির্ভর’ শব্দটি জুড়েছেন! প্রধানমন্ত্রী মোদির এই প্রকল্প স্বাবলম্বী হওয়ার কথা বলে। তবে সেখানে নিজের বিয়েতে নিজেই মন্ত্র পড়ার কোনও উল্লেখ নেই। এই ব্যক্তি সেই কাণ্ড ঘটিয়েছেন নিজের ইচ্ছাতেই। তবে নেটদুনিয়ার মনে হয়েছে, এই ঘটনাই আত্মনির্ভর শব্দটির প্রকৃত উদাহরণ!