বরাবরের স্পষ্টবক্তা। কমেডির মোড়কে দেশের নানা অসংগতি নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন বীর দাস। তার জেরে একাধিকবার শো বাতিলের মতো ঘটনার মুখোমুখিও হয়েছেন। শাসকদলেও রোষও হজম করতে হয়েছে। ভোটের ফলে নির্যাতিতের জবাব দেখছেন সেই কমেডিয়ান। ঠিক কী বলছেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচন লড়তে চেয়ে চর্চায় এসেছিলেন কমেডিয়ান শ্যাম রঙ্গিলা। যদিও কমিশন তাঁর মনোনয়নে স্বীকৃতি দেয়নি। ভোট মিটতেই চর্চায় ফিরলেন আরও এক কমেডিয়ান, বীর দাস। দুজনের মধ্যে মিল বলতে একটাই, ক্ষমতাকে ব্যঙ্গ করতে গিয়ে শাসকের তোপ সহ্য করতে হয়েছে দুজনকেই।
আরও শুনুন: ধর্মই যখন হাতিয়ার! পরিবেশ বাঁচাতে ফতোয়া জারি মুসলিম গোষ্ঠীর
বীর দাসের নাম এর আগেও একাধিকবার চর্চায় উঠেছে। কখনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে পুরস্কার জিতে সকলকে তাক লাগিয়েছেন। কখনও আবার দেশের বাকস্বাধীনতা নিয়ে কটাক্ষ করে বিতর্কে জড়িয়েছেন। এমনকি একবার এমনটাও শোনা গিয়েছিল, রাহুল গান্ধীর বক্তৃতার অংশ লিখে দিচ্ছেন বীর দাস। সেই নিয়ে নেটদুনিয়ায় কম হইচই হয়নি। তবে ভোটের পরে সেসব প্রসঙ্গ ছেড়ে সম্পূর্ণ অন্য কথা বলতে শোনা গেল বীর দাসকে। আসলে, ২৪-র লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল যেমনটা ভাবা হয়েছিল তেমনটা একেবারেই হয়নি। বিশেষ করে এক্সিট পোলের হিসাব যা দেখিয়েছিল, তা বিলকুল ভুল প্রমাণিত হয়েছে ফলাফলের দিন। ক্ষমতা গঠন সেই বিজেপির হাতে হলেও, বিরোধীরা ভালমতো টক্কর দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ফল অবাক করেছে বিজেপি নেতাদেরই। অযোধ্যার কথাই ধরা যাক। রামমন্দির তৈরির পর, অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন অযোধ্যায় এবার পদ্ম ফুটবেই। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হয়নি। নির্বাচনের এই ফলাফলেই নির্যাতিতের জবাব দেখছেন বীর দাস। বলার অপেক্ষা রাখে না, এর মাধ্যমে তিনি ব্যক্তিগত ক্ষোভের কথাই বলতে চেয়েছেন।
আরও শুনুন: ‘খোঁটা’ শোনা ভাইকে এখন ভালোবাসে মানুষ, ট্যুইটে ‘ভাইফোঁটা’ বোনের
ফল ঘোষণার পরে একটি টুইটে নির্যাতিতের প্রসঙ্গ তুলেছেন বীর দাস। তাঁর কথায়, রাজনৈতিক নেতারা সবথেকে বেশি অবহেলার চোখে দেখেন কিছু মানুষকে। এঁদের সবথেকে দুর্বল বলেই ধরে নেন নেতারা। নিজেদের সুবিধার কথা ভাবতে গিয়ে এই ধরনের মানুষের কথা ভেবেও দেখেন না কেউ। যেখানে লাভ সেখানেই ছুটে যান নেতারা। এই নিয়েই সরব হয়েছেন বীর। সরাসরি কোনও নেতার বা দলের নাম না করেও তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাজনৈতিক নেতারা যাঁদের দুর্বল ভাবেন তাঁরাই ভোটের খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারেন। অর্থাৎ পারতপক্ষে ক্ষমতার জোরে যাঁদের অবহেলা করেন নেতারা, সেই শ্রেণি বুঝিয়ে দিতে পারে তাঁদের ক্ষমতা। শুধু তাই নয়, নিজের বক্তব্যে গণতন্ত্রের কথাও উল্লেখ করেন বীর দাস। একেবারে শেষে গণতন্ত্র বাঁচানোর দাবিই তোলেন। এই একই দাবিতে মোদির বিরুদ্ধে লড়তে চেয়েছিলেন শ্যাম রঙ্গিলা। গণতান্ত্রিক দেশে, স্রেফ উৎসবের আমেজে ভোটের আয়োজন করলেই চলে না, দরকার প্রকৃত বিরোধীর। যাঁদের চাপে স্বেচ্ছাচারীদের মতো আচরণ করতে পারবে না শাসকদল। সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনের ফলাফল দেখেও তাই অনেকেই বেশ আশ্বস্ত হয়েছেন। বীর দাস নিজেও হয়তো সেই দলেই থাকছেন। তাই ভোটের ফল সম্পর্কে এমন মন্তব্য করলেন জনপ্রিয় কমেডিয়ান।
The least privileged people that politicians evoke in their speeches are the ones they underestimate, neglect, divide and suppress the most. They underestimate their long term memory, insult their intelligence with their rhetoric, and disregard their morality. They try and…
— Vir Das (@thevirdas) June 6, 2024