পরনে স্রেফ অন্তর্বাস। এভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে হাঁটলেন মহিলা। এমনটাই তাঁর প্রতিবাদের ধরণ। ঘটনা ইরানের। প্রতিবাদের কারণ সেই পোশাক বিতর্ক। ঠিক কী ঘটেছে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পোশাক নিয়ে কড়াকড়ি মানতে নারাজ। প্রতিবাদে পোশাক খুলে স্রেফ অন্তর্বাস পরে হাঁটলেন তরুণী। তাও আবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। সম্প্রতি ইরানের এই ঘটনা নেটদুনিয়ায় হইচই ফেলেছে। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের হয়ে সাফাই গেয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা মানতে নারাজ সাধারণ মানুষ।
ইরানে মেয়েদের জন্য কড়া পোশাকবিধি নতুন নয়। সেখানকার শরিয়া আইন অনুযায়ী, মেয়েরা তাঁদের চুল ঢেকে রাখতে এবং লম্বা পোশাক পরতে বাধ্য। যাঁরা এই নিয়ম মানবেন না, তাঁরা জনসাধারণের তিরস্কারের যোগ্য। এমনকি এই অপরাধে পুলিশ তাঁদের জরিমানা বা গ্রেফতারও করতে পারে। তাই কার্যত জোর করে হিজাব পরতে বাধ্য করা হয় সে দেশের মহিলাদের। তবে এই নিয়ম মানতে চান না অনেকেই। প্রতিবাদ জানান। তা কড়া হাতে দমন করে সরকার। দীর্ঘদিন ধরেই এমনটা চলে আসছে। তবে ২০২২ সালে গোটা বিশ্বে আলোড়ণ ফেলে দিয়েছিল মাহসা আমিনির মৃত্যু। হিজাব না পরার দরুন ইরানের নীতি পুলিশের হাতে নিহত হন এই তরুণী। ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিজাব বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে সে দেশে। কোনোরকম চাপিয়ে দেওয়া পোশাকবিধি আর মেনে নেবেন না তাঁরা, এই দাবিতেই পথে নামেন ইরানের মেয়েরা। হিজাব পুড়িয়ে, মাথার চুল কেটে ফেলে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। বিক্ষোভ রুখতে পালটা দমননীতি নেয় সে দেশের প্রশাসন। তাতে প্রাণ হারান অনেক প্রতিবাদী। এবার আরও একবার সেই দ্রোহের আগুন উসকে উঠল ইরানে।
নেটদুনিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে এক মহিলা, স্রেফ অন্তর্বাস পরে ইরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হাঁটছেন। তাঁর চারদিকে হিজাব পরা অনেক মহিলাই রয়েছেন। প্রত্যেকের নজর ওই তরুণীর দিকে। কেউ কেউ মোবাইল বের করে ছবিও তুলছেন। তবে তরুণী কাউকে উদ্দেশ্য করে ইছু বলেননি বা কিছু বোঝাতেও চাননি। স্রেফ অন্তর্বাস পরে এদিক ওদিক ঘুরে বেরিয়েছেন। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, তরুণী মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই এমনটা করেছেন। তবে মহিলাকে নাকি এর জন্য আটক করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। এমনকি তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে শোরগোল পড়েছে নেটদুনিয়ায়। কেউ কেউ মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলেছেন। কেউ আবার এই মহিলার প্রতি কোনও অন্যায় যেন না হয় সেই দাবি জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়য়ের তরফে যে দাবি করা হয়েছে সেটিও নাকচ করেছেন অনেকেই। বরং মহিলার সাহসকে কুর্নিশ জানিয়েছে নেটদুনিয়া।