দুই ভারতবর্ষের গল্প। কিছুদিন আগেই শুনিয়েছিলেন কমেডিয়ান বীর দাস। আর তারপরই জমে ওঠে তুমুল বিতর্ক। তোপের মুখে পড়তে হয় শিল্পীকে। প্রায় একই কথা এবার উঠে এল সংসদে। এবারের বক্তা স্বয়ং রাহুল গান্ধী। সব শুনে নেটিজেনদের প্রশ্ন, রাহুলের বক্তৃতা কি লিখে দিয়েছেন বীর দাস? আর সে প্রশ্নের মোক্ষম জবাবও দিলেন তিনি। কী বললেন শিল্পী? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
দুখানা ভারতবর্ষ যেন একই সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। একটা ভারতবর্ষ গরিবের। অন্যটি ধনী বা ধনকুবেরদের। দুই ভারতবর্ষের জীবন, যাপন, শ্রম, সংগ্রাম, স্বপ্ন, বেঁচে থাকা – সবই আলাদা। আর সেই দুই ভারবর্ষের দূরত্ব ক্রমশ বেড়েই চলেছে। যা হওয়ার কথা ছিল না। বরং এই দূরত্ব কমিয়ে আনাই ছিল স্বাধীনতা উত্তর ভারবর্ষের লক্ষ্য। দুর্ভাগ্যক্রমে কিংবা নীতিগত কারণে তা আর কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না; বক্তব্যের সারমর্ম এটুকুই। আর সেই দুই বক্তব্য উঠে এল একেবারে ভিন্ন দুটি জায়গায়, দুজন ভিন্ন ঘরানার মানুষের মুখে। একজন, কমেডিয়ান বীর দাস। তাঁর স্ট্যান্ড কমেডির স্ক্রিপ্ট লেখা হয়েছিল এই দুই ভারতবর্ষকে নিয়েই। সেই ভিডিও সামনে এলে তুমুল বিতর্কের ঝড় ওঠে। যার জন্য খেসারতও দিতে হয় শিল্পীকে। প্রায় একইরকম বক্তব্যের আর-এক বক্তা হলেন রাহুল গান্ধী। সম্প্রতি সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি এই কথাগুলিই পুনরায় মনে করিয়ে দিয়েছেন।
আরও শুনুন – পোড়া সিগারেটের ফিল্টার কুড়োবে ‘ঝাড়ুদার’ কাক, দেওয়া হল প্রশিক্ষণও
প্রত্যাশিত ভাবেই, রাহুল গান্ধীর এই বক্তৃতা ছিল কেন্দ্র সরকারকে নিশানা করে। স্পষ্ট করে রাহুল জানিয়েছিলেন, ভারতবর্ষের আত্মা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আধারিত। কোনও একটি নেশন হিসাবে তাকে ব্যাখ্যা না করে বরং দেখতে হবে, একটি ফুলের বোকের মতো করে। বোকেতে প্রত্যেকটা ফুল আলাদা। কোথাও তাদের স্বাতন্ত্র্য ক্ষুণ্ণ হয় না। আবার সেই বিভিন্নতা নিয়েও তারা একতার বার্তা দেয়। ইউনিয়ন অফ স্টেটসের ধারনাও অনেকটা সেরকমই। প্রত্যেকটি রাজ্য আলাদা স্বতন্ত্র নিয়েই ভারতবর্ষের সমগ্রতায় মিশে আছে। এই হল আমাদের দেশের ধারণা। আর অপর ধারণাটি হল রাজত্ব কায়েমের। অর্থাৎ এক্ষেত্রে একজনই সম্রাট থাকবে, এবং তার মর্জিমাফিক চলবে গোটা দেশ। রাহুলের বক্তব্য, এই দ্বিতীয় ধারণাটি একদিকে যেমন ইতিহাসের তেমনই ভারতআত্মারও পরিপন্থী। ধনী ও গরিবের মধ্যে ক্রমশ বেড়ে চলা এবং প্রায় অনতিক্রম্য দূরত্বের কথাও রাহুল তাঁর বক্তৃতায় মনে করিয়ে দেন। দেশের জন্য তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মত্যাগের কথা তুলে রাহুল বলেন, এই দেশটাকে তিনি অন্তত অন্যদের থেকে একটু হলেও বেশি চেনেন। আর তাই তাঁর অভিমত, যাঁরা রাজতন্ত্রের বা জমিদারতন্ত্রের ধারণাটি কায়েম করতে চাইছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। কারণ, দেশের ভিতর থেকেই তার প্রতিবাদ হবে।
আরও শুনুন – UPI পিন চাইছে চেনা বা অচেনা কেউ! সাইবার অপরাধের ফাঁদ নয়তো! রেহাই কোন উপায়ে?
এই বক্তৃতা নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে, অনেকেই বীর দাসের ভাবনার সঙ্গে মিল খুঁজে পান। ব্যঙ্গের তিরে বিঁধতে থাকেন রাহুল গান্ধীকে। ঢেউ গিয়ে লাগে বীর দাসের গায়েও। জনৈক নেটিজেন তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, রাহুলের বক্তৃতার বয়ান কি তিনিই লিখে দিয়েছেন? আর যদি তা না হয়ে থাকে, তবে রাহুল গান্ধীর উচিত যিনি তাঁর জন্য বক্তৃতা এখন লেখেন, তাঁর বদলে অন্য কাউকে নিয়োগ করা। কেননা এই লেখক যে দেদার স্ট্যান্ড আপ কমেডি দেখেন, তা স্পষ্ট। এক তিরে রাহুল এবং বীর দাস – দুজনকেই বেঁধেন ওই নেটিজেন।
বাকি অংশ শুনে নিন।