বিমানে যাওয়া-আসা মানেই কড়া নিরাপত্তার বলয় এড়ানো। প্রায় সকল যাত্রীদেরই এ অভিজ্ঞতা আছে। এবং তা কখনও সখনও রীতিমতো অস্বস্তিকরও হয়ে দাঁড়ায়। যেমনটা হয়েছে জনৈক মহিলা সঙ্গীতশিল্পীর ক্ষেত্রে। নিরাপত্তার খাতিরে পোশাক খুলে স্রেফ অন্তর্বাস পরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে তাঁকে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্ষুব্ধ শিল্পী। কী বলেছেন তিনি? আসুন শুনে নিই।
নিরাপত্তার আঁটসাট ঘেরাটোপ না পেরোলে বিমানযাত্রা সম্ভব নয়। আর এই নিরাপত্তার খাতিরেই যে চেকিং, তা নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা। এই কাজ যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। এবং সে কারণে বিমানবন্দরগুলিতে লম্বা লাইনও দেখা যায়। গত মাসেই দিল্লি ও বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এবার সেই বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরেরই আর একটি ঘটনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন জনৈক মহিলা সঙ্গীতশিল্পী। তাঁর অভিযোগ, সিকিউরিটি চেকিং-এর সময় তাঁকে জামা খুলে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আরও শুনুন: ‘ধর্ম আর মন্দির নিয়েই ব্যস্ত, বেকারত্ব সামলাবে কখন!’ সরকারকে তোপ নেটিজেনদের
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তিনি তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে জানিয়েছিলেন। তিনি জানান, বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে যখন চেকিং চলছিল, তখন তাঁকে ঊর্ধাঙ্গের পোশাক খুলে ফেলতে বলে হয়। ফলে ওই চেকিং পয়েন্টে তিনি শুধু ক্যামিসোল বা অন্তর্বাস পরেই দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। বিমানবন্দরের মতো জায়গায় কেবলমাত্র অন্তর্বাস পরে দাঁড়িয়ে থাকা যে চরম অস্বস্তিকর তা জানিয়েই, শিল্পীর প্রশ্ন, কেন একজন মহিলা যাত্রীকে জামা খুলতে হবে? তাঁর এই অভিযোগ চোখে পড়ে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষেরও। তাঁদের তরফে জানানো হয়, এরকম ঘটনা একেবারেই কাম্য নয়। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয় যে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টির দেখভাল করে CSIF বা সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স। তাঁদের কাছেই এই অভিযোগ পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। যদিও পরবর্তীতে ওই মহিলার অভিযোগ এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এই উত্তর, দুই-ই টুইটার থেকে অদৃশ্য হয়েছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, এই ঘটনার নিয়ন্ত্রণ তাঁদের হাতে নেই। কেননা এটি পুরোটিই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর আওতায়। সেখানে কর্মচারীর সংখ্যা বেশ কম। তাতে মাঝেমধ্যেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যথাসাধ্য সাহায্য করে বটে, তবে নিরাপত্তার স্বার্থে কী করণীয় তা ঠিক করতে পারে একমাত্র সিএসআইএফ-ই।
আরও শুনুন: একমুখ দাড়ি-গোঁফ নিয়েই প্রকাশ্যে, রাহুল গান্ধীর নতুন রূপের নেপথ্যেও কি রাজনৈতিক বার্তা?
মহিলার অভিযোগ টুইটার থেকে গায়েব হলেও, অভিযোগটি কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার নয়। শুধু মহিলা যাত্রীরাই নন, পুরুষ যাত্রীরাও চেকিং-এর সময় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যেই পড়েন। এ ছাড়া সময় বেশি লাগার কারণে, বিমান ধরার ক্ষেত্রেও বেশ অসুবিধা হয়। সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি-র তরফে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি ওয়াচডগ ব্যুরো অবশ্য যাত্রীদের এই অসুবিধার কথা মাথায় রেখেছে। তাঁদের দাবি, উন্নত মানের স্ক্যানার আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে ল্যাপটপ, ফোন, চার্জারের মতো জিনিসগুলিকে আর বাইরে রাখতে হবে। স্ক্যানারের মারফতই নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া সম্ভব হবে। আর তাতে বিমানবন্দরে চেকিং-এর কারণে ভিড় কম হবে বলেই আশা সংস্থার।