আফগানিস্তানে ড্রোন হামলা চালাল আমেরিকা। খতম কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের মূল চক্রী। স্পষ্ট হয়ে গেল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-এর বদলা নেওয়ার হুঁশিয়ারি নিছক ফাঁকা আওয়াজ ছিল না। কুখ্যাত জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস (খোরাসান)-কে পালটা জবাব দিতে বদ্ধপরিকর আমেরিকা।
কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের বদলা নিল আমেরিকা। আফগানিস্তানে মার্কিন ড্রোন হানায় নিকেশ ইসলামিক স্টেট (খোরাসান) বা ISIS-K-এর কুখ্যাত জঙ্গি।
আরও শুনুন: কাবুলে বিস্ফোরণের পরই বাইডেনের হুমকি, আফগানভূমে কি ঘনিয়ে উঠছে যুদ্ধ?
৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল আমেরিকা। সেনা প্রত্যাহারের কাজ চালু হতেই শক্তি জাহির করতে শুরু করে তালিবান। অবশেষে গত ১৫ আগস্ট আফগানভূমের ক্ষমতা দখল করেছে তালিবান। দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এই পরিস্থিতিতে যেসব বিদেশি নাগরিকেরা সেদেশে রয়েছেন, তাঁদের নিরাপদে ঘোরে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহল। পাশাপাশি তালিবানি আতঙ্কে দেশ ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে আফগান নাগরিকদের মধ্যেও। সুতরাং প্রতিদিন ভিড়ে ছয়লাপ হামিদ কারজাই বিমানবন্দর। আর সেই বিমানবন্দর চত্বরেই এবার জোরালো বিস্ফোরণ ঘটাল জঙ্গিরা।
আরও শুনুন: তালিবানের গুলিতে উড়েছিল মাথার খুলির অংশ, বইয়ের তাকে এখনও তা সাজিয়ে রেখেছেন মালালা
বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২৬ আগস্ট রাতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল। সেই সময় কয়েক হাজার আফগান নাগরিক জড়ো হয়েছিলেন বিমানবন্দরে। আফগান নাগরিকদের নিয়ে মার্কিন বিমান ওড়ার আগেই পরপর বিস্ফোরণ ঘটে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ১৮০ জনের। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১৩ জন মার্কিন সেনা জওয়ানও। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দশ বছর আগে আফগানভূমে গুলি করে সেনা হেলিকপ্টার নামানো হয়েছিল। সেই ঘটনায় ২০ মার্কিন সৈনিকের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১১ সালের পর আফগানিস্তানে এটাই মার্কিন বাহিনীর উপর সবচেয়ে বড় হামলা। এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের জন্য আইসিসের দিকে আঙুল তুলেছিল আমেরিকা। হুঙ্কার দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, “বদলা চাই। কোনওভাবেই অপরাধীদের ক্ষমা করব না। কোনও ক্ষমা নেই। যেখানেই থাকুক এক-একজন অপরাধীকে খুঁজে খুঁজে মারব।” এদিকে কাবুল হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস (খোরাসান) বা ISIS-K। জানিয়েছে, যেসমস্ত দোভাষী এবং অন্যান্য ব্যক্তিরা মার্কিন বাহিনীকে সাহায্য করছেন, হামলার লক্ষ্য ছিলেন তাঁরাই।
পেন্টাগন সূত্রে খবর, শুক্রবার অর্থাৎ ২৭ আগস্ট, আফগানিস্তানে ড্রোন হামলা চালায় মার্কিন ফৌজ। ওই হামলায় খতম হয়েছে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের মূল চক্রী। মার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের ক্যাপ্টেন বিল আরবান বলেন, “আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশে জঙ্গিঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছি আমরা। আমরা নিশানায় আঘাত করে ষড়যন্ত্রকারীকে খতম করতে সক্ষম হয়েছি। ওই হামলায় কোনও সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়নি।” স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, মার্কিন সেনা হত্যার পর জঙ্গি গোষ্ঠীকে ছেড়ে কথা বলবে না আমেরিকা।