গরমের দিন। সূর্য যেন আগুন ঢালছে। এমন সময়ে একটু নুন-লেবুর শরবত, আহা! প্রাণ জুড়োতে আর কী চাই। তবে চাইলেই যে মিলবে তা তো নয়। লেবুতে হাত ছোঁয়ালেই যে ছ্যাঁকা খাচ্ছে আমজনতা। বাজারে লেবু অগ্নিমূল্য। সেই দামে রাশ টানতেই এবার ঈশ্বরের দ্বারস্থ হলেন বারাণসীর মানুষ। আয়োজন করা হল বিশেষ পুজোরও। শুনে নিন।
পুরাকাল থেকেই মানুষ যখনই বিপদে-আপদে পড়েছে, আশ্রয় খুঁজেছে ঈশ্বরের কাছেই। সেই মঙ্গলকাব্যের যুগ থেকেই আমরা দেখে এসেছি সেই প্রথা। অর্থনীতির হাল ফেরাতে দিন কয়েক আগে মহাকুবের যজ্ঞের আয়োজন হয়েছিল এ দেশে। তবে এবার লেবুর বাজারে লেগে গিয়েছে আগুন। তাই লেবুর দাম কমাতে এবারও সেই পুজোআচ্চার পথই বেছে নিয়েছেন দেশবাসী।
আরও শুনুন: বেহাল অর্থনীতির হাল ফেরাতে দেশে আয়োজন মহা কুবের যজ্ঞের
খুব বেশিদিন আগেকার কথা নয়। অসুখবিসুখ বা মহামারী ছড়িয়ে পড়লে তাকে মনে করা হত দেবদেবীর কোপ। তার প্রতিকারে চলত পুজো-অর্চনাও। বারাণসীতেও সেই একই ছবিই দেখা গেব এবার।
দিন কয়েক ধরেই পাতিলেবুর বাজারে আগুন। লেবু কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। কিলো প্রতি লেবুর দাম চড়েছে তিনশো-চারশো টাকা পর্যন্ত। এক একটা লেবু বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা করে। স্বাভাবিক ভাবেই গত কয়েক দিন ধরে রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে এই লেবু। এমনকি বিয়েতে উপহার হিসেবে লেবু দেওয়ার মতো ঘটনারও সাক্ষী থেকেছে দুনিয়া। গরমের দিনে এমনিতেই লেবুর চাহিদা বেশি থাকে। তবে এবার বাজারে অমিল সেই লেবুই। উৎপাদন কম হওয়া থেকে শুরু করে হিমঘর একেবারে খালি হয়ে যাওয়া, এমনকি আকাশ ছোঁয়া তেলের দামও দায়ী লেবুর এই মূল্যবৃদ্ধির পিছনে।
আরও শুনুন: লম্বা লেজ কিশোরের, পরিবারের বিশ্বাস পুনর্জন্ম হয়েছে স্বয়ং বজরংবলীর
তবে কারণ যাই থাক না কেন! সেসবকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন তাঁরা। বরং লেবুর এ হেন মূল্যবৃদ্ধির পিছনে ঈশ্বরের কোপকেই সরাসরি দায়ী করেছেন বারাণসীর এক দল মানুষ। তাই তাঁরা আয়োজন করে ফেলেছিলেন বিশেষ এক পুজোর। সেখানকার আদিশক্তি মন্দিরে সম্প্রতি হয়ে গেল বিশেষ সেই তন্ত্রপুজো। এই মন্দিরটি আবার এলাকায় ব্ল্যাক ম্যাজিকের জন্য বিশেষ বিখ্যাত। ঈশ্বরকে তুষ্ট করার জন্য সেখানে নাকি বলি দেওয়া হয়েছে এগারোটি পাতিলেবু।
পুজোর উদ্যক্তা হরিশ মিশ্রর দৃঢ বিশ্বাস এই তন্ত্র পুজোর পরে লেবুর দাম কমবেই কমবে। এখন সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। ব্ল্যাক ম্যাজিক ঠিক কিনা, সেই যুক্তিতর্কে যেতে রাজি নন তিনি। বরং তাঁর বক্তব্য, কারওর ক্ষতি চাইতে এই পুজোর আয়োজন করা হয়নি। লেবু যাঁরা কেনেন, তাঁদের মঙ্গলকামনা করেই অনুষ্ঠিত হয়েছে এই বিশেষ পুজোর। এখন কবে ঈশ্বর প্রসন্ন হন এবং বাজারে লেবুর দাম কমে, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন বারাণসীর এই ভক্তকুল।