নজির গড়ে ব্রিটেনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন কিয়ের স্টার্মার। তাঁর দল লেবার পার্টির কাছে ভরাডুবি হয়েছে কনজারভেটিভ পার্টির। প্রধানমন্ত্রীর গদি হারিয়েছেন ঋষি সুনাক। কিন্তু ব্রিটেনের সংসদে ভারত যোগ মোছানি এখনও। ঠিক কীভাবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বছর দুই আগে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন ঋষি সুনক। সেই নিয়ে ভারতীয়দের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। কারণ ব্রিটেনের নাগরিক হলেও সুনকের সঙ্গে ভারতের যোগ রয়েছে ভালমতো। এমনকি তাঁর স্ত্রীও ইনফোসিস কর্তার নারায়ণ মূর্তির কন্যা। কাজেই সুনক প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় ভারতীয়দের একাংশ বেশ গর্ববোধ করেছিল।
আরও শুনুন: তিন তালাকের কফিনে খোরপোশ পেরেক, অধিকার আরও পোক্ত মুসলিম মহিলাদের?
তবে সুনকের প্রধানমন্ত্রীত্ব বেশিদিন টেকেনি। দু বছরের মধ্যেই গদি ছাড়তে হয় তাঁকে। আর বিপুল ভোটে হারিয়ে সেই জায়গা নেন লেবার পার্টির কিয়ের স্টার্মার। চারশোর বেশি আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় স্টার্মারের দল। পরাজয় মেনে নেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনাক। এরপর নির্দিষ্ট নিয়মে সংসদের কাজ এগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন স্টার্মার। তাঁর দলের অন্যান্য সদস্যরাও একে একে বুঝে নিয়েছেন মন্ত্রীত্ব। এদিকে সুনক ও তাঁর দলের সদস্যদের ঠাঁই হয়েছে বিরোধী আসনে। এর মধ্যেই রয়েছে কনজার্ভেটিভ দলের সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যান। তিনিও শপথ পড়েছেন ব্রিটেনের রাজা চার্লসের সামনে। আর সেখানেই দেখা গিয়েছে এক হাতে বাইবেল অন্য হাতে গীতা রেখেছে ব্ল্যাকম্যান। যা স্পষ্টতই ব্রিটেনের সংসদে ভারতের যোগ টেনেছে।
আরও শুনুন: খোরপোশ স্ত্রীর অধিকার, ভিক্ষা নয়! মুসলিম মহিলাদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থান সুপ্রিম কোর্টের
অবশ্য তিনি একা নন। আরও অনেকেই গীতা, সুন্দর গুটকা জাতীয় গ্রন্থ নিয়ে শপথ পাঠ করেছেন। আসলে, এবারের ব্রিটেনের নির্বাচনে ভারতীয় বংশোদ্ভুত রয়েছে অনেকেই। সুনকের দল থেকে যেমন জিতেছেন গগন মহিন্দ্রা, প্রীতি প্যাটেলেরা। তেমনই লেবার পার্টির টিকিটে নির্বাচনে লড়া প্রীত কউর গিল, কণিষ্ক নারায়ণ, নবেন্দু মিশ্র, লিসা নন্দী, শিবানী রাজা, সৎবীর কউররাও জিতেছেন বড় ব্যবধানে। জিতেছেন তনমনজিৎ সিং দেশিও। এই নিয়ে টানা দুবার হাউস অফ কমন্সে জায়গা করে নিলেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাংসদ। এঁরাই মূলত সংসদে হিন্দু গ্রন্থ হাতে শপথ পাঠ করেছেন। শিবানী, ব্ল্যাকম্যানের মতো সাংসদরা শপথ পড়েছেন গীতা নিয়ে। তেমনই প্রীত কউরের মতো সাংসদরা সুন্দর গুটকা নিয়ে শপথ পড়েছেন। এই গ্রন্থ শিখ সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। তাই সংসদে এই বই হাতে নিয়ে শপথ পড়েছেন তাঁর মতো কয়েকজন শিখ সাংসদ। তবে কেউ কেউ ঈশ্বরের নামে শপথ গ্রহণে অস্বীকারকরেছেন। সে তালিকাতেও ভারতীয় বংশদ্ভুত কয়েকজন রয়েছেন। সবমিলিয়ে একথা বলাই বাহুল্য, সুনাক পরবর্তী ব্রিটিস মসনদে পুরোদস্তুর ভারতীয় ছাপ বজায় থাকল।