করোনা ভাইরাসের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল গোটা পৃথিবী। বছর ঘুরে গেল, তবু মিলল না রেহাই। উলটে আণুবীক্ষণিক এই প্রাণের দরুন ঝরে গেল কতশত প্রাণ। তাহলে ভাবুন, আবার যদি পৃথিবীতে হানা দেয় কোনও অচেনা ভাইরাস, কী হতে পারে আমাদের অবস্থা? তেমন আশঙ্কার কথাই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের হঠকারিতার ফলেই আবার হয়তো পৃথিবী সম্মুখীন হতে পারে কোনও মহামারির।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং তথা বিশ্ব উষ্ণায়ন আজ আর কারও কাছেই অচেনা কথা নয়। দিনের পর দিন দূষণের মাত্রা যে হারে বেড়েছে, তাতে গোটা পৃথিবীর উপরেই যে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে চলেছে, দীর্ঘ দিন ধরেই সে কথা বলে চলেছেন পরিবেশবিজ্ঞানী এবং আবহাওয়াবিদেরা। পৃথিবী যত আধুনিকতার দিকে পা বাড়িয়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পেট্রোপণ্য থেকে সৃষ্ট দূষণ, ইলেট্রনিক বর্জ্য, এবং পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্য। পাশাপাশি সবুজের পরিমাণ কমে গিয়েছে ক্রমশ। সব মিলিয়ে পৃথিবীও এগোতে থেকেছে বিলুপ্তির দিকেই। এবার সেই আশঙ্কার মধ্যেই নয়া হুঁশিয়ারি দিলেন বিজ্ঞানীরা।
আরও শুনুন: মৃত্যু হবে আফ্রিকার বড় হিমবাহগুলির, পৃথিবীর বুকে কি নামবে বিপর্যয়?
সমস্যা হল, আধুনিক পৃথিবীতে যেসব বর্জ্য তৈরি হয়, তার অধিকাংশই সহজে নষ্ট হয় না। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর তারা অবিকৃতই থেকে যায়। যেমন, প্লাস্টিক। যেমন, পারমাণবিক পরীক্ষা বা বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় বর্জ্য। কিন্তু জানেন কি, অনেক ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াও সুবিধাজনক পরিবেশ পেলে একইভাবে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারে? আজ্ঞে হ্যাঁ, ভয় পাওয়ার মতো কথাই। যে ভাইরাসকে নির্মূল করা গিয়েছে ভেবে নিশ্চিন্ত হলাম আমরা, মেরু প্রদেশের শীতল বরফের দেশে সে দিব্যি বেঁচেবর্তে থেকে যায়। আর বরফ গলে গেলে, সে আবার দেখা দেবে স্বমহিমায়। পার্মাফ্রস্ট, অর্থাৎ পৃথিবীর যে দীর্ঘ অঞ্চল চিরস্থায়ী ভাবেই বরফের চাদরে আবৃত, সেখানে এমন অজস্র ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বাসা। তার মধ্যে রয়েছে অনেক অচেনা ভাইরাসও, যার মোকাবিলা করতে আদৌ প্রস্তুত নই আমরা। কিন্তু বিশ্ব উষ্ণায়নের দৌলতে ক্রমশ গলে যাচ্ছে এই বরফের চাদর। ফলে পরিবেশে মুক্তি পেতে চলেছে পারমাণবিক বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট বর্জ্য এবং গ্রিনহাউস গ্যাসের বিপুল ভাণ্ডার। আর তার চেয়েও বড় ভয়ের কথা, এই অজস্র ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে পারে, এই আশঙ্কাই করছেন বিজ্ঞানীরা। যা ডেকে আনতে পারে আরও ভয়ংকর কোনও অতিমারিকে।
আরও শুনুন: হাতের নীচেই আছে স্তনগ্রন্থি, হচ্ছে দুগ্ধক্ষরণ… মহিলার দাবিতে অবাক চিকিৎসকরা
এরপরেও কি সাবধান হবে মানুষ? কী হতে চলেছে তাহলে মানুষের ভবিষ্যৎ? সে কথার উত্তর হয়তো সময়ই দিতে পারে।