মেয়েরা কী পরবে তা ঠিক করে দেওয়ার দরকার নেই। হিজাব বিতর্কে এবার ফ্রান্সকে কড়া তোপ দাগল রাষ্ট্রসংঘ। অলিম্পিকে মহিলা ক্রীড়াবিদদের জন্য যে হিজাব নিষিদ্ধ করেছে ফ্রান্স সরকার, সেই নির্দেশের সমালোচনায় সরব আন্তর্জাতিক মহল। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সমাজ যা কিছু নিয়ম নির্দেশিকা বেঁধে দেয়, দেখা যায় তার বেশিরভাগটাই বরাদ্দ কেবল মেয়েদের জন্য। সেইসব নিয়ম ভালোর জন্য হোক বা না হোক, মেয়েদের প্রতি পদে পদে গণ্ডি বেঁধে দেওয়ার এই অভ্যাসটি কি আদৌ ভালো? তা নিয়ে সময়ে সময়ে কথা হয়েছে অনেক। সম্প্রতি ফ্রান্সের হিজাব বিতর্কের প্রেক্ষিতে ফের সেই বক্তব্যেই শান দিল খোদ রাষ্ট্রসংঘ। কোনও মেয়ের কী পরা উচিত আর কী পরা উচিত নয়, তা কারও চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই- সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সাফ জানিয়ে দিলেন রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দফতরের মুখপাত্র মার্তা হুর্তাদো।
আরও শুনুন: দেশের নামবদল বিতর্কের ছাপ রাষ্ট্রসংঘেও! ‘ইন্ডিয়া’ নয়, ‘ভারতের’ নাম নিলেন জয়শঙ্কর
২০২৪ সালে প্যারিসে বসতে চলেছে অলিম্পিক গেমসের আসর। আর সেখানেই ফ্রান্সের মহিলা ক্রীড়াবিদদের হিজাব পরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সে দেশের সরকার। এই সংক্রান্ত ঘোষণা করে ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী আমেলি আউদিয়া ক্যাস্টেরা বলেছেন, দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অলিম্পিক গেমস চলাকালীন কেউ হিজাব পরলে সেখানে দেশের চেয়ে বেশি করে ধর্মের প্রতীক স্পষ্ট হয়ে উঠবে। মুসলিম ক্রীড়াবিদদের নিজস্ব পোশাকবিধি পালন করার অনুমতি দেওয়া হলেও তা বৈষম্যমূলক আচরণ হবে বলেও তিনি দাবি করেন। এদিকে হিজাবপন্থীদের অভিযোগ, এর আগেও বিভিন্নভাবে ফ্রান্সে বসবাসকারী মুসলিমদের ওপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা করেছে ম্যাক্রোঁ সরকার। স্কুল-অফিসে হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হিজাব পরলে জরিমানার আইনও রয়েছে সে দেশে। এবার অলিম্পিকের আসরে এহেন নিষেধাজ্ঞা জারি করাকে মুসলিম মহিলাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বলেই মনে করছেন তাঁরা। যদিও সে অভিযোগ মেনে নিতে নারাজ ফ্রান্স প্রশাসন। ক্রীড়ামন্ত্রীর দাবি, ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ বজায় রাখতে গেলে যে কোনও সরকারি পরিষেবার ক্ষেত্রেই নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। আর সেই কারণেই ফ্রান্স দল হিজাব পরবে না। এই পরিস্থিতিতে এবার ফ্রান্সকে কড়া বার্তা দিল খোদ রাষ্ট্রসংঘ।