ধর্মস্থানে লাউডস্পিকার ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে গোটা দেশ জুড়েই। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে উত্তরপ্রদেশ থেকে মহারাষ্ট্র পর্যন্ত। এবার সরকারি নির্দেশে নয়া মোড় নিল সেই বিতণ্ডা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ধর্মস্থানে লাউডস্পিকার ব্যবহার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সরগরম দেশের বিভিন্ন রাজ্য। যার মধ্যে অন্যতম যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ। সেই প্রেক্ষিতেই এবার নয়া মাত্রা যোগ করল সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশ। রাজ্যের সমস্ত ধর্মস্থান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে বেআইনি লাউডস্পিকার। স্পষ্ট ভাষায় পুলিশকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে।
আরও শুনুন: হিংসা নয় চাই সম্প্রীতি, জাহাঙ্গিরপুরীতে জাতীয় পতাকা হাতে একযোগে মিছিল হিন্দু-মুসলমানদের
যোগীরাজ্যে আগেই নিদান দেওয়া হয়েছিল, লাউডস্পিকারের আওয়াজ যেন ধর্মস্থান চত্বরের বাইরে না বেরোয়। বিশেষ করে মসজিদে লাউডস্পিকারের ব্যবহার নিয়ে বারবারই আপত্তি তুলেছেন একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা। সেই সূত্রে ধেয়ে এসেছে মন্তব্য, পালটা মন্তব্যের জোয়ার। সম্প্রতি আলিগড়ে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তরফে লাউডস্পিকারে হনুমান চালিশা পড়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। আবার তার পালটা জবাব দিতে সুর চড়ান রুবিনা খানম নামে এক মহিলা। নিজেকে সমাজবাদী পার্টির মহিলা শাখার সদস্য বলে দাবি করে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, রমজান মাসে মুসলমানদের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এইসব করা হচ্ছে। মুসলিমদের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত হানলে মুসলিম মহিলারা মন্দিরের সামনে বসে কোরান পাঠ করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ওই নেত্রী। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই লাউডস্পিকার বিতর্ক নিয়ে উত্তপ্ত যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ। আর এবার সেই বিষয়েই সরাসরি পদক্ষেপ করল সরকার, বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
আরও শুনুন: ‘শুধু মসজিদে আপত্তি! লাউডস্পিকারে মূল্যবৃদ্ধির কথাও বলুন’, রাজ ঠাকরেকে তোপ আদিত্যর
ধর্মীয় স্থানের আশেপাশে যেসব বাসিন্দা থাকেন, লাউডস্পিকারের আওয়াজে তাঁদের যেন অসুবিধা না হয়। এই মর্মে লাউডস্পিকারের আওয়াজ নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আর সেই সূত্র ধরেই তাঁর সরকার এই নয়া নির্দেশ জারি করেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। শনিবার ইস্যু হওয়া এই নোটিসের প্রসঙ্গে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অবনীশ অবস্থি জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট ধর্মস্থানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই বেআইনি লাউডস্পিকার সরানোর কাজ করবে উত্তরপ্রদেশের পুলিশবাহিনী। পুলিশের সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত ১২৫টি লাউডস্পিকার সরিয়ে আনা হয়েছে।
কেবল উত্তরপ্রদেশ নয়, ধর্মস্থানে লাউডস্পিকারের ব্যবহার নিয়ে মহারাষ্ট্রেও চলছে বাকবিতণ্ডা। মসজিদ থেকে মাইকের ব্যবহার কমানোর দাবিতে সরব মহারাষ্ট্রের নব নির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে। এই বিবাদের জল গড়িয়েছে দিল্লিতেও। এদিকে মে মাসেই একাধিক ধর্মীয় উৎসব পালিত হবে দেশে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদিত্যনাথ যোগী। সেই কারণেই সম্ভবত লাউডস্পিকার ইস্যুতে এহেন পদক্ষেপ করল যোগীরাজ্যের সরকার।