একেই বোধহয় বলে নাড়ির টান। দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে সাত মাস ধরে অজ্ঞান হয়ে রয়েছেন মা। তবু গর্ভে বেঁচে রয়েছে তাঁর সন্তান। অবশেষে পৃথিবীর আলো দেখল সেই সন্তান। এহেন আশ্চর্য ঘটনা দেখে অবাক সকলেই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সন্তানের জন্ম ঘিরে সকলেরই কত না উদ্বেগ, আশঙ্কা আর আকুলতা থাকে। এই পরিবারের ক্ষেত্রে তা বেড়ে গিয়েছিল কয়েক গুণ। প্রসূতি নিজেই যেখানে মারাত্মক আহত, এমনকি দীর্ঘ সাত মাস ধরে কার্যত অজ্ঞান হয়ে রয়েছেন তিনি, সেখানে তাঁর সন্তানটি আদৌ পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে কি না তা নিয়েই সংশয় ছিল সকলের। কিন্তু সব আশঙ্কা কাটিয়ে আশারই জয় হল শেষমেশ। এইমসের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে এক সুস্থ কন্যার জন্ম দিলেন ২৩ বছরের ওই যুবতী।
আরও শুনুন: মহিলাদের গোপনাঙ্গের ছবি দেখার শখ, স্ত্রীরোগ-বিশেষজ্ঞা সেজে প্রায় ১০০০ ছবি সংগ্রহ ব্যক্তির
জানা গিয়েছে, পথ দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে জখম হয়েছিলেন বুলন্দশহরের বাসিন্দা ওই মহিলা। মাথার আঘাতের জেরে একাধিক সার্জারি হয়েছে তাঁর। যে কারণে গত সাত মাস ধরে অজ্ঞান হয়েই রয়েছেন তিনি। তার পরেও তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের জন্ম হওয়ার ঘটনাটিকে প্রায় অবিশ্বাস্য বলেই মনে করছেন সকলে।
আরও শুনুন: ভারতের থেকেও সুরক্ষিত দেশ পাকিস্তান! সাম্প্রতিক সমীক্ষার রিপোর্টে বাধল জোর বিতর্ক
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছরেই গত ৩১ মার্চ হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন ওই যুবতী। স্বামীর সঙ্গে মোটরবাইকে চড়ে যাওয়ার সময়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। যেহেতু তিনি হেলমেটও পরে ছিলেন না, ফলে মাথায় গুরুতর চোট লাগে তাঁর। প্রাণে বেঁচে গেলেও, ওই আঘাতের জেরে চেতনা ফেরেনি তাঁর। নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডঃ দীপক গুপ্ত জানিয়েছেন, ওই যুবতী চোখ খুলছেন ঠিকই, তবে কোনও কিছু বুঝতে পারছেন না। কোনও নির্দেশ শুনে সেইমতো কাজ করার অবস্থাতেও নেই তিনি। ট্রমা সেন্টারে ভরতি করানোর পর ভেন্টিলেশনেও রাখা হয়েছিল ওই যুবতীকে। সেখানে দুটি বড় অস্ত্রোপচার হওয়ার পরে তাঁর ভেন্টিলেটর সাপোর্টের আর প্রয়োজন পড়েনি। ১৫ জুনের মধ্যে তাঁর মোট ৫টি অপারেশন হয়েছে বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এই পরিস্থিতিতে সন্তানের জন্ম দেওয়ার মতো বড় একটি প্রক্রিয়ার ধকল তাঁর শরীর নিতে পারবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না কেউই। কিন্তু সব আশঙ্কা উড়িয়ে শেষমেশ পৃথিবীর আলো দেখল সেই নবজাতক। যদিও মায়ের আদর এখনও পায়নি সে, তাকে স্তন্যপান করানোর মতো অবস্থাও নেই ওই যুবতীর। তবুও তার সুস্থতা ঘিরেই আপাতত আনন্দে মেতেছে তার পরিবার।