‘পাঠান’ ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোনের গেরুয়া পোশাক নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল দিনকয় আগে। সিনেসুনিয়া ছেড়ে সে বিতর্কের জল গড়িয়েছিল রাজনীতির ময়দানেও। এবার সেই রাজনীতিতেই উঠে এল গেরুয়া বিতর্ক। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে গেরুয়া বসন ছাড়ার নিদান দিলেন এক কংগ্রেস নেতা। কিন্তু কেন? আসুন শুনে নিই।
রাজনীতির ময়দানে আরও একবার ফিরে এল পোশাক বিতর্ক। যোগী আদিত্যনাথকে গেরুয়া বসন ছাড়ার পরামর্শ দিলেন কংগ্রেস নেতা হুসেন দালবাই। আর তা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাল গেরুয়া শিবির।
আরও শুনুন: বিমানবন্দরে পোশাক খুলে দাঁড়াতে হল শুধু অন্তর্বাস পরে, ক্ষুব্ধ মহিলা সঙ্গীতশিল্পী
বিতর্কের সূত্রপাত কংগ্রেস নেতার এক মন্তব্যকে ঘিরে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পোশাকের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে ওই নেতা বলেন, যোগীর উচিত গেরুয়া বসন ছেড়ে একটু আধুনিক হওয়া। সবসময় ধর্মের কথা না বলে নতুন আইডিয়া নিয়ে যেন তিনি ভাবনাচিন্তা করেন। তাঁর মতে, যোগীর রাজ্যে শিল্প ও ব্যবসায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও তা সহায়ক হবে। কেননা শিল্প সবসময় আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। আর তাই মুখ্যমন্ত্রীকে গেরুয়া বসন ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। প্রত্যাশিত ভাবেই এই মন্তব্যের ঘোর বিরোধিতা করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা রাম কদম তীব্র আপত্তি জানিয়ে বলেছেন, ‘গেরুয়া রং-এর প্রতি কংগ্রেস এবং দলের নেতাদের কেন এত বিরাগ? গেরুয়া তো শুধু আমাদের জাতীয় পতাকার রং বা সাধুসন্তদের পোশাক নয়; গেরুয়া হল, ত্যাগ, সেবা, জ্ঞান, শুদ্ধতা এবং আধ্যাত্মিকতার প্রতীক।’
আরও শুনুন: আরও সন্তান চাই! ৬০-তম সন্তানের বাবা হয়ে নতুন স্ত্রীর খোঁজে পাকিস্তানের ব্যক্তি
যোগীর পোশাক নিয়ে বিতর্ক অবশ্য এই প্রথম নয়। ২০১৯ সালে এ নিয়ে সরব হয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তাঁর মত ছিল, যোগী যে গেরুয়া বস্ত্র পরেন, সেই গেরুয়া রং কেবল তাঁর একার নয়। ধার্মিক এবং আধ্যাত্মিক মানুষরাই গেরুয়া ধারণ করেন। এই গেরুয়া রং হিন্দু ধর্মেরও অন্যতম প্রতীক। যোগীকে পরামর্শ দিয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেছিলেন, হিন্দু ধর্মের মূল কথা আত্মস্থ করতে। কেননা হিন্দু ধর্ম হিংসা, ক্রোধ বা প্রতিশোধের কথা বলে না। যোগীর গেরুয়া পোশাক নিয়ে প্রিয়াঙ্কার এই মন্তব্যেরও প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিজেপি। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে জানানো হয়েছেল, যোগী জনতার সেবক। জীবনের সবকিছু উৎসর্গ করেই তিনি গেরুয়া ধারণ করেছেন। তিনি যে তাই শুধু গেরুয়া পোশাক পরেন তাই-ই নয়, এই আদর্শের অন্যতম প্রতিনিধিও বটে। মানুষের উন্নতির জন্য, জাতি গঠনের জন্য যদি গেরুয়া ধারণের রীতি চলে আসে, তবে যোগী সেই পথেরই পথিক। প্রিয়াঙ্কাকে পরিবারতন্ত্রের খোঁচা দিয়েই তখন জানানো হয়েছিল, জনতার সেবা এবং গেরুয়ার মর্ম কংগ্রেস বুঝবে না।
আরও শুনুন: ‘ধর্ম আর মন্দির নিয়েই ব্যস্ত, বেকারত্ব সামলাবে কখন!’ সরকারকে তোপ নেটিজেনদের
একদিকে উত্তরপ্রদেশে শিল্প ও বিনিয়োগ টানার লক্ষ্য নিয়েই পথে নেমেছেন যোগী। অন্যদিকে বিজেপি ও আরএসএস-এর রাজনৈতিক আদর্শের মোকাবিলা করতে ভারত-জোড়ো-যাত্রায় নেমেছেন খোদ রাহুল গান্ধী। যোগী যেমন ‘জনতার সেবক’, তেমনই রাহলকেও ‘ভ্রাম্যমান ফকির’ হিসাবেই দেখছেন অনেকে। এমনকী রাম মন্দির ট্রাস্টের পুরোহিত ও সচিবও রাহুলের প্রশংসা করেছেন। এই আবহেই আরও একবার গেরুয়া বিতর্ক ফিরে এল রাজনীতির ময়দানে।