ভাবুন তো সকালে ট্রেনে করে কাজের জায়গায় যাচ্ছেন। কিন্তু মাঝপথেই হঠাৎ থেমে গেল ট্রেন। অথচ ট্রেনের কোনও যান্ত্রিক সমস্যা নেই। কিংবা চলন্ত ট্রেনের সামনে কোনও বাধাও আসেনি। তাহলে, কেন হঠাৎ থামল ট্রেন? কারণ তারপর আর রেললাইনই নেই! অবাক হচ্ছেন! তা হওয়ারই কথা বটে! প্রায় ২ কিমি লম্বা রেললাইন চুরি করে চম্পট দিয়েছে চোর। আসুন, শুনে নিই এই আজব চুরির কথা।
সিনেমা হোক বা বাস্তব, নানারকম অদ্ভুত চুরির কথা হামেশাই শোনা যায়। মূল্যবান রত্ন থেকে দুষ্প্রাপ্য জিনিস– কত কিছু চুরির কাহিনি উঠে আসে সেইসব ছবির গল্পে। কিন্তু এই ঘটনা হার মানিয়েছে যে কোনও চুরি-র সিনেমাকে। এমন জিনিসও যে চুরি করা যায়, এ কথাই চট করে মাথায় আসবে না কারও। কিন্তু সেই বেনজির কাণ্ডই ঘটিয়ে বসেছে বিহারের একদল চোর। রেলের যন্ত্রপাতি কিংবা ট্রেনের কামরায় থাকা কোনও জিনিস নয়, একেবারে আস্ত রেললাইনটাই তুলে নিয়ে চম্পট দিয়েছে তারা।
আরও শুনুন: চোরেদের আজব কীর্তি! চুরি হয়ে গেল ৫৮ ফুট লম্বা আস্ত একখানা সেতু
ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের সমস্তিপুর এলাকায়। জানা গিয়েছে, চুরি যাওয়া রেললাইনটি সমস্তিপুর এলাকার একটি চিনির কলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এর মাধ্যমেই চিনিকল থেকে মাল আনা-নেওয়া হত। কিন্তু, সেই চিনির কল বেশ কয়েকবছর আগে বন্ধ হয়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই চিনিকলটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় এর সঙ্গে যুক্ত থাকা লাইনটিও একপ্রকার পরিত্যক্ত হয়েই পড়ে ছিল। তাই রেলের তরফে এই লাইন বিক্রি করার কথা ভাবা হয়। কিন্তু বিক্রির আগেই দেখা যায়, লাইন চুরি করে চম্পট দিয়েছে কেউ বা কারা। এমনিতে ট্রেনের কামরায় থাকা বিভিন্ন জিনিস চুরি হওয়ার কথা শোনাই যায়। যাত্রীদের জুতো থেকে ট্রেনের শৌচালয়ের জলের মগ পর্যন্ত রয়েছে এই চুরি যাওয়া জিনিসের তালিকায়। কিন্তু তা বলে ২ কিলোমিটার লম্বা রেললাইন চুরি হয়ে যেতে পারে, এমনটা ভাবা কার্যত অসম্ভব ছিল।
আরও শুনুন: ২ লক্ষ টাকার মালা পরিয়ে নতুন বরকে বরণ, আচমকাই ছিনিয়ে নিয়ে পালাল চোর
চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই জোরদার তদন্ত শুরু হয়েছে রেলের তরফে। পুলিশের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল, বিভাগের ভিতরের কারও সাহায্য ছাড়া এই কাজ একপ্রকার অসম্ভব ছিল। তদন্তে নেমে সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়। জানা যায়, রেলের দুই আধিকারিকের সাহায্যেই নাকি এমন কাজ করতে পেরেছে ওই চোরের দল। যাদের সঙ্গে সঙ্গেই বরখাস্ত করা হয়েছে রেলের তরফে। কিন্তু বাকি চোরদের হদিশ মেলেনি এখনও। এমনকি চুরি যাওয়া রেল লাইনের লোহার পাতও ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে বলেই খবর পেয়েছে পুলিশ। ফলে ঘটনার সুরাহা যে কোন পথে হবে, তা বলা মুশকিল।