একই পরিবারের সদস্য। অথচ রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা। এমনটা সব ঘরেই দেখা যায়। তবে হরিয়ানার চৌটালা পরিবারকে এর সবথেকে উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়। লোকসভায় সেখানকার তিন প্রধান প্রতিদ্বন্দীই এই পরিবারের সদস্য। যারা একে অন্যের বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে নামছেন। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
‘ধন্যি মেয়ে’ ছবিতে ফুটবল ম্যাচের আগে শোনা গিয়েছিল কড়া হুঁশিয়ারি, শিল্ড যেন গ্রামের বাইরে না যায়। এখানেও বোধহয় তেমনটা বলাই যায়। এও এক ম্যাচই বটে। তবে ফুটবলের নয়, নির্বাচনের। নির্বাচনে কোন আসনে কোন প্রার্থী জিতবেন, তা নিয়ে এমনিতেই সরগরম থাকে নির্বাচনী এলাকা। দলগুলির মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোরও চলতে থাকে লাগাতার। তবে এখানে স্রেফ এলাকা নয়, পরিবারের মধ্যেও থাকছে জোর চাপানউতোর।
আরও শুনুন: ভোটদানের পুরস্কার হিরের আংটি! ভোট টানতে কমিশনের নতুন টোপ?
চলতি নির্বাচনে পরিবারতন্ত্রের কথা শোনা গিয়েছে বিভিন্ন দলের প্রচারে। কেউ এর বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন। কেউ বা প্রার্থী তালিকায় নিজের পরিবারের সদস্যদেরই প্রাধান্য দিয়েছেন। এমনকি পরিবার তন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেন, এমন দলের নেতাও রাজনীতির ময়দানে নিজের পরিবারকে নামাতে দুবার ভাবেননি। দেশের জনতার কাছে এসব গা সওয়া হয়ে গিয়েছে বলা যায়। নির্বাচনের প্রচারে এসে কোন নেতা কী বলছেন, সেদিকে কান দিতেই নারাজ অনেকে। সমর্থকরা মাঠ ভরাচ্ছেন, আর নেতা এসে ভাষণ দিয়ে যাচ্ছেন। এই যেন গোটা দেশের রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে নির্বাচনের আবহে। এসব নিয়ে বিতর্কও কম হচ্ছে না। বিশেষ করে, কোনও নেতা অন্য দলকে আক্রমণ করে কিছু বললেই কেল্লা ফতে। বিপক্ষের তরফে এমন বাক্যবাণ ছুটে আসবে, যে আদালত পর্যন্ত গড়াবে সেই জল। এখানে সেসব কিছুই হয়নি। সম্পূর্ণ ভিন্ন এক কারণে চর্চায় হরিয়ানা। যার মূলে রয়েছ হিসারার চৌটালা পরিবার।
আরও শুনুন: অযোধ্যার রাম মন্দির শুধু নয়, বিজ্ঞান-প্রযুক্তির প্রয়োগ দেশের প্রাচীন মন্দিরেও
দেশের রাজনীতিতে এই পরিবারের জনপ্রিয়তা আজকের নয়। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী, সবতেই নাম তুলেছে এই পরিবারের সদস্যরা। তার মধ্যে দেবী লাল হয়তো সবথেকে বেশি জনপ্রিয়। দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। চলতি নির্বাচনে হরিয়ানার ওই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী দেবী লালের ছেলে রঞ্জিত সিংহ চৌতালা। তাঁর বিরুদ্ধে তাঁর বিরুদ্ধে জেজেপি তথা জননায়ক জনতা পার্টির তরফে দাঁড়িয়েছেন নয়না চৌতালা। আবার ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল বা আইএনএলডি-র তরফে প্রার্থী সুনয়না চৌতালা। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এঁরা সকলেই এক পরিবারের সদস্য। সম্পর্কের খাতিরে নয়না এবং সুনয়না দুজনেই রঞ্জিতের পুত্রবধূ। তবে নিজের নয়। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণেই তাঁরা একসঙ্গে থাকেন না। কিন্তু তাতে কী! পদবী তো এক। সুতরাং এঁদের মধ্যে কোনও একজন জিতলেই, সাংসদ হবেন চৌটালা পরিবারের কোনও সদস্য। টক্কর দিতেই পারে অন্যান্য দলগুলো। তবে যেভাবে চৌটালা পরিবারের প্রভাব ওই কেন্দ্রে রয়েছে, তাতে বলাই যায় শিল্ড গ্রামের বাইরে হয়তো যাবেই না!