প্রত্যেকেই অপরাধী। সাজা খাটছেন জেলে। মেয়াদ না ফুরোলে বেরোনোর উপায় নেই। এদিকে, মহাকুম্ভ শেষের পথে। আবারও এমন পুণ্যযোগ মিলবে ১৪৪ বছর পর। তাই কয়েদিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিল যোগী সরকার। কুম্ভস্নানের শরিক হলেন তাঁরাও। কীভাবে জানেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কুম্ভস্নানে ধুয়ে যাবে সমস্ত পাপ। এই বিশ্বাসে দলে দলে প্রয়াগে ভিড় জমাচ্ছেন ভক্তরা। দলে রয়েছেন হাজার হাজার সাধু। নেতা,মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, অভিনেতা, সকলেই রয়েছেন। সেইসঙ্গে রয়েছেন জেলের কয়েদিরাও। কুম্ভমেলায় যেতে না পারলেও, গঙ্গাস্নানের সুযোগ পেলেন এঁরাও।
:আরও শুনুন:
কুম্ভ বহুদূর! মহিলার ডাকে সাড়া দিয়ে এল দুয়ারে গঙ্গা, কিন্তু করলেন কী?
জেল আসলে সংশোধানাগার। অর্থাৎ যেখানে নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ পাবেন একজন অপরাধী। তাই বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে কয়েদিদের দিন কাটাতে হয়। প্রত্যেককে মানতে হয় নির্দিষ্ট দিনলিপি। রুটিনের এতটুকু এদিক ওদিক হওয়ার উপায় নেই। সেসব পর্যবেক্ষণ করার জন্য নিযুক্ত থাকেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। তাঁদের নজর এড়িয়ে জেল থেকে বেরোনোও প্রায় অসম্ভব। সবটাই যে কড়াকড়ি তা নয়, কখনও বিশেষ উৎসবে এঁদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও করা হয় কর্তৃপক্ষের তরফে। মূলত খাবারের মেনুতে সেই বদল লক্ষ করা যায়। কুম্ভের আবহে প্রয়াগ সঙ্গমের মেলাও উৎসবের চাইতে কিছুমাত্র কম নয়। অন্তত যোগীরাজ্যে তো বটেই। আর তাই সেখানকার বিভিন্ন জেলের বন্দীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করল যোগী সরকার। কুম্ভস্নানে যাতে জেলের কয়েদিরাও শামিল হতে পারেন, সেই উদ্দেশেই অভিনব ব্যবস্থা। আসলে, সাজার মেয়াদ শেষ না হলে জেল থেকে বেরোনোর উপায় নেই কয়েদিদের। তাই জেলেই বসেই তাঁরা গঙ্গাস্নান সেরেছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে?
:আরও শুনুন:
কুম্ভের ভিড়ে বেড়েছে ট্র্যাফিক জ্যাম! নাকাল প্রয়াগের বাসিন্দারা, আটকে যাচ্ছে বিয়েও
সহজ করে বললে, কুম্ভ থেকে জল এনে তাঁদের স্নান করানো হয়েছে। তবে কোনও নির্দিষ্ট এক-দুজন কয়েদী নন, স্নান সেরেছেন ৯০হাজার কয়েদি। সবটাই যে কুম্ভ থেকে আনা হয়েছে তা নয়। নির্দিষ্ট পরিমান জল এনে জেলের মধ্যে থাকা জলের ট্যাঙ্কে ঢালা হয়। তারপর সেই জলে স্নান সারেন ওই কয়েদিরা। বিষয়টা একেবারেই সাধারণ। তবে জেলের কয়েদিদের জন্যও যোগী সরকারের এমন ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকেই। এ বিষয়ে সে রাজ্যের মন্ত্রীর দাবি, কয়েদিদের মন পরিশুদ্ধ করতেই এমন ব্যবস্থা। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, কুম্ভ নিয়ে দেশের বহু মানুষের বিশেষ আবেগ রয়েছে। এঁদের মধ্যে কেউ সাধু, কেউ চোর। কালের নিয়মে দূরাচারী শাস্তি ভোগ করছে। তাই বলে, কুম্ভের প্রতি তার শ্রদ্ধা কমেনি। বিশেষ করে যারা যোগীরাজ্যের মানুষ, তাঁরা সকলেই বছরভর অপেক্ষায় থাকেন এই বিশেষ স্নানের জন্য। সেইসব বিষয় মাথায় রেখেই কুম্ভের আবহে প্রয়াগের পবিত্র জলে অপরাধীদের স্নানের ব্যবস্থা করল যোগী সরকার।