দিল্লিগামি এক্সপ্রেস ট্রেনে সফর করছিলেন এক সাংসদ। মাঝপথে কোত্থেকে এক মশা তাঁকে কামড়ায়। আর এতেই বেজায় চটে যান সাংসদ মশাই। তক্ষনি অভিযোগ যায় ভারতীয় রেলের কাছে। অন্য কোনও সাধারণ কেউ হলে হয়তো, এমন অভিযোগ পাত্তাই দিত না রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সাংসদের অভিযোগ পেয়ে তড়িঘড়ি থামানো হল সেই ট্রেন। মাঝপথেই চলল পোকামাকড় মারার অভিযান। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নিই।
ভারতীয় রেল নিয়ে অভিযোগ নেই, এমন যাত্রী খুঁজে পাওয়া কঠিন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই অভিযোগ কানে তোলে না রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেসবই সাধারণ যাত্রীদের ক্ষেত্রে। ‘অসাধারণ’ কেউ যদি রেল সম্পর্কে অভিযোগ তোলেন, তাহলে পাত্তা না দিয়ে উপায় কোথায়! এখানেও ঘটেছে ঠিক তেমনটাই।
আরও শুনুন: রাজা হয়েও যেন সন্ন্যাসী! শীর্ষে থেকেও মাটির মানুষ হয়ে থাকার নামই অরিজিৎ সিং
দিল্লিগামী এক এক্সপ্রেস ট্রেনে সফর করছিলেন উত্তরপ্রদেশের সাংসদ রাজবীর সিং। শুরু থেকেই নাকি ট্রেনের পরিবেশ নিয়ে বেজায় অসন্তুষ্ট ছিলেন তিনি। এমনিতেই দেশের অধিকাংশ এক্সপ্রেস ট্রেনের তথৈবচ অবস্থা। যেমন অপরিচ্ছন্ন বাথরুম, তেমন নিম্নমানের খাবার। কিছু ক্ষেত্রে লাইট কিংবা ফ্যানও কাজ করে না। প্রায়শই রেল যাত্রীরা এই নিয়ে অভিযোগ তোলেন। যা কার্যত পাত্তাই দেয় না রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই একই অভিযোগ যদি কোনও সাংসদ করেন? তিনি তো আর সাধারণ নাগরিক নন! তাই তাঁর অভিযোগে আমল না দিয়ে কোনও উপায় নেই। এই কারণেই রাজবীর সিং-এর অভিযোগে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিতে ছুটে আসেন রেল আধিকারিকরা। যদিও তাঁর অভিযোগটা ছিল বেশ অদ্ভুত। ট্রেন চলাকালীন কোত্থেকে এক মশা এসে তাঁকে কামড় দেয়। তাতেই বেজায় চটে গিয়ে রেল দপ্তরে অভিযোগ জানান তিনি। সেই সঙ্গে অপরিচ্ছন্ন বাথরুমের সমস্যা তো ছিলই। সব মিলিয়ে বেশ জোরালো অভিযোগ করেন তিনি।
আরও শুনুন: সঙ্গী চিতা, খোলামেলা পোশাকে ঘুরছেন লাস্যময়ী, তরুণীর পরিচয় জানতে উদগ্রীব নেটদুনিয়া
সেই সময় ওই ট্রেন উন্নাও স্টেশনের কাছাকাছি ছিল। সাংসদের অভিযোগ পেয়েই ওই স্টেশনে থামিয়ে দেওয়া হয় ট্রেন। রাজবীরের কামরায় হাজির হন রেলের কর্তারা। সব অভিযোগ শুনে তড়িঘড়ি কামরা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নেন তাঁরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাথরুম সহ ওই কামরাটি একেবারে ঝাঁ চকচকে করে দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়। বাইরে থেকে ডেকে আনা হয় পেস্ট কন্ট্রোল টিম। তাঁরা মশা মারার যাবতীয় ওষুধ ছড়িয়ে দেন ওই কামরায়। সব কিছু খতিয়ে দেখেন সাংসদ নিজে। তিনি শিলমোহর দেওয়ার পরই পুনরায় চাকা গড়ায় ওই ট্রেনের। তবে এই ঘটনা যেন আরও একবার আমাদের দেশের প্রভাবশালীদের জোর দেখিয়ে গেল। যেসব সাধারণ মানুষের ভোটের জোরে এই সাংসদরা অসাধারণ তকমা পান, তাঁরাই যেন কার্যত বঞ্চিত থেকে যান সব ক্ষেত্রে। আর সব রকম সুবিধা ভোগ করতে থাকেন ওই অসাধারণ মানুষের দল।