জোর করে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রায়শই ওঠে। তারই প্রতিবাদে এবার চূড়ান্ত পদক্ষেপ করলেন এক বৃদ্ধ। আগ্রাসনের প্রতিবাদে গায়ে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করেন তিনি। নিজের মৃত্যুর মধ্য দিয়েই আগ্রাসন বিরোধী চূড়ান্ত বার্তা দিলেন ওই বৃদ্ধ।
হিন্দি ভাষা জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। কেন্দ্রীয় স্তর থেকে যখনই এই প্রয়াস দেখা যায়, প্রতিবাদে সরব হয় বিভিন্ন রাজ্য। তামিলনাড়ু এক্ষেত্রে অগ্রগণ্য। সেখানেই আগ্রাসন বিরোধী বার্তা দিয়ে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিলেন ৮৫ বছরের এক বৃদ্ধ।
আরও শুনুন: স্বাভাবিক শরীর অথচ প্রায় ২ ইঞ্চি লেজ নিয়েই জন্ম শিশুকন্যার, অবাক খোদ চিকিৎসকরাই
জানা গিয়েছে, মৃত ওই বৃদ্ধের নাম থাঙ্গাভেল। ডিএমকে-এর একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন তিনি। অতীতে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদও সামলেছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই দলেরই সদস্য ছিলেন বৃদ্ধ। দল হিসাবে ডিএমকে বরাবরই কেন্দ্রীয় হিন্দি আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছে। কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে কাজের ভাষা হিসাবে হিন্দিকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরামর্শের বিরোধিতা করে এর আগে প্রতিবাদ-ধরনারও আয়োজন করেছেন দলীয় কর্মীরা। ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিন একাধিক বার এ বিষয়ে বার্তা দিয়েছেন। তবে দলেরই একনিষ্ঠ কর্মী যে এমন ঘটনা ঘটাবেন, তা বোধহয় অনুমান করতে পারেননি শীর্ষ নেতারা।
এদিন ডিমকে পার্টি অফিসের সামনে বেলা এগারোটা নাগাদ পৌঁছান ওই বৃদ্ধ। তাঁর হাতে ছিল ব্যানার। সেখানে স্পষ্টই হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বার্তা দিয়েছিলেন বৃদ্ধ। মোদি সরকারের উদ্দেশে ব্যানারে বৃদ্ধ লিখেছিলেন, হিন্দি তাঁরা চান না, কেননা হিন্দি নয়, তাঁদের মাতৃভাষা তামিল। আর তাই জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অর্থ হল, তাঁদের অর্থাৎ আগামী প্রজন্মের এবং ছাত্রদের ভবিষ্যৎ প্রভাবিত করা। তাঁরা এর থেকে মুক্তি চান। তবে শুধু এই প্রতিবাদই নয়, এরপরই চরম কাণ্ড ঘটান তিনি। গায়ে পেট্রল ঢেলে মুহূর্তে অগ্নিসংযোগ করেন। বৃদ্ধকে উদ্ধার করার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আরও শুনুন: বিছানায় বসে যুবকেরা মগ্ন উরফি জাভেদে, তরুণদের মোক্ষম খোঁচা চেতন ভগতের
কেন্দ্রীয় স্তর থেকে কাজের ভাষা হিসাবে সর্বত্র হিন্দিকে স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপ দেখা দিলে প্রতিবাদ জোরালো হয়। তামিলনাড়ু থেকে বাংলা, বারংবার এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে। তবে মাতৃভাষার উপর আগ্রাসন এলে মানুষ যে প্রতিবাদে কতখানি চরম পথ ধরতে পারে, নিজের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সেই বার্তাই যেন কেন্দ্রকে দিয়ে গেলেন এই বৃদ্ধ।