হিন্দু ধর্মের কোনও কাজকর্মই গঙ্গাজল ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না। সেখানে, একটা আস্ত মন্দির কি পতিতপাবনী গঙ্গার স্পর্শ না পেয়ে থাকতে পারে! তবে, সে মন্দির যদি হয় দূর আবুধাবিতে! তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা বটে, তবে, তারও সমাধান মিলেছে। আবুধাবিতেও এবার বইতে চলেছে গঙ্গা। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আবু ধাবির প্রথম হিন্দু মন্দিরের কথা সারা বিশ্বই এখন জানে। সেই মন্দিরের শুভ সূচনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতেই। ইতিমধ্যেই মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিতর্কও দেখা দিয়েছে। ইসলাম অধ্যুষিত দেশে কেন মন্দির প্রতিষ্ঠা হচ্ছে, কেনই বা মূর্তিপূজা হবে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা গিয়েছে নেটদুনিয়ায়। তবে, সব বিতর্ক পাশে সরিয়ে রেখেই মন্দির বাস্তব হয়ে উঠেছে। আর সেই মন্দিরের সূত্রেই এবার দূর আবু ধাবিতে বইতে চলেছে গঙ্গার ধারা।
আরও শুনুন: বঙ্গের প্রাচীন মন্দিরে টানা ১০০ বছর ধরে চলছে বীণাপাণির বন্দনা
সাধারণভাবে এ-কথা শুনলে খটকা লাগে বইকি! গঙ্গা হোক বা যমুনা তা আবুধাবিতে বইবে কেমন করে? অথচ হিন্দুধর্মের প্রায় কোনও কাজই গঙ্গাজলের পবিত্র স্পর্শ ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না। তা ছাড়া ভারতের যে অধ্যাত্মসাধনা, সেখানেও গঙ্গার এক বিশেষ জায়গা আছে। সেই কথা মাথায় রেখেই গঙ্গাকে যেন আবুধাবিতে আবাহন করেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। ঠিক বেনারসে যেমন ঘাট আছে, সেই আদলেই ঘাট গড়ে তোলা হয়েছে, অনেকটা অ্যাম্ফিথিয়েটারের মতো করে। দর্শনার্থীরা সেখানে দুটি জলধারা দেখতে পাবেন, একটি গঙ্গার, অপরটি যমুনার। তবে, তা নেহাত প্রতীকী নয়। ভারত থেকে গঙ্গা ও যমুনার জল নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখানে। ভারতে গঙ্গাতীরবর্তী কোনও মন্দিরের সামনে এসে একজন দর্শনার্থী মনে মনে যে প্রশান্তি অনুভব করেন, তারই আয়োজন আবুধাবির মন্দিরেও। এই ঘাটে বসে ধ্যান করতে পারেন যে কেউ। আলোর মালায় সরস্বতীর ধারা সৃষ্টি করে ত্রিবেণী সঙ্গম তৈরি করা হচ্ছে, যা দর্শনার্থীদের জন্য বয়ে আনবে অপার্থিব অনুভূতি। তবে, শুধু গঙ্গার জল নয়, ভারত থেকে আরও নানা উপাদান নিয়ে গিয়েই সাজিয়ে তোলা হয়েছে এই মন্দির। ভারতের সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে, প্রায় ২৭ একর জুড়ে তৈরি আবুধাবির এই প্রথম হিন্দু মন্দির গোটা বিশ্বের কাছে যেন তাই বিস্ময় হয়ে উঠেছে।