কথায় বলে, কাজের কোনও ছোটো-বড়ো হয় না। আর কাজের কোনও বিকল্পও নেই। ছোট-বড় জ্ঞান না করে কেউ যদি নিজের কাজটি মন দিয়ে করে যায়, তাহলে সাফল্য আসবেই। গুরুজনরা প্রায়ই এ কথা বলে থাকেন। এবার সেই কথাটিই নতুন করে মনে করিয়ে দিল এক স্কুলপড়ুয়া। অভাবের দায়ে নয়, একেবারে স্বেচ্ছায় কাগজ ফিরি করে বেড়ায় সে। আর এ নিয়ে তাঁর মনে কোনও গ্লানি নেই।
সকালের আলো ফুটলেই বেরিয়ে পরে ছোট্ট ছেলেটি। পরনে টি-শার্ট আর হাফ প্যান্ট। সঙ্গী তার ছোট্ট সাইকেল। সেই সাইকেলের সামনের বাস্কেটে রাখা একগোছা নিউজপেপার। এত সকালে খুদে চলেছে কোথায়? না, পাড়ায় কাগজ ফিরি করতে। এই পর্যন্ত শুনে নিশ্চিতই মনে হবে যে, অভাবের তাড়নায় বেচারিকে নেমে পড়তে হয়েছে জীবীকার সন্ধানে। আমাদের দেশে অন্তত এ খুব চেনা গল্প। কিন্তু এখানে ঘটনাটা ঠিক সেরকম নয়।
আরও শুনুন: বাংলায় প্রথম মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা করতেন গঙ্গাদেবীর পুজোও, জানেন কে তিনি?
সম্প্রতি একটা ছোট্ট ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ছেলেটি যখন কাগজ ফিরি করতে বেরিয়েছে, তখন জনৈক ব্যক্তি তাকে থামান। থামিয়ে জিজ্ঞেস করেন, কেন সে এই কাজ বেছে নিয়েছে? জবাবে ছেলেটি পালটা প্রশ্ন করে, কেন তাতে হয়েছেটা কী? শুধু এটুকুই নয়, বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সে জানিয়ে দেয়, কাজ করায় তো দোষের কিছু নেই, আপত্তি থাকারও কথা নয়। আর, এখন কাজ করলে ভবিষ্যতে তা তার উপকারেই লাগবে। এই পর্যন্ত বলেই যে কাজে বেরিয়েছে সেই কাজে মন দেয়। ছোট ছোট পায়ে পাডাল ঘুরিয়ে এগিয়ে চলে।
আরও শুনুন: করোনাকালে সমুদ্রের তলায় জমছে কোটি কোটি মাস্ক, বিপন্ন সামুদ্রিক প্রাণ
আর এই ভিডিও দেখেই অভিভূত অনেকে। নেটমাধ্যমে একাধিক ব্যক্তি ছেলেটির ভিডিও শেয়ার করে তাঁর প্রশংসা করেছেন। জানা যাচ্ছে, তাঁর নাম জয় প্রকাশ। কাজের প্রতি তাঁর যে দৃষ্টিভঙ্গি তা যেন সকলকে চমকে দিয়েছে। এ কথা তো সত্যিই যে, কাজ করে যাওয়ার বিকল্প কিছু নেই। কঠিন পরিশ্রমই সাফল্যের একমাত্র পথ। কিন্তু অল্প বয়সে সে কথা আর ক-জনের মনে থাকে। স্কুলপড়ুয়া অনেকেই তো পড়ার সময়টুকু বাদ দিয়ে খেলাধূলায় কাটিয়ে দেয়। আগামী জীবন গড়ার কথা এই বয়সে ততটা মাথায় থাকে না। কিন্তু এই ছেলে একেবারেই ব্যতিক্রম। আত্মবিশ্বাস এবং পরিণতিবোধ তাঁর প্রতি কথাতেই ধরা পড়েছে। কাজের প্রতি মর্যাদার যে নমুনা সে দেখিয়েছে, তা কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছে নেটিজেনদের।