সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন মা। পালাতে চেয়েছিলেন যুদ্ধে টালমাটাল দেশ ছেড়ে। কিন্তু অবশেষে জিতে গেল দেশের টান। ভাঙাচোরা দেশেই ফের ফিরে এলেন তিনি, দেশবাসীর পাশে থাকার ব্রত নিয়ে। ভারতে বসে মেয়ে জানালেন ইউক্রেনে থাকা মায়ের কথা। শুনে নিন।
লাইট ক্যামেরা সাউন্ড অ্যাকশন, এই নিয়েই তাঁর জগৎ। কিন্তু আচমকাই অ্যাকশনের নির্দেশ ঢুকে পড়েছে তাঁর জীবনেও। কারণ শত্রুর হামলায় তাঁর স্বদেশ এখন বিপন্ন। ১৮ দিনে পা দিয়েছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। নিজে সে দেশ থেকে অনেক দূরে থাকলেও, তাঁর পরিবার রয়েছে সেই দেশেই। পরিবারের মানুষদের নিয়ে তাই চূড়ান্ত উদ্বিগ্ন ইউক্রেনের এই ফিল্মমেকার, দর গাই। পাশাপাশি এই পরিস্থিতিতে তাঁর পরিবারের আত্মত্যাগ দেখেও আবেগে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন তিনি। আর সেই কথাই তিনি ভাগ করে নিয়েছেন নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়।
আরও শুনুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ! প্রাণভয়ে সন্তানকে নিয়ে ঘরছাড়া প্রাক্তন ইউক্রেন-সুন্দরী
মুম্বাই প্রবাসী দর গাই-কে সম্প্রতি অনেকেই চিনে গিয়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত ‘গেহরাইয়াঁ’-র দৌলতে। সেই ছবিতে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যগুলির বিশেষ নির্দেশক ছিলেন এই পরিচালক। তিনিই এবার সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন কীভাবে সুদূর ইউক্রেনে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর পরিবারের মানুষ। বিশেষ করে নিজের মার কথা বলেছেন তিনি।
ক্রমশ আক্রমণের জোর বাড়াচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে প্রাণের ভয়ে পালাচ্ছেন নাগরিকেরা। ফলে সীমান্তের কাছাকাছি গাড়ির লম্বা মিছিল। দেরি না করে পায়ে হেঁটেই অন্য দেশে পাড়ি দিচ্ছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে দেশ ছাড়ার কথা ভেবেছিলেন দর গাই-এর মাও। কিন্তু সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েও শেষমেশ মত বদলান তিনি। সিদ্ধান্ত নেন, দেশের এই বিপদে দেশবাসীর পাশেই থাকবেন। সাহায্য করবেন সাধ্যমতো। স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে আপাতত ওষুধ, খাবার এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। মার সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই কাজে নেমে পড়েছেন তাঁর কাকাও, জানিয়েছেন দর গাই। রুশ বোমার হাত থেকে বাঁচতে যাঁরা বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের যথাসম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে স্ত্রী, গাড়ি নিয়ে পাঁচ দেশ ঘুরে উদ্ধারের চেষ্টা স্বামীর
ওই পরিচালকের মতে, আসলে গত আট বছর ধরেই যুদ্ধ চলছে তাঁর দেশে। আট বছর আগেই পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। তবে রাজধানী কিভের মতো বড় শহরগুলি তখন অক্ষত ছিল। আর সেই কারণেই তাঁর আত্মীয় পরিজনেরা নিজেদের নিরাপদ মনে করেছিলেন। কিন্তু সে ধারণা ভেঙে দিয়েছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আক্রমণ। তবে দর গাই এবং তাঁর পরিবারের মতোই, হার মানতে নারাজ ইউক্রেনের মানুষেরা। নিজেদের সবটুকু সাধ্য দিয়েই শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখছেন তাঁরা, জানালেন পরিচালক।